ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ॥ ঐতিহ্য ধারণ করে এগিয়ে চলা

প্রকাশিত: ১২:১১, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ॥ ঐতিহ্য ধারণ করে এগিয়ে চলা

হাঁটি হাঁটি করে ১৬ বছর পূর্ণ করেছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)। পদার্পণ করেছে ১৭ বছরে। বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে নবীন হলেও ইতিহাস ও ঐতিহ্যের দিক থেকে এটি একটি প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে বিআইটি এবং পরে বিআইটি খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) রূপান্তরিত হয়। ইতোমধ্যে কুয়েট দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করেছে। এগিয়ে চলেছে সামনের দিকে। বর্তমানে এ বিশ্বদ্যিালয়ে তিনটি অনুষদের অধীনে ২০টি বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঁচ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। সাড়ে তিন শতাধিক শিক্ষক, দেড় শতাধিক কর্মকর্তা এবং তিন শতাধিক কর্মচারী দিয়ে চলছে কুয়েটের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। ১ সেপ্টেম্বর দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হলো কুয়েটের ১৬তম বর্ষপূর্তি, বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। খুলনা শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার উত্তরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে ফুলবাড়ী গেট এলাকায় গ্রাম্য সরলতার মধ্যে ১০১ একর এলাকা নিয়ে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) অবস্থিত। এই কুয়েটের ইতিহাস বিভিন্নভাবে ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। এটি ১৯৬৭ সালে খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কিন্তু এর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৭৪ সালে। পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালে এটি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি), খুলনা শাখায় রূপান্তরিত হয়। খুলনা বিআইটি হিসেবে কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ার প্রায় দেড় যুগ পর ২০০৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর খুলনা বিআইটি খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) রূপান্তরিত হয়। গত ১ সেপ্টেম্বর কুয়েটের পথ চলার ১৬তম বছর পূর্ণ করেছে। ১৭তম বর্ষে পদার্পণ করছে নবীন এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী তথা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানমালায় ছিল প্রীতি সমাবেশ, বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রজেক্ট ও পোস্টার প্রদর্শনী, কুয়েটের অর্জন শীর্ষক প্রেজেন্টেশন, আলোচনা সভা, বৃক্ষ রোপণ, দর্শনার্থীদের জন্য বিভিন্ন বিভাগের ল্যাবসমূহ উন্মুক্তকরণ, ছাত্র-শিক্ষক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, দোয়া মাহ্্ফিল, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) মেয়র আলহাজ তালুকদার আব্দুল খালেক। এ সময় সিটি মেয়র বলেন, ‘কুয়েট একদিন আন্তর্জাতিক মানের বিশ^বিদ্যালয়ে পরিণত হবে। ১৯৭৪ সালে যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশে খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসেবে এ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু করা ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শিতার প্রমাণ। বঙ্গবন্ধু খুলনা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হিসেবে যে স্বপ্নের বীজ বপন করেছিলেন, তা আজকের কুয়েট’। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কুয়েটের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন এবং শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ২০১৯ উদ্যাপন কমিটির সভাপতি ও ইইই অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মহিউদ্দিন আহমাদ। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, আমন্ত্রিত অতিথিসহ বিভিন্ন হলের শিক্ষার্র্থীদের অংশগ্রহণে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রা শেষে স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রজেক্ট ও পোস্টার প্রদর্শনী, কুয়েটের অর্জন : অতীত, বর্তমান ও ভাবষ্যত শীর্ষক প্রেজেন্টেশন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন বিশ^বিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের গবেষণায় আরও মনোনিবেশ করতে হবে, তবেই কুয়েট বিশে^র শীর্ষস্থানীয় বিশ^বিদ্যালয়ের তালিকায় স্থান করে নিতে পারবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে তাঁর আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ করতে হবে।’ এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদ্যাপন কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. মহিউদ্দিন আহমাদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. কাজী হামিদুল বারী, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, পরিচালক (ছাত্র কল্যাণ) প্রফেসর ড. শিবেন্দ্র শেখর শিকদার এবং রেজিস্ট্রার জি এম শহিদুল আলম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পাবলিক রিলেশনস অফিসার মনোজ কুমার মজুমদার এবং আর্কিটেকচার বিভাগের প্রভাষক মুনতাহা মার্জান সেতু।
×