ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দুর্নীতিবাজ যেই হোক রেহাই পাবে না ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১০:২৪, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 দুর্নীতিবাজ যেই হোক রেহাই পাবে না ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, দুর্নীতিবাজ যেই হোক, কেউ রেহাই পাবে না। শনিবার দুপুরে বেসরকারী নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নবীনবরণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজ যেই হোক, তিনি জনপ্রতিনিধি হোক বা প্রশাসনের লোক হোক, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। অপরাধ ও দুর্নীতির অভিযোগ পেলে প্রমাণের ভিত্তিতে তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা দুর্নীতি করছেন, নিয়ম ভঙ্গ করেছেন, অবৈধভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কিছু ঘটানোর চেষ্টা করছে, তাদের নজরদারিতে রেখেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, অপরাধী যে দলেরই হোক কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। অপরাধীদের শনাক্তকরণে গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তালিকা পেলে সেটা যে ধরনেরই প্রতিষ্ঠান হোক, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যাদের বিরুদ্ধে আমরা অনৈতিক কাজের অভিযোগ পাচ্ছি, সাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। যুবলীগ নেতা জি কে শামীম প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জি কে শামীম কিভাবে সরকারী প্রজেক্টের কাজ পেয়েছে সেটি অন্য বিষয়। তার বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ ছিল, সে অনুয়ায়ী আমরা তাকে বিচারের মুখোমুখি করছি। আরও অভিযোগ থাকলে পর্যায়ক্রমে সেগুলোও খতিয়ে দেখা হবে। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য দুর্নীতিকে একটি চ্যালেঞ্জ মনে করছেন। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, আমরা যেভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, সেটা ধরে রাখতে হলে টেকসই উন্নয়ন প্রয়োজন। আর টেকসই উন্নয়নের জন্য টেকসই শান্তি-স্থিতিশীলতা দরকার। এটা পেতে হলে টেকসই নিরাপত্তা দরকার। আমরা সেই নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছি। সেজন্যই তার নির্দেশে আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযান পরিচালনা করছি। যেখানে দুর্নীতিবাজ ও নিয়ম ভঙ্গকারী আছে, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। কেউ রেহাই পাবে না। এটা আমাদের কমিটমেন্ট। তিনি বলেন, তাই যারা অনিয়ম-দুর্নীতি করছে বা অবৈধভাবে কোন প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছে অথবা অপরাধ করার চেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যে দল-মতেরই হোক, কঠোর হাতে তাদের দমন করা হবে। বর্তমানে যে অভিযান শুরু হয়েছে। তা চলমান থাকবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে জঙ্গী তৎপরতা এবং মাদক কেনা-বেচা হচ্ছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনছি। ইন্টারনেট ব্যবহার করে নানা ধরনের অপরাধ হচ্ছে জানিয়ে এ ধরনের অপরাধ রোধ করতে দেশের মেধাবীদের সহয়তায় নতুন প্রযুক্তি তৈরি করা হচ্ছে। এর আগে নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আগামী প্রজন্মের জন্য দেশকে সুন্দর করে রেখে যেতে চাই। আজ থেকে ১০ বছর আগের বাংলাদেশ আর এখনকার বাংলাদেশ এক না। অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এই পরিবর্তন জনগণ চেয়েছে। নতুন প্রজন্ম আমাদের সহায়তা করেছে। বর্তমানে আমাদের দেশ ডিজিটাল হয়েছে। নতুন প্রজন্ম প্রযুক্তির ব্যবহার উপলব্ধি করছে। প্রযুক্তির খারাপ দিকও রয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে নতুন প্রজন্মকে সতর্ক থাকতে হবে। ভাল-খারাপ বিবেচনা করে তা ব্যবহার করতে হবে। জঙ্গী দমনের বিষয় উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রথমে আমরা জঙ্গী দমনে হিমশিম খাচ্ছিলাম। পরে এটাতেও সফল হয়েছি। এতে দেশের সর্বস্তরের মানুষ ও নতুন প্রজন্ম সহযোগিতা করেছে। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে নবীনবরণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা লায়ন বেনজীর আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অনেকে।
×