ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মামলা তুলে না নেয়ায় বাবার মাথা ফাটাল আসামিরা

প্রকাশিত: ০৯:৩৪, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

মামলা তুলে না নেয়ায় বাবার মাথা ফাটাল আসামিরা

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ সাতক্ষীরার বহুল আলোচিত স্কুলছাত্রী রিমি খাতুন আত্মহনন মামলার আসামিরা তার বাবা জাকির খাঁকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। বুধবার সকাল ৭টার দিকে সাতক্ষীরা সদরের বল্লী আমতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মামলা তুলে না নেয়ায় এই হামলা চালানো হয় বলে রিমির পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। প্রয়াত রিমির মা ফজিলা খাতুন জানান, তার মেয়ে রিমি খাতুন বল্লী মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণীতে পড়ত। প্রতিবেশী চাচা মাদ্রাসা ছাত্র মহব্বত তাকে প্রায়ই কুপ্রস্তাব দিত। মহব্বতের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় কোচিংয়ের শিক্ষক ঘরের মধ্যে পড়ানোকালে তারা বাইরের দিক থেকে ঘরের দরজায় শিকল তুলে দিয়ে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ এনে মহব্বতসহ কয়েকজন বাড়িতে সালিশ বসায়। তারা অভিভাবকদের ডেকে এনে তাদের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা আদায় করে শিক্ষক হাফিজুরকে ছেড়ে দেয়। সালিশে রিমাকে দুশ্চরিত্রা বলে মারপিট করে চরম অপমান করা হয়। একপর্যায়ে রাতেই সে বাড়ির উঠানের আমগাছের ডালে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে রিমি আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় রিমার ভাই কলেজছাত্র রনি বাদী হয়ে মহব্বত, তার বাবা আনছার খাঁ, কালাম দালাল, হাফিজুর রহমান, রেজাউল মাস্টার, শফিকুল ইসলামসহ আটজনের নামে থানায় মামলা দায়ের করেন। আসামিরা জেলে থাকাকালে তাদের স্বজন রাশিদা খাতুন, ডলি, কাশেমসহ কয়েক বাদী ও তার পরিবারের স্বজনদের মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দিলে রিমার বাবা জাকির খাঁ ২০১৭ সালের ৫ অক্টোবর সদর থানায় ৩১৫ নং সাধারণ ডায়েরি করেন। ওই বছরের ১৯ নবেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার উপপরিদর্শক শেখ মোঃ মিরাজ আলী মহব্বত ও আনছার খাঁসহ ছয় জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর সোমবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডাক্তারী সাক্ষীর জন্য ধার্য দিন। এর মধ্যে মামলা তুলে নিতে হুমকি চলতে থাকে। ফজিলা খাতুন জানান, বুধবার সকালে তারা বল্লী ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রহমানের কাছে হুমকির বিষয়ে জানিয়ে স্বামী-স্ত্রী বাড়ি ফিরছিলেন। সকাল ৭টার দিকে তারা বাড়ির পাশে নিজস্ব সাইকেল মিস্ত্রির দোকানের কাছাকাছি এলে ওঁৎ পেতে থাকা মহব্বত ও তার বাবা আনছার খাঁ লোহার রড দিয়ে তার স্বামী জাকির খাঁর মাখা ফাটিয়ে দেয়। মিজানুর রহমান, স্থানীয় মোচড়া গ্রামের হাশেম চৌকিদারের ছেলেসহ তিনি জাকিরকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে তাদের ধাক্কা মেয়ে চলে যায় হামলাকারীরা। সকাল ৮টার দিকে জাকিরকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ তামিমা হাসান জানান, জাকির খাঁর মাথা ভারি জিনিস দিয়ে ফাটিয়ে দেয়া হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
×