ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যাদের ধরা হয়েছে সবাই দলে অনুপ্রবেশকারী ॥ এইচ টি ইমাম

প্রকাশিত: ১০:২৩, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 যাদের ধরা হয়েছে সবাই দলে অনুপ্রবেশকারী ॥ এইচ টি ইমাম

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে ধরা পড়া সবাই এক সময় যুবদল, বিএনপি, জামায়াত অথবা শিবির করত বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে যাদের ধরা হয়েছে তারা সবাই অনুপ্রবেশকারী। আমাদের নীতি এখানে খুব পরিষ্কার। আমরা পরিচ্ছন্ন রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। আমরা দলকে পরিচ্ছন্ন করতে চাই। রবিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানম-ির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির প্রচার ও প্রকাশনা উপ কমিটির সভা পূর্বে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন দাবি করেন। এইচ টি ইমাম বলেন, ইতোমধ্যে যাদের ধরা হয়েছে তারা সবাই অনুপ্রবেশকারী। আমাদের দলে দীর্ঘদিন থেকে একটি দাবি উঠছিল যে, এই অনুপ্রবেশকারীরা আমাদের দলের ভয়ানক ক্ষতি করছে। তাদের এখন আমরা চিহ্নিত করেছি। চিহ্নিত করে দেখা যাচ্ছে সবাই এক সময় হয় যুবদল করত না হলে বিএনপি করত। না হলে জামায়াত-শিবিরের সদস্য ছিল। কাজেই এদের খুঁজে খুঁজে যেহেতু আমরা বের করে ফেলেছি, এ জন্য তাদের পক্ষ হয়ে এতদিন যারা কাজ করছিল সে লোকগুলো চিহ্নিত হয়ে গেছে। তাদের গাত্রদাহটা ওই খানেই। এতদিন যারা মদদ দিয়েছে তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এই সদস্য বলেন, এখন তো ইনভেস্টিগেশন হচ্ছে, এদেরকে রিমান্ডে দেয়া হয়েছে। রিমান্ডে দেয়ার পর তথ্য পাওয়া যাবে। সেই সমস্ত তথ্য নিয়ে বিচার করা হবে যে কার কার কোথায় সম্পৃক্ততা আছে। আমাদের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও বলেছেন এবং আমাদের সাধারণ সম্পাদক বার বার বলেছেন যে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। সে যেই পর্যায়েরই হোক না কেন। এখানে আমাদের নীতি পরিষ্কার, আমরা দলকে পরিচ্ছন্ন করতে চাই। তথ্যমন্ত্রী ও দলের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে দেখেছি এবং অনেকেই সেটি বলেছেন। সেটি হচ্ছে তাদের যে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, তিনি লন্ডনে আয়কর রিটার্ন দিয়েছেন সেখানে না কি তার ইনকামের একটি উৎস দেখিয়েছেন যে ক্যাসিনো থেকে তার আয় হচ্ছে। এটা আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি। অনেকেই এই নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। নিশ্চয়ই আপনারাও সেটি লক্ষ্য করেছেন। অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে বিএনপির এমন দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা এই দাবি গত দশ বছর সময় ধরে শুনে আসছি। আসলে তো মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের ব্যর্থতার দায় নিয়ে বহু আগেই মহাসচিবের পদ থেকে পদত্যাগ করার দরকার ছিল। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর টাকা ধরা পড়েছে সিঙ্গাপুরে এবং তার পাচারকৃত ২০ কোটি টাকা বাংলাদেশে ফেরত আনা হয়েছে। বিএনপির অর্থমন্ত্রী কালো টাকা সাদা করেছেন। বেগম খালেদা জিয়াও কালো টাকা সাদা করেছেন। এতিমের টাকা আত্মসাতের কারণে বিএনপি নেত্রী এখন সাজা ভোগ করছেন। তাই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে বলব আয়নায় নিজের চেহারা দেখার জন্য। বিএনপি মহাসচিবকে উদ্দেশে করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি ওনাকে বলব যে, আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখার জন্য। বাংলাদেশের ক্যাসিনো কালচার শুরু করেছিল কে? বাংলাদেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মদ, জুয়া ও হাউজি বন্ধ করেছিল। সেগুলো আবার চালু করেছিল জিয়াউর রহমান। মদ, জুয়া, হাউজিসহ উদ্যাম নৃত্য তো জিয়াউর রহমানই চালু করেছিল। সেই ধারাবাহিকতায় যখন খালেদা জিয়া ’৯১ সালে সরকার গঠন করেন, তখন কিন্তু এই ক্যাসিনো কালচার আবার ষোলকলায় পূর্ণ করেন। মির্জা আব্বাস, সাদেক হোসেন খোকা এবং মোসাদ্দেক হোসেন ফালু ওনারা বিভিন্ন ক্লাবের ক্যাসিনোর সঙ্গে যুক্ত ছিল। তারাই শুরু করেছিল। চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান সম্পর্কে হাছান মাহমুদ বলেন, এটি দীর্ঘদিন ধরে দেশে চলে আসছে, এটি হঠাৎ করে হয়নি। এগুলোকে সমূলে উৎপাটনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অভিযান শুরু হয়েছে। সেখানে কে কোন মতের, কে কোন পথের সেটি দেখা হচ্ছে না। আমি বরং মনে করি বিএনপি মহাসচিবের উচিত সরকারকে সাধুবাদ জানানো। আর ওনাদের (মির্জা ফখরুল) যে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান উনি তো বড় অজগর সাপ। যেন সব গিলে খেয়ে ফেলে। কারণ তার নেতৃত্বেই তো হাওয়া ভবন করা হয়েছিল। হাওয়া ভবন খুলে সেখানে দশ পারসেন্ট কমিশন বাণিজ্য করা হতো। খোয়াব ভবন খুলে সেখানে আমোদ-ফূর্তি করা হতো। সুতরাং বিএনপির তো এ নিয়ে কথা বলার কোন নৈতিক অধিকারই নেই। বৈঠকে আলোচ্য সূচীতে তিনটি এজেন্ডার কথা জানান আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক। তিনি বলেন, আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর জাতীয় সম্মেলন, ২৪ সেপ্টেম্বর ‘তরুণদের ভাবনায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক রাজশাহীর ওয়ার্কশপ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৩তম জন্মদিনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমীন, উপ-কমিটির সদস্য ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়, প্রধানমন্ত্রীর সহকারী আশরাফ সিদ্দিকী বিটু, আনিস আহম্মেদ প্রমুখ।
×