ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সোনারগাঁয়ের কাচঁপুরে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ ॥ ৫ পুলিশসহ আহত ২৫

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯

সোনারগাঁয়ের কাচঁপুরে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ ॥ ৫ পুলিশসহ আহত ২৫

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের কাচঁপুরে সিনহা ওপেক্স গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। আজ রবিবার সকাল ১০টায় শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ ও ছাটাইকৃত শ্রমিকদের শ্রম আইন অনুযায়ী বেতন ভাতা পরিশোধ ও মাতৃত্বকালিন ছুটির সময় ভাতা প্রদানের দাবিতে তারা সড়ক অবরোধ শুরু করে। এতে এ মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। শ্রমিকদের মহসড়ক থেকে সরাতে গেলে শ্রমিকের সঙ্গে পুলিশ সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে। শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারসেল এবং রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে শ্রমিকরা মহাসড়ক থেকে সরে গেলে প্রায় দেড় ঘন্টা পর মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। এ সংঘর্ষের ঘটনায় ৫ পুলিশসহ ২৫ জন শ্রমিক আহত হয়। বর্তমানে গার্মেন্টসের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পুলিশ ও শ্রমিকরা জানায়, শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ ও ছাটাইকৃত শ্রমিকদের শ্রম আইন অনুযায়ী বেতন ভাতা পরিশোধ ও মাতৃত্বকালিন ছুটির সময় ভাতা প্রদানের দাবিতে শ্রমিকরা আজ রবিবার সকাল ১০টায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এসে অবরোধ সৃষ্টি করে বিক্ষোভ করতে থাকে। ফলে এ মহাসড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় শ্রমিকরা মহাসড়কে টায়ার, কাঠ, বাঁশ ও কাঠের আসবাবপত্র জালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। খবর পেয়ে শিল্পাঞ্চল পুলিশ ও সোনারগাঁও থানা পুলিশসহ জেলার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করে। সকাল দশটা থেকে বেলা সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত সড়ক অবরোধের কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। শিল্প পুলিশ ও জেলা পুলিশের সদস্যরা কয়েক দাফা বুঝিয়ে তাদের রাস্তা থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা পুলিশের অনুরোধ উপেক্ষা করে পুলিশের উপর ইটপাকেল নিক্ষেপ করে। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ, রাবার লুলেট ও টিয়ার গ্যাস সেল ছুড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে তারা মহাসড়ক থেকে সরে যায়। পরে এ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। সিনহা গার্মেন্টসের শ্রমিক জালাল ও সালমা বেগম জানান, গত কয়েক মাস ধরে সিনহা ওপেক্স গামেন্টের শ্রমিকদের বিভিন্ন অজুহাতে শ্রমিক ছাঁটাই করা হচ্ছে। কিন্তু শ্রম আইন অনুযায়ী কোন শ্রমিককে ছাইটাই করতে হলে তিন মাসের আগাম বেতন ও গ্র্যাচুইটিসহ সুযোগ সুবিধা প্রদান করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু গার্মেন্টস কৃর্তপক্ষ তা মানছেনা। এছাড়া একজন নারী শ্রমিক মাতৃকালিক ছুটিতে গেলে বেতনের পাশাপাশি ভাতা প্রদান করার কথা থাকলে তা প্রদান করা হয় না। প্রতি মাসের বেতন দেয়া হয় ১৫ তারিখের পরে। এসব বিষয় নিয়ে শ্রমিকরা মালিক কৃর্তপক্ষের কাছে বার বার দাবি জানালেও তারা কোন কর্নপাত করছেনা। উল্টো শ্রমিকদের নানা ভাবে হয়রানী ও নির্যাতন করা হয়। যে কারণে শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে দাবি আদায়ের জন্য রাস্তায় নেমেছে। কাচঁপুরের সিনহা ওপেক্স গার্মেন্টের শ্রমিক আনোয়ার জানান, আমাদের দাবি আদায়ের জন্য শ্রমিকরা শান্তিপুর্ণভাবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছিলো। কিন্তু পুলিশ বিনা উস্কানিতে আমাদের উপর লাঠি চার্জ করে এবং গুলি টিয়ারসেল ছোড়ে। এতে আন্দোলনরত বেশ কিছু শ্রমিক আহত হয়েছে। শিল্পাঞ্চাল পুলিশ-৪ এর নারায়ণগঞ্জ জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈকত এ শাহিন জানান, শ্রমিক ছাটাই বন্ধ ও ছাটাইকৃত শ্রমিকদের শ্রম আইন অনুযায়ী বেতন ভাতা পরিশোধ ও মাতৃত্বকালিন ছুটির সময় ভাতা প্রদানের দাবিতে শ্রমিকরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ সৃষ্টি করে বিক্ষোভ করে। শিল্প পুলিশ ও জেলা পুলিশের সদস্যরা কয়েক দাফা বুঝিয়ে তাদের রাস্তা থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা পুলিশের অনুরোধ উপেক্ষা করে পুলিশের উপর ইটপাকেল নিক্ষেপ করে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১০ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ২০-২২ রাউন্ড টিয়ার সেল ব্যবহার করে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
×