ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বমানের নার্সিং প্রশিক্ষণ

প্রকাশিত: ০৮:৫৬, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বিশ্বমানের নার্সিং প্রশিক্ষণ

আর্তমানবতার মহান পেশা নার্সিংয়ের চাহিদা শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক সীমানায়ও এর আবেদন অনেক বেশি। সুতরাং মানব সেবামূলক এই পেশায় শিক্ষিত ও দক্ষ কর্মীরা নিজেদের যোগ্যতম স্থানে নিয়ে দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবে। বুধবার সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর তেঁতুইবাড়িতে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজের প্রথম স্নাতক ডিগ্রীধারীদের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সনদ বিতরণের সময় এমন মর্যাদাপূর্ণ পেশাকে জনগণের দ্বারে পৌঁছে দিয়ে বিশ্ব সভায়ও অংশগ্রহণের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে বর্তমান সরকার দেশ ও বিদেশে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্সদের তাদের কর্মদক্ষতায় এই বিশেষ সেবামূলক আঙিনাটিতে নিজেদের সময়োপযোগী অবদান রাখতে সব ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। নার্সদের ক্রমবর্ধমান চাহিদায় দেশ ও অন্য দেশে তাদের আরও বেশি সম্পৃক্ততাকে গুরুত্ব দিয়ে দক্ষ এবং পারদর্শী হয়ে উঠতে পরামর্শ দেন। এ জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার গুরুত্ব যেমন আছে পাশাপাশি প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিয়ে আরও দক্ষতার পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করতে হবে। দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদায়ও নার্সের প্রয়োজন অনেক বেশি। সরকার বিভিন্ন হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিক এবং বিশেষায়িত চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করে স্বাস্থ্যসেবার মানকে এক উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যেতে বিশেষ আগ্রহী। এ ব্যাপারে সরকার যেমন আন্তরিক পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদেরও বিশেষ উদ্যোগী হয়ে জনসেবামূলক এই গুরুত্বপূর্ণ বলয়ে নিজেদের মানোন্নয়নে সর্বদা সচেষ্ট থাকা বাঞ্ছনীয়। স্নাতক পর্বের এই মহতী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী অন্যদেরও এই মহান পেশার সঙ্গে যোগ দিতে উৎসাহিত করেন। শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের সুষ্ঠু সমন্বয়ে নার্সিংয়ের মানসম্মত পেশাকে আরও অনেক বাড়িয়ে দিতে হবে। বাংলাদেশের নার্সদের আন্তর্জাতিক চাহিদায় বিদেশেও অনেকে এই পেশায় যুক্ত হয়ে নিজের সক্ষমতা প্রমাণ করে যাচ্ছে। সদ্য সনদ পাওয়া স্নাতক অর্জন করা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন যাতে শুধু সনদ গ্রহণই নয়- অর্জিত জ্ঞান, শিক্ষা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে অসুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোই তাদের মূল দায়িত্ব। তেমন কর্তব্য পালনে তারা যেন কোনভাবেই হেলাফেলায় দায় না সারে। নার্সিং পেশা অত সহজ নয়। কঠিন পরিশ্রমের অনবদ্য সাধনা। তাকে যথাযথ ভাবে কাজে লাগিয়ে নিজেকেসহ পুরো সেবা প্রতিষ্ঠানকে তার লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে হবে। ২০১৩ সালে ১৮ নবেম্বর তৎকালীন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ নাজিব বিন আবদুল রাজাক বাংলাদেশ সফরে এসে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজের শুভ উদ্বোধন করেন। সেই যাত্রার চার বছর পর প্রথম স্নাতক শিক্ষার্থীরা তাদের সমাপনী পর্বে উত্তীর্ণ হলে এই শুভ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মেধা বিবেচনায় রুবিনা জেসমিন, কামরুন্নাহার ও রীনা আক্তারকে প্রধানমন্ত্রী পদক প্রদান করেন। সফল স্নাতক অর্জনকারীরা নিজেরাই শুধু শিক্ষিত হলে চলবে না এমন শিক্ষার আলো আরও অনেকের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। সরকার স্বাস্থ্য খাতকে যে পর্যায়ে নিয়ে গেছে সেখানে শুধু প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধিই যথেষ্ট নয়, সংশ্লিষ্ট দক্ষ ও উপযুক্ত মানব সম্পদ উন্নয়নও আবশ্যকীয় শর্ত। সুতরাং স্বাস্থ্য খাত আরও আধুনিক আর বিশ্বমানে নিতে গেলে চিকিৎসা কেন্দ্র, বিশেষায়িত হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিক যেমন জরুরী পাশাপাশি মানব সেবামূলক এসব প্রতিষ্ঠানে দক্ষ ও যোগ্য কর্মী নিয়োগও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে আসতে হবে অসুস্থ মানুষের যথার্থ পরিচর্যায়। তেমন স্বপ্নের বাংলাদেশ সর্বমানুষের দ্বারে পৌঁছেও দিতে হবে। স্মরণ রাখতে হবে সর্বক্ষণিক অংশীদারিত্বে এই মহান সেবামূলক ব্রতে পেশাদারিত্বকে সবার উর্ধে স্থান দেয়াও বিশেষ কর্র্তব্য।
×