স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাদকমুক্ত দেশ গড়তে শিশু-কিশোরদের খেলার মাঠে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। একই সঙ্গে কর্পোরেশন এলাকার ২৪ মাঠ ও পার্ক আগামী অক্টোবর থেকে জনগণের কাছে হস্তান্তর শুরু হবে বলে জানান মেয়র। শনিবার দুপুরে বনানী এক নম্বর সড়কে অবস্থিত খেলার মাঠের উন্নয়ন কাজ উদ্বোধন শেষে মেয়র আতিক এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের নাতি জায়ান চৌধুরীর নামে মাঠটির নাম দেয়া হয়েছে শহীদ জায়ান চৌধুরী খেলার মাঠ। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে মাঠটি সংস্কার করবে ঠিকাদার। চলতি বছরের ১ আগস্ট থেকে ২০২০ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত মেয়াদে মাঠটির উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে পাঁচ কোটি ১৯ লাখ ১৭ হাজার ১৭০ টাকা। অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ ড. তারিক বিন ইউসুফ, জায়ান চৌধুরীর বাবা মশিউল হক চৌধুরী, দাদা মতিনুল হক (এমএইচ) চৌধুরী, স্থানীয় কাউন্সিলর মফিজুর রহমান, স্থপতি ইকবাল হাবিব, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মফিজ উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মেয়র আতিক বলেন, ডিএনসিসি অন্তত ২৪ মাঠ-পার্কে ইতোমধ্যে উন্নয়ন কাজ শুরু করেছে। আগামী অক্টোবর থেকে একটি একটি করে মাঠ-পার্ক জনগণের জন্য খুলে দেয়া শুরু করব। আজ যে মাঠের উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করলাম, এর কাজ ২০২০ সালে মুজিববর্ষ শুরুর আগেই শেষ হবে। এলাকার সবাইকে নিয়ে মুজিববর্ষ শুরু হওয়ার আগেই মাঠটি উদ্বোধন করতে চাই। তিনি বলেন, এ মাঠের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সবাইকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এ মাঠে আধুনিক মানের ক্রিকেট পিচ থাকবে। ফুটবলের জন্য থাকবে আলাদা খেলার জায়গা। শিশুদের জন্য আলাদা পেইন্টিং জোন থাকবে। এখানে বয়স্কদের হাঁটার ব্যবস্থা থাকবে। পাবলিক টয়লেটসহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকবে। রাতে পর্যাপ্ত লাইটিং থাকবে, যাতে স্থানীয়রা কর্মস্থল থেকে ফিরে হাঁটতে পারেন। মেয়র বলেন, ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ডিএনসিসি এলাকায় দ্বিতীয় ধাপে মশক নিধনে চিরুনি অভিযান শুরু হবে। ডিএনসিসি এলাকায় এডিস নিয়ন্ত্রণে এ অভিযান আবার শুরু করা হচ্ছে। অভিযান সফল করতে তিনি স্থানীয় এমপিসহ সমাজের সকল স্তরের নাগরিকদের সহযোগিতা চান। তিনি বলেন, আগামী ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ফুটপাথ দখলমুক্ত অভিযানে স্থানীয় এমপিসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষের সহযোগিতা চাই।
অনুষ্ঠানে নাতি জায়ানকে স্মরণ করে শেখ সেলিম বলেন, এটি বেদনাদায়ক অনুষ্ঠান। এ মাঠে যে শিশুটি খেলত, তার নাম জায়ান চৌধুরী। নিষ্পাপ জায়ান শ্রীলঙ্কায় প্রতিহিংসার শিকার, তাকে ধর্মের নামে সাম্প্রদায়িকতার বাড়াবাড়িতে জীবন দিতে হয়েছে। সে কারো ক্ষতি করেনি। এ রকম আরও অনেক শিশু জীবন দিয়েছে। তাদের কেউ কেউ একদিন হয়তো দেশের ভবিষ্যত নেতা হতো। তিনি বলেন, শিশু হত্যা এটিই প্রথম নয়। ’৭৫ সালে শিশু রাসেলকে হত্যা করা হয়েছে, সুকান্ত বাবুকে হত্যা করা হয়েছে। যারা এ ধরনের হত্যাকা- ঘটায়, তারা মানবতার শত্রু, ধর্মের শত্রু। তারা ধর্ম মানে না, আল্লাহ মানে না। ভবিষ্যতে যেন আর কোন শিশুকে এভাবে জীবন দিতে না হয়, সেজন্য তিনি সবাইকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠান শেষে জায়ান চৌধুরীর জন্য দোয়া করা হয়। উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে শ্রীলঙ্কায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত শিশু জায়ান চৌধুরী এ মাঠেই খেলাধুলা করত, এখানেই তার বেড়ে ওঠা। তার স্মৃতি ধরে রাখতে জায়ান চৌধুরীর নামে মাঠটি নতুন করে সাজানো হবে।
