ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ক্যাম্পাস পরিচিতি

স্বনির্ভর জনসম্পদ গড়ার প্রত্যয়ে ॥ রিপাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজ

প্রকাশিত: ১২:১২, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯

স্বনির্ভর জনসম্পদ গড়ার প্রত্যয়ে ॥ রিপাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজ

‘শিক্ষায় সাফল্য ও আত্মপ্রতিষ্ঠার এক অনন্য সমন্বয়’ এই স্লোগান নিয়ে গাজীপুর জেলাধীন টঙ্গীর বনমালায় ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে রিপাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজ। সদ্য প্রতিষ্ঠিত এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি মাত্র ১ (এক) বছরেই প্রশংসিত হচ্ছে সর্বমহলে। রিপাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম আফতাবের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অত্র অঞ্চলের সুবিশাল জনসংখ্যাকে স্বনির্ভর জনম্পদে পরিণত করাই এই প্রতিষ্ঠানের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘তাজউদ্দীন আহমদ শান্তি স্বর্ণপদক’ প্রাপ্ত এই তরুণ শিক্ষা-উদ্যোক্তা মনে করেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করছে তিনটি মারাত্মক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে। প্রথমত, তাদের একাডেমিক ফলাফল ও যোগ্যতার মধ্যে সমন্বয় সাধন হচ্ছে না। ফলে দেখা যাচ্ছে, প্রতিবছর লাখ লাখ শিক্ষার্থী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করে, এমনকি জিপিএ-৫ পেয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা কিংবা চাকরিতে নিয়োগ পরীক্ষায় ন্যূনতম পাস নম্বরটুকুও তুলতে পারছে না; যা তাদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনকে মারাত্মকভাবে হতাশাগ্রস্ত করে তুলছে। দ্বিতীয়ত, উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণের অভাবে শিক্ষার্থীরা উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠছে না। তিনি মনে করেন, সুবিশাল জনসংখ্যা ও সীমিত কর্মসংস্থানের এই বাংলাদেশে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে তৈরি হতে হবে এক একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে, গড়ে তুলতে হবে নিত্যনতুন কর্মসংস্থান। কিন্তু এসব বিষয়ে যথাযথ প্রশিক্ষণ, আয়োজন, সুযোগ ও প্রেরণার অভাবে আমাদের শিক্ষার্থীরা উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠছে না। অন্যদিকে তীব্র প্রতিযোগিতার বাজারে সীমিত কর্মসংস্থানে ঠাঁই করে নিতেও অনেকেই ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে দেখা যাচ্ছে, যে সন্তান হতে পারত পরিবার, সমাজ এবং গোটা রাষ্ট্রের জন্য মহত্তম সম্পদ, আজ সেই হয়ে যাচ্ছে বৃহত্তম দায়! তৃতীয়ত, কোমলমতি খুদে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং নাগরিক সচেতনতা সৃষ্টি না হওয়াকেও একটি ভয়ঙ্কর সঙ্কট বলে আখ্যায়িত করেন এই তরুণ শিক্ষা-উদ্যোক্তা। তার মতে, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরাঞ্চলে গড়ে ওঠা অনেক প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান রাজনীতিমুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্লোগানে চেতনাবিহীন প্রজন্ম গড়ে তুলছে। ফলে শিক্ষার্থীরা নাগরিক, সামাজিক ও মানবিক দায়বদ্ধতার চর্চা না করে আত্মকেন্দ্রিকতায় আক্রান্ত হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ প্রযুক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রেও তারা হারাচ্ছে ইতিবাচকতা, হ্রাস পাচ্ছে সিদ্ধান্তগ্রহণ ক্ষমতা এবং সর্বোপরি হারাচ্ছে দেশপ্রেম, ঝুঁকে পড়ছে মাদকসহ বহুমুখী নেতিবাচক কর্মকা-ের দিকে। এহেন সঙ্কট মোকাবেলায় ক্ষুদ্র হলেও কার্যকরী ভূমিকা পালনের ব্রত নিয়ে প্রতিষ্ঠিত রিপাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজ ইতোমধ্যেই চালু করেছে বেশকিছু ফলপ্রসূ প্রকল্প। ব্যতিক্রমী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে ইতোমধ্যেই মঞ্চস্থ হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম স্কুলভিত্তিক মূকনাটক ‘হৃদয়ে রঙধনু’ যা রচনা ও প্রযোজনা করেছেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের জ্যেষ্ঠকন্যা শারমিন আহমদ। প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলোÑ সমাজকর্মের মধ্য দিয়ে নেতৃত্বের গঠন ও বিকাশের লক্ষ্যে লিডারশিপ ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও মানবিক কর্মকা- তথা কমিউনিটি সার্ভিসে অংশগ্রহণ করানো এবং তাদের মধ্যে নাগরিক দায়িত্ববোধ ও উদ্যোক্তার গুণাবলী সৃষ্টির লক্ষ্যে বিষয়ভিত্তিক ওয়ার্কশপের আয়োজন। ‘খুদে উদ্যোক্তা’ গড়ে তোলা এবং তাদের সঙ্গে নিয়ে ‘আদর্শ গ্রাম’ ধারণাটা বাস্তবায়নের লক্ষ্যেও কাজ করে যাচ্ছে সর্বজনীন এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠন। আকর্ষণীয় মেধাবৃত্তি প্রদানের পাশাপাশি সবার জন্য শিক্ষা সুষম করার লক্ষ্যে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের দেয়া হয় আর্থিক সহায়তা। এক্ষেত্রে সচ্ছলদের অর্থ দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে অসচ্ছল শিশুদের জন্য শিক্ষা প্রকল্প। সম্প্রতি কিছুসংখ্যক প্রতিবন্ধী ও ছিন্নমূল শিশুদের জন্য বিনামূল্যে পাঠদান এবং অন্যান্য সহযোগিতার আয়োজনও করেছে সদ্য প্রতিষ্ঠিত এই কার্যকরী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে রিপাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজ, এমনই প্রত্যাশা। আল-মামুন
×