ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পর্যটকরাও সুবিধা পাবেন

সৌদি আরব হজ ও ওমরাহ ভিসা ফি কমিয়েছে

প্রকাশিত: ১১:১৪, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯

সৌদি আরব হজ ও ওমরাহ ভিসা ফি কমিয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সৌদি সরকার হজ এবং ওমরাহ যাত্রীর ভিসা ফি কমিয়েছে। পাশাপাশি দেশটিতে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদেরও এ সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ৩ কোটি হজ এবং ওমরাহ যাত্রীকে গ্রহণ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সৌদি আরব। এই সিদ্ধান্তের ফলে সৌদি আরবের ভিশন-২০৩০’র অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি লক্ষ্য পূরণ সম্ভব হবে বলে দেশটির নীতি নির্ধারকরা জানিয়েছেন। বুধবার সৌদি মন্ত্রিসভার গৃহীত নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হজ এবং ওমরাহ যাত্রীর ভিসার ফি দুই হাজার সৌদি রিয়াল থেকে কমিয়ে মাত্র ৩০০ রিয়াল নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে একাধিকবার ওমরাহ পালনের জন্য ভিসা ফিও বাতিল করেছে সৌদি সরকার। মন্ত্রিপরিষদের নেয়া সিদ্ধান্তে ভিসার ধরন ও মেয়াদকাল নিয়ে একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আগের আইনে দেশটিতে ওমরাহ পালনের জন্য যাত্রীদের ভিসা ফি বাবদ টানা তিন বছর ২ হাজার সৌদি রিয়াল দিতে হতো। নতুন এই আইনের ফলে সেটি আর থাকছে না। মন্ত্রিপরিষদের ভিসা ব্যবস্থা পুনর্গঠনের বিষয়ে রাজকীয় ফরমান জারি করায় দেশটির হজ এবং ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ সালেহ বিন তাহের বেনতেন সৌদি বাদশাহ সালমান ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ’র সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, হজ ও ওমরাহ পালনে মুসলমানদের আগমনকে আরও সহজ করতে সৌদির বিচক্ষণ নেতৃত্বের আগ্রহে রাজকীয় ডিক্রীটি জারি হয়েছে। মোহাম্মদ বেনতেন বলেন, এই আইনের মাধ্যমে সৌদিতে ক্রমবর্ধমান হজ এবং ওমরাহ যাত্রীদের গ্রহণ সক্ষমতার প্রস্তুতির বিষয়টি উঠে এসেছে। পবিত্র স্থাপনাগুলোতে এবং মক্কা ও মদিনায় সেবা ব্যবস্থাপনা ও বিশাল অবকাঠামো প্রকল্প উন্নয়নের মাধ্যমে এই প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। জানা গেছে, সর্বশেষ বৈঠকে পেট্রো ডলারের এই দেশটি সব ধরনের ভিসা ফি কমানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সৌদি গেজেটের তথ্য মতে, সৌদি আরব দেশটিতে যে কোন ধরনের ভিসা ফি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্ভাব্য ভিসা ফির একটি তালিকাও প্রণয়ন করেছে দেশটি। আর তাতেই উঠে এসেছে ভিসার ফি, ভিসার মেয়াদ, অবস্থানের মেয়াদসহ বিভিন্ন বিষয়। অন্য দেশের কোন নাগরিক একবার ওমরাহ পালন করলে পরবর্তী ৩ বছর স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ওমরাহ করা সম্ভব ছিল না। যদি কেউ এ সময়ের মধ্যে ওমরাহ করতেন তাকে ২০০০ সৌদি রিয়াল জরিমানা দেয়া সাপেক্ষে ভিসা নিতে হতো। এ জরিমানা নেয়া থেকে ফিরে এসেছে দেশটি। ওমরাহ পালন, ভ্রমণ, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ ভ্রমণ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ক্ষেত্রও ভিজিট ভিসার আওতায় থাকবে। এ ভিসার জন্য ৩০০ রিয়াল ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ভিসায় রয়েছে ২ ধরনের সুযোগ। সিঙ্গেল এন্ট্রি, যার মেয়াদ ৩ মাস। এ ভিসায় দর্শনার্থী সৌদিতে ১ মাস অবস্থান করতে পারবে। আর মাল্টিপল এন্ট্রি, যার মেয়াদ ১ বছর। এ ভিসায় সৌদিতে অবস্থান করা যাবে ৩ মাস। শুধু হজ মৌসুমে মুসলমানদের ফরজ বিধান হজ পালনে এ ভিসা দেয়া হবে। এ ভিসার ফিও নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০০ রিয়াল। ট্রানজিট ভিসা ৩ দিন তথা ৯৬ ঘণ্টা অবস্থান করা যাবে দেশটিতে। এ ভিসায় আকাশপথ, নৌপথ ও স্থল ব্যবহার করতে পারবে ভ্রমণকারীরা। তবে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ কত তারিখ থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করবে সে বিষয়ে কোন তথ্য জানায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, চলতি মাস থেকেই নতুন ভিসা ফি কার্যকর হতে পারে। আর এতে বাংলাদেশীসহ সব দেশের নাগরিকই আগের চেয়ে কম খরচে সৌদি ভ্রমণ করতে পারবেন। উল্লেখ্য, ‘ভিশন টু জিরো থ্রি জিরো’ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এ পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলে সৌদি আরবের গণমাধ্যমে জানা গেছে। সৌদি কর্তৃপক্ষের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
×