ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর চেতনা ধারণ করে জাতির সেবায় আত্মনিয়োগ করুন

প্রকাশিত: ০৯:৩৫, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 বঙ্গবন্ধুর চেতনা ধারণ করে জাতির সেবায় আত্মনিয়োগ করুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশকে সমৃদ্ধ বাংলাদেশে পরিণত করতে বঙ্গবন্ধুর দেখা স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি। একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনাকে ধারণ করে চিকিৎসকদের জাতির সেবায় আত্মনিয়োগ করতে ও স্বাস্থ্য সেবায় তথা চিকিৎসা শাস্ত্রে সম্পৃক্ত সকলকে এই মহান পেশার মর্যাদা এবং মানোন্নয়নে আরও বেশি যত্নশীল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। শনিবার রাতে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী হলে প্রথমবারের মতো পদ্মা-গঙ্গা-গোমতী লিভার সম্মেলন ২০১৯ উপলক্ষে আয়োজিত অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী সামনে রেখে ফোরাম ফর দি স্টাডি অব দি লিভার, বাংলাদেশ, লিভার ফাউন্ডেশন ওয়েস্ট বেঙ্গল, ভারত ও হেপাটাইটিস ফাউন্ডেশন অব ত্রিপুরা, ভারত-এর যৌথ উদ্যোগে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ফোরাম ফর দি স্টাডি অব দি লিভার, বাংলাদেশের অনারারি চেয়ারম্যান শ্যামলী নাসরিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিম, এমপি এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া। উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী সামনে রেখে শতবর্ষের পথে বঙ্গবন্ধু, গর্বিত বাঙালীর জয়যাত্রা প্রতিপাদ্য নিয়ে ফোরাম ফর দি স্টাডি অব দি লিভার, বাংলাদেশ, লিভার ফাউন্ডেশন ওয়েস্ট বেঙ্গল, ভারত ও হেপাটাইটিস ফাউন্ডেশন অব ত্রিপুরা, ভারত-এর যৌথ উদ্যোগে ঢাকা, আগরতলা ও কলকাতায় তিনটি পদ্মা-গঙ্গা-গোমতী লিভার সম্মেলন আয়োজন করা হচ্ছে। যার প্রথমটি ঢাকায় দুই দিনব্যাপী ২১-২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বাংলাভাষী লিভার বিশেষজ্ঞদের কৃতিত্ব ও অর্জনগুলো বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার প্রয়াসে এ সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাঙালী অভিন্ন সত্তা। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ সৃষ্টি হতো না। তাঁর জীবনের আরাধ্য সাধনা ছিল পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে বাঙালী জাতিকে মুক্ত করে একটি শোষণহীন, বৈষম্যহীন অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মনে প্রাণে, বিশ্বাসে, নৈতিকতা ও মূল্যবোধে ধারণ করতে হবে। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু কী চেয়েছিলেন, কীভাবে দেশটাকে সমৃদ্ধ বাংলাদেশে পরিণত করতে চেয়েছিলেন, সে জায়গায় আমাদের কাজ করতে হবে। রেজাউল করিম বলেন, মানুষের সাংবিধানিক মৌলিক চাহিদার অন্যতম স্বাস্থ্য সেবা। চিকিৎসা শাস্ত্রে সম্পৃক্ত সকলকে এই মহান পেশার মর্যাদা ও মানোন্নয়নে আরও বেশি যত্নশীল হতে হবে। পেশাদারিত্বের উৎকর্ষ সাধন করে অমূল্য অবদান রেখে যাবার ব্রত থাকতে হবে। যে ব্যক্তি তার অস্তিত্বের উৎস, শেকড়ের ইতিহাস জানে না, সে ব্যক্তি দেশ সেবায় আত্মনিয়োগ করতে পারে না। এ জন্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনাকে ধারণ করে চিকিৎসকদের জাতির সেবায় আত্মনিয়োগ করতে হবে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে নানা কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। সরকারী কর্মসূচীর পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর স্মরণার্থে বাংলাভাষী লিভার বিশেষজ্ঞদের তিনটি সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে ঢাকা, আগরতলা ও কলকাতায় তিনটি পদ্মা-গঙ্গা-গোমতী লিভার সম্মেলন আয়োজন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এ আয়োজন প্রমাণ করে বঙ্গবন্ধু ছিলেন অবিসংবাদিত বিশ্ব নেতা। রাষ্ট্র পরিচালনায় বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী নেতৃত্বের কথা স্মরণ করে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় ছিলেন সদা সোচ্চার। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা যখন দেশটির হাল ধরেন, তখন সারাদেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত সঙ্কটাপূর্ণ। তিনি গরিব মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে জাতীয়করণ করেছিলেন। সরকারী চিকিৎসা ব্যবস্থাকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে প্রতি উপজেলায় হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। দেশের চিকিৎসা খাতে বঙ্গবন্ধুর রক্ত ও আদর্শের উত্তরসূরি শেখ হাসিনা যুগান্তকারী ভূমিকা রেখে চলেছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা স্বাস্থ্য সেবাকে গণমুখী ও জনবান্ধব করার জন্য জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করেছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছেন। প্রতিটি বিভাগে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, নার্সিং কলেজ ও ইনস্টিটিউট, মেডিক্যাল এসিস্টেন্ট ট্রেনিং স্কুল, হেলথ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছেন। এসবের লক্ষ্য হচ্ছে চিকিৎসা বিজ্ঞানে দক্ষ মানুষ তৈরি করা এবং নাগরিকদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা। পূর্তমন্ত্রী বলেন, দেশের সকল নাগরিকের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের কাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসা ক্ষেত্রে লিভার বিশেষজ্ঞদের উচ্চতর গবেষণা, জ্ঞান, মেধা ও অভিজ্ঞতার বিনিময় দেশে লিভারের চিকিৎসায় নতুন দিগন্তের সূচনা করতে পারে। সে জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে, যাতে অদূর ভবিষ্যতে লিভারের যেকোন চিকিৎসা দেশেই করা যায়।
×