ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নানা উদ্যোগের পরও শেয়ারবাজারে দরপতন

প্রকাশিত: ০৮:৪৮, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

নানা উদ্যোগের পরও শেয়ারবাজারে দরপতন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শেয়ারবাজারকে পতনের ধারা থেকে ফেরাতে গত সপ্তাহে অর্থমন্ত্রী স্টেকহোল্ডারসহ বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সভা করেছেন। অর্থমন্ত্রীর সভার আগের দিন ও পরের দিন বাজার কিছুটা উত্থানে ছিল। তবে পরের তিন কার্যদিবস পতনে হয়েছে লেনদেন। সপ্তাহ শেষে দেখা যায় উত্থানের চেয়ে পতনের পাল্লা ভারি ছিল। সপ্তাহজুড়ে উভয় শেয়ারবাজারের সব সূচক কমেছে। তবে টাকার পরিমাণে লেনদেন বেড়েছে। বিশেষ করে মার্জিন ঋণ নিয়ে কেনার শেয়ারের দর কমে যাওয়ায় তা ফোর্সড সেলের আওতায় চলে এসেছে। এই আতঙ্কে শেয়ারবাজারে দরপতন আরও বেড়েছে। জানা গেছে, গত সপ্তাহে ৫ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ১ হাজার ৮৯৭ কোটি ৯৫ লাখ ২১ হাজার ৭৩৩ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের সপ্তাহ থেকে ২১১ কোটি ৭৭ লাখ ১৯ হাজার ৩৩৭ টাকা বা ১২.৬৪ শতাংশ বেশি। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৬৮৬ কোটি ১৮ লাখ ২ হাজার ৩৯৬ টাকার। ডিএসইতে গত সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছে ৩৭৯ কোটি ৫৯ লাখ ৪ হাজার ৩৪৬ টাকার। আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছিল ৪২১ কোটি ৫৪ লাখ ৫০ হাজার ৫৯৯ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে গড় লেনদেন ৪১ কোটি ৯৫ লাখ ৪৬ হাজার ২৫৩ টাকা কমেছে। গত সপ্তাহে ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭৮ পয়েন্ট বা ১.৫৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮৫৬ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৩৩ পয়েন্ট বা ২.৯০ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১ পয়েন্ট বা ০.০৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ১২৩ পয়েন্ট এবং ১ হাজার ৭৩৬ পয়েন্টে। ডিএসইতে গত সপ্তাহে ৩৫৫টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৮৩টির বা ২৪ শতাংশের, কমেছে ২৩৯টির বা ৬৭ শতাংশের এবং ৩৩টির বা ৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহজুড়ে ১৫৮ কোটি ৫৬ লাখ ৯৫ হাজার ২৮০ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১১০ কোটি ১১ লাখ ৫৭ হাজার ৫৮৬ টাকার। এ হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন ৪৮ কোটি ৪৫ লাখ ৩৭ হাজার ৬৯৪ টাকা বা ৪৪ শতাংশ বেড়েছে। গত সপ্তাহে সিএসই’র সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২২২ পয়েন্ট বা ১.৪৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৭৬০ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসসিএক্স ১৩৫ পয়েন্ট বা ১.৪৮ শতাংশ, সিএসই-৩০ সূচক ৩৭৫ পয়েন্ট বা ২.৮৪ শতাংশ, সিএসই-৫০ সূচক ৯ পয়েন্ট বা ০.৭৭ শতাংশ এবং সিএসআই ২৫ বা ২.৪৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৮ হাজার ৯৬০, ১২ হাজার ৭৮৬, ১ হাজার ৮৩ ও ৯৬৬ পয়েন্টে। গত সপ্তাহে সিএসইতে মোট ৩০৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের হাত বদল হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭৯টির, দর কমেছে ২০৩টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৪টির। সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষে প্রকৌশল খাত ॥ টানা ৬ সপ্তাহ ধরে সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতকে পেছনে ফেলে শীর্ষে উঠে এসেছে প্রকৌশল খাত। জানা গেছে, বিদায়ী সপ্তাহে প্রকৌশল খাতের কোম্পানিগুলোর ৩৮৭ কোটি ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার বা মোট লেনদেনের ২১ শতাংশ হয়েছে। আর আগের সপ্তাহে এই খাতের কোম্পানিগুলোর ৩১৪ কোটি ৪২ লাখ টাকার বা মোট লেনদেনের ১৯ শতাংশ হয়েছিল। বিদায়ী সপ্তাহে মোট লেনদেনের ২১ শতাংশ হওয়ার মাধ্যমে ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ স্থানে উঠে আসে এই খাতটি। শীর্ষে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাত লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে নেমে গেছে। অর্থাৎ বিদায়ী সপ্তাহে ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানিগুলোর ডিএসইতে মোট লেনদেনের ১৮ শতাংশ বা ৩২১ কোটি ৬৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহে তৃতীয় স্থানে উঠে আসে বীমা খাত। সপ্তাহজুড়ে এই খাতের কোম্পানিগুলোর মোট লেনদেনের ১২ শতাংশ বা ২০৪ কোটি ৩৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। অন্য খাতের মধ্যে বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোর ১৬৬ কোটি ১৮ লাখ বা ৯ শতাংশ, বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতের ১১৩ কোটি ৬৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার বা ৬ শতাংশ, ব্যাংক খাতের ৯৪ কোটি ৫৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার বা ৫ শতাংশ, ট্যানারি খাতের ৯২ কোটি ৫২ লাখ ৫০ হাজার টাকার বা ৫ শতাংশ, বিবিধ খাতের ৯৫ কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার বা ৫ শতাংশ, খাদ্য খাতের ৮৪ কোটি ৮৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার বা ৫ শতাংশ, সিরামিক খাতে ৫৭ কোটি ১৫ লাখ বা ৩ শতাংশ, টেলিযোগাযোগ খাতে ৫০ কোটি ৭০ লাখ ৫০ হাজার টাকার বা ৩ শতাংশ, নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ৩১ কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা বা ২ শতাংশ, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে ৩৪ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার বা ২ শতাংশ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলোর সপ্তাহজুড়ে ৩১ কোটি ৯১ লাখ টাকার বা মোট লেনদেনের ২ শতাংশ হয়েছে। এছাড়া ভ্রমণ খাতে ৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকার, পেপার খাতে ৭ কোটি ২৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার, সিমেন্ট খাতে ৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকার এবং পাট খাতের কোম্পানিগুলোর ১৩ কোটি ৬৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
×