ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আমাদের তৈরি প্রতিমা পূজা পায় ভক্তের - এটাই বড় পাওয়া

প্রকাশিত: ১০:২৭, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

আমাদের তৈরি প্রতিমা পূজা পায় ভক্তের - এটাই বড় পাওয়া

খোকন আহম্মেদ হীরা ॥ শরতের শুভ্রতা ছড়িয়ে আগমন করবেন দেবী দুর্গা। পঞ্জিকা মতে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে মর্ত্যলোকে দেবীর আগমনী বার্তা বেজে উঠবে। ৪ অক্টোবর ষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে দেবীর নবপত্র কল্পারম্ভ ষষ্ঠী পূজা ওইদিন মন্ডপে মন্ডপে বেজে উঠবে ঢাক-ঢোল আর কাঁসরের বাজনার শব্দ। ৫ অক্টোবর সপ্তমী পূজা, ৬ অক্টোবর মহাঅষ্টমী পূজা, ৭ অক্টোবর নবমী এবং ৮ অক্টোবর দশমী বিহিত পূজা ও দশহরার মধ্য দিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী পূজার অনুষ্ঠান সমাপ্ত হবে। তাই দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে এখন দম ফেলার সময় নেই বরিশাল নগরীসহ জেলার ৬১৩ পূজামন্ডপ ও মন্দিরে প্রতিমা তৈরির কাজে নিয়োজিত শিল্পীদের। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বরিশালের সর্বত্র চলছে নানা ধরনের প্রস্তুতি। নগরীসহ জেলার দশটি উপজেলার মন্দিরে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। প্রতিমা শিল্পীরা জানান, এঁটেল মাটি, বাঁশ, সুতলিসহ প্রতিমা তৈরিতে প্রয়োজনীয় সবকিছুর দাম বৃদ্ধি পেলেও বাড়েনি তাদের পারিশ্রমিক। এ নিয়ে তাদের মনে কোন ক্ষোভ বা অভিযোগ নেই। তাদের মতে, আমাদের তৈরি প্রতিমা দেখে হাজার হাজার মানুষ মুগ্ধ হয়। আমাদের তৈরি প্রতিমা ভক্তের পূজা পায়, এই পাওনাওতো আর কম নয়। তাই এমন একটা মহৎ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারাটাই আমাদের কাছে অনেক বড় পাওয়া। জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মানিক মুখার্জী জানান, মহানগরসহ গোটা বরিশাল জেলায় এবার ৬১৩ মন্ডপের মধ্যে মহানগরে ৪০টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিবারের মতো এবারেও বরিশাল বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পূজা অনুষ্ঠিত হবে জেলার আগৈলঝাড়ায় উপজেলায়। জেলার ৬১৩ পূজা ম-পের মধ্যে আগৈলঝাড়া উপজেলায়ই ১৫১ মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে গত এক মাস ধরে প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছেন মৃৎশিল্পীরা। তারা মাটি দিয়ে তৈরি করছেন দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, অসুর, মহিষ, সিংহের মৃন্ময় মূর্তি। প্রতিবারই প্রতিমা তৈরিতে দেখা যায় নতুনত্ব। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। প্রতিমা তৈরিতেও রয়েছে বৈচিত্র্যের ছোঁয়া। আয়োজকদের ফরমায়েশ ও বাজেট অনুযায়ী প্রতিমা তৈরি করছেন শিল্পীরা। বিভিন্ন পূজামন্ডপে দেবীকে উপস্থাপন করা হবে এক কোচা শাড়ি পরিহিত বাঙালীর চিরচেনা মায়ের রূপে। কেউ সাঁওতালি, কেউ নৃত্যরত, কেউ যুদ্ধরতসহ বিভিন্ন সব বাহারি ঢংয়ে। ইতোমধ্যে দেবী দুর্গার আগমনী বার্তায় সর্বত্র উৎসবের আমেজ শুরু হয়েছে। নগরীর রামকৃষ্ণ মিশন, সদর রোড, ফলপট্টি, কাঠপট্টি, কালিবাড়ী, কাউনিয়া এলাকার বিভিন্ন মন্দিরের মন্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, সবখানে এখন চলছে দেবী প্রতিমার ওপর কাদামাটির প্রলেপের কাজ। পরবর্তী সময়ে প্রতিমার ওপর রংতুলির ছোঁয়ায় দশভুজা দেবী ষষ্ঠীর দিন পাবে জীবন্ত রূপ। ওইদিন দেবী সেজে উঠবেন অপরূপ সাজে। শঙ্খ, উলুধ্বনি আর মঙ্গল সঙ্গীতে দেবী দুর্গাকে বরণ করে নেবেন সনাতন ধর্মাবলম্বী ভক্তরা।
×