ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বগুড়া-নাটোর সড়ক মহাসড়কে উন্নীত হচ্ছে

প্রকাশিত: ১১:৩২, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বগুড়া-নাটোর সড়ক মহাসড়কে উন্নীত হচ্ছে

সমুদ্র হক, বগুড়া অফিস ॥ পদ্মা সেতু নির্মাণের পর সুদূর প্রসারী ভাবনায় উত্তরাঞ্চলের অপ্রশস্ত (সরু) বগুড়া-নাটোর সড়ক চওড়া করা হচ্ছে। এতকাল ১৮ ফুট প্রশস্ততার ৬২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কের মান ছিল স্থানীয় আঞ্চলিক সড়ক। শুধু মুখে মুখেই ‘মহাসড়ক’ বলা হতো। সড়কটির প্রশস্ততা ২৪ ফুট ও দুই ধারে ছোট যানবাহন চলাচলে আরও ৫ ফুট করে পেভমেন্টে মোট ৩৪ ফুটে উন্নীত হচ্ছে। সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের অর্থনৈতিক কমিটির (একনেক) এক সভায় বগুড়া-নাটোর সড়কের প্রশস্ততা বাড়িয়ে মহাসড়কে উন্নীত করতে ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, সরকারী আদেশ জারি ও অর্থ ছাড়ের পরই প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ করে টেন্ডার দেয়া হবে। আশা করা হচ্ছে আগামী বছরের প্রথমার্ধে সড়কটি চওড়া হয়ে মহাসড়কে উন্নীত হবে। ১৯৬২ সালে বগুড়া জেলা পরিষদের অর্থায়নে সড়কটি নির্মিত হয়। ১৯৮০ সালে সড়ক ও জনপথ (স ও জ) অধিদফতরের নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়। ৫৭ বছরে এই সড়কের গুরুত্ব বহুগুণ বেড়ে যাওয়ার পরও প্রশস্ততা বাড়েনি। উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের ১৫ জেলার সড়ক যোগাযোগের অন্যতম বগুড়া-নাটোর সড়কে যান চলাচল কয়েকগুণ বেড়েছে। প্রতিদিন ১০ হাজারেরও বেশি বড় বাস, মিনিবাস, কার, ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন চলাচল করে। সরু এই পথে বিপরীতমুখী দুইটি বাস অতিক্রমের সময় সামান্য অসতর্কে দুর্ঘটনা ঘটে। বর্ষার সময় পাকা রাস্তার ধারে বেশি কাদাজলে গাড়ির চাকা নামালে ভোগান্তি পোহাতে হয়। চালকরা ওভারটেক ও বিপরীতমুখী যানবাহনকে সাইড দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েন। সড়কে খানাখন্দক থাকলে ভোগান্তি বাড়ে। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় এই সড়কে পাথর বোঝাই ভারি ট্রাক চলাচল বেড়ে গিয়েছে। পঞ্চগড় ঠাকুরগাঁও থেকে ছোট বড় পাথর যাচ্ছে পদ্মা সেতু পয়েন্টে। অপ্রশস্ত সড়কে পাথর বোঝাই ট্রাক চলাচলেও বিঘœ ঘটে। স ও জ’র সূত্র জানায়, ২০০৪ সালে হার্ডিঞ্জ রেল ব্রিজের পাশেই লালনশাহ সড়ক সেতু চালু হওয়ার পর উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়ে যানবাহন চলাচল বেড়ে যায়। এর আগে উত্তর-দক্ষিণের সড়ক যোগাযোগে পাকশি ফেরি পার হতে হতো। আগামীতে পদ্মা সেতু চালু হলে যানবাহনের সংখ্যা আরও বাড়বে। এদিকে বগুড়া-নাটোর সড়কের পাশেই বগুড়া অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপিত হচ্ছে। ফলে এই সড়কের গুরুত্ব আরও বাড়বে। সওজ’র বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জমান জানান, গত শতকের ষাটের দশকে বগুড়ার সঙ্গে রাজশাহী নগরীর যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল রেল। বগুড়া ও উত্তরাঞ্চলের মানুষ সান্তাহার রেল জংশন হয়ে রাজশাহী যেত। বগুড়া-নাটোর সড়ক রাজশাহীর সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগে নির্মিত হয়। সিংড়ায় সেতু নির্মাণের আগে পর্যন্ত ফেরি পার হতে হতো। সত্তরের দশকের মধ্যভাগে দেশজুড়ে সড়ক যোগাযোগে পরিবর্তনের পালায় বগুড়া-নাটোর সড়কের গুরুত্ব বেড়ে চাপ বাড়তে থাকে। প্রশস্ততা বাড়ানো খুবই জরুরী হয়ে পড়ে। দেরিতে হলেও সড়কটির প্রশস্ততা বাড়িয়ে মহাসড়কে উন্নীত হওয়ায় পরবর্তী অধ্যায়ে লেন বাড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি হবে। বগুড়া চেম্বারের সভাপতি মাসুদুর রহমান জানান, অনেক আগেই বগুড়া-নাটোর সড়ক উন্নীত করার প্রয়োজন ছিল। আগামীতে এই সড়কের লেনও বাড়াতে হবে।
×