ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ অরক্ষিত ফুটপাথ

প্রকাশিত: ০৯:১৯, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ অরক্ষিত ফুটপাথ

কিছুদিন আগের কথা। রিক্সা থেকে নেমে রাস্তার বাঁ পাশ ধরে ফুটপাথে উঠেছি। একটু সামনে যেতেই দেখি ফুটপাথের ওপর চায়ের দোকান। কিছুটা বিরক্ত হয়ে রাস্তায় নেমে চায়ের দোকান পার হয়ে সামনে দিকে তাকিয়ে দেখি ফুটপাথের ওপর বসেছে কাপড়ের দোকান। কয়েকটা অস্থায়ী দোকান একসঙ্গে বসেছে সেখানে। উপায় না দেখে শেষ পর্যন্ত ফুটপাথ ছেড়ে রাস্তা দিয়ে যেতে হলো নির্দিষ্ট গন্তব্যে। বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের হিসাব অনুযায়ী, সারাদেশে দুর্ঘটনার ফলে যারা নিহত হন তাদের ৪৩% শতাংশই হলেন পথচারী। অর্থাৎ যারা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন তাদের মধ্যে পথচারীর সংখ্যাও কম নয়। আর এমন দুর্ঘটনার জন্য অনেকাংশে দায়ী আমাদের দেশের অরক্ষিত ফুটপাথ। কারণ অনেক সময় চলাচলের জন্য ফুটপাথ যথেষ্ট যায়গা না থাকার কারণে পথচারী রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হন। এজন্য হঠাৎ ঘটে যায় দুর্ঘটনা। কখনও বা ফুটপাথে হকারদের দৌরাত্ম্য, কখনও অস্থায়ী দোকানপাট আবার কখনও ফুটপাথে ফেলে রাখা হয় বিভিন্ন ভবনের নির্মাণ সামগ্রী। এতে করে নাগরিকদের পড়তে হয় মহা ভোগান্তিতে। ফুটপাথ দিয়ে চলাফেরা করা যায় না। শুধু তাই নয় বিভিন্ন দোকান পাটের বর্ধিত অংশ এমনভাবে ফুটপাথে তুলে দেওয়া হয়, যা দেখে বোঝার উপায় নেই যে এটা ফুটপাথ। বিভিন্ন পরিবহনের যাত্রী ছাউনি, টিকেট কাউন্টার এমনকি ইলেকট্রিক খুঁটিও দেখা যায় ফুটপাথের মাঝখানে। ফলে সাধারণ মানুষদের ফুটপাথ ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না। অনেক সময় জ্যাম এড়াতে গিয়ে শিক্ষিত এক শ্রেণীর মানুষদের দেখা যায় ফুটপাথ বাইক তুলে দিতে। একদিকে যেমন এটা আইনগতভাবে ঠিক নয় তেমনি এ কারণে ফুটপাথে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায় বহুগুণ। তাছাড়া মানুষের চলাচল বিঘিœত হয়। যদি ফুটপাথগুলো এভাবে অরক্ষিত থাকে তাহলে মানুষ হাঁটবে কোথায়? নিরাপদ ফুটপাতের জন্য প্রয়োজন সুন্দর নগর পরিকল্পনা। এছাড়াও বর্তমানে অরক্ষিত ফুটপাথগুলো থেকে অস্থায়ী দোকানপাট, মূল দোকানের বর্ধিত অংশ, হকারদের দৌরাত্ম্য দূর করতে প্রশাসনকে নিতে হবে প্রয়োজনীয় স্থায়ী ব্যবস্থা। ফুটপাথ দখলমুক্ত হলে যেমন নগরীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে তেমনি করে সড়ক দুর্ঘটনার হার অনেকাংশে কমে যাবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
×