ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাজনীতিকে আদালত দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চলছে : মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

প্রকাশিত: ০৮:৩০, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯

রাজনীতিকে আদালত দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চলছে   :   মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে রাজনীতিকে আদালত দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চলছে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রবিবার সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। তিনি আরও বলেন, দুর্নীতির দায়ে ছাত্রলীগের সভাপতি শোভন ও সাধারণ সম্পাদক রাব্বানীকে বাদ দেয়ায় প্রমাণিত হয়েছে দেশে দুর্নীতি কি আকারে চলছে। ছাত্রদলের কাউন্সিল স্থগিত সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, এই সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তিনি বলেন, আইন দিয়ে রাজনীতি হয় না। রাজনীতিকে আদালত দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা নজিরবিহীন ঘটনা। আসলে আওয়ামী লীগ বহুদলীয় গণতন্ত্র ও বিরোধী দলে বিশ্বাস করে না। দেশে নির্বাচনী স্বৈরতন্ত্র চলছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অনেক ধরনের গণতন্ত্রের মধ্যে নির্বাচনী গণতন্ত্র অন্যতম। কিন্তু দেশে এখন চলছে রুদ্ধদ্বার গণতন্ত্র। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অবিলম্বে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, তা না হলে রাজপথে আন্দোলন করেই তার মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে। তাঁকে মুক্ত করতে হলে এখ্যবদ্ধ আন্দোলন সংগ্রামের কোন বিকল্প নেই। ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকার তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্বাচন করে ক্ষমতা দখলে নিয়ে নিজেদের মতো করে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। তিনি বলেন, যে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছিল, তার মূলমন্ত্র ছিল গণতন্ত্র। আজ স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরে এসে মানুষ শূন্যতা অনুভব করছে, কোথায় সেই গণতন্ত্র! যে গনতন্ত্রের জন্য আমরা দেশ স্বাধীন করে ছিলাম তা এখন নেই। বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের গোপন ভোটে গণপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা করা। সেই সুযোগ কি দেশের মানুষ পাচ্ছে? মেটেই পাচ্ছে না। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিভাবে হয়েছে তা দেশের মানুষ দেখেছে। মির্জা ফখরুল বলেন, চাঁদাবাজির অভিযোগে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনা প্রমাণ করে সরকারের সকল স্তর দুর্নীতিগ্রস্থ। প্রমাণ হয়ে গেছে তারা দুর্নীতি করছে এবং সবাই মিলে করছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সংগঠনের অবিভাবক হচ্ছেন শেখ হাসিনা। ফলে তিনি ছাত্রলীগ নেতাদের বহিষ্কার করতেই পারেন। এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশ কি ধরণের আইন দিয়ে চলছে? দুই ধরনের আইনে দেশ চলছে। সরকারি দলের জন্য এক ধরনের আইন, আর বিরোধী দলের জন্য আরেক আইন। ওয়ান-ইলেভেনের সময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নামে ২১টি মামলা ছিল। ক্ষমতায় এসে সেগুলো বিভিন্নভাবে বাতিল করা হলো, আর সেই সময়ের মামলায় এখন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া কারাগারে। এক দেশে দুই রকমের বিচার। ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের মূল মন্ত্রই হচ্ছে জনগণ আর দেশের জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব যা একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে থাকে। যার মাধ্যমে দেশে একটা প্রতিনিধিত্বশীল সরকার গঠিত হয়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেশে আজ এ দুটিই অনুপস্থিত। আশির দশক থেকে শুরু করে গণতন্ত্রের খালেদা জিয়া বার বার গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছেন। কিন্তু তিনি আজ মিথ্যা মামলায় কারাবান্দী। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
×