ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বে বিস্ময়

প্রকাশিত: ০৮:৪৮, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বিশ্বে বিস্ময়

অতীতের পশ্চাৎপদতা ও গ্লানি উজিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে গৌরবের পথে। একথা দেশের মানুষ ভোলেনি যে, বিএনপির দুই মেয়াদে সার নিয়ে অস্বাভাবিক দুর্নীতি হয়েছে। সারের দাবি জানালে ১৮ কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হয়। বর্তমানে সার ও বীজ বিতরণে মুনাফার লোভে কিছু কিছু অনিয়ম বা দুর্নীতি যে হচ্ছে না, তা নয়। তবে সারা দেশে স্বাভাবিকভাবেই সার ও বীজ বিতরণ করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় একজন সংসদ সদস্যের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন। ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন পৃথিবীতে বিস্ময়। চলতি বছরেই দেশের বিদ্যমান কৃষি ব্যবস্থার আধুনিক তথা যান্ত্রিকীকরণের জন্য তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার বিষয়টি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। বরং বলা যায়, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে এটি আরও একধাপ অগ্রগতি। বর্তমান সরকার দেশের সার্বিক ও সমন্বিত উন্নয়ন এবং অগ্রগতিতে বিশ্বাসী ও আন্তরিক। সে ক্ষেত্রে শুধু নগরায়ণ ও শিল্পায়ন করলেই চলবে না, বরং প্রচলিত ধারার আবহমান কৃষি ব্যবস্থার উন্নয়নও একান্তভাবে কাম্য এবং কাক্সিক্ষত। বর্তমানে শহর-নগর-বন্দরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গ্রামের উন্নয়নও সাধিত হচ্ছে। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। রাজধানীসহ প্রায় সর্বত্র সুউচ্চ দালানকোঠা ও মার্কেট নির্মাণ করতে গিয়ে অত্যধিক চাপ পড়ছে কৃষিজমিতে। সরকার অবশ্য সমস্যাটি সম্পর্কে সম্যক সচেতন। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং বলেছেন, গ্রামকে শহরায়ন করা হবে গ্রামের নিসর্গ প্রকৃতি ও সৌন্দর্য অক্ষুণœ রেখেই। শহরের সব নাগরিক সুবিধা পৌঁছে দেয়া হবে গ্রামেও। তাই বলে কেবল উন্নয়নের নামে কৃষিজমি অধিগ্রহণ করা যাবে না। মনে রাখতে হবে যে, কৃষিই হলো বাংলাদেশের জীবন-জীবিকা ও অর্থনীতির প্রাণশক্তি। কৃষিমন্ত্রী সংসদে আরও জানিয়েছেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর ৭ জানুয়ারি প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকেই তৎকালীন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী সারের দাম কমানোর এজেন্ডা এনেছিলেন। তখন সারের দাম কমানো হয়। বিএনপির আমলে ৭২ টাকার টিএসপি কমিয়ে ২২ টাকা, ৯০ টাকার ডিএসপি কমিয়ে ২৫ টাকা করা হয়। ৬০ টাকার পটাশ কমিয়ে ১৫ টাকা করা হয়। এখনও সেই ১৫ টাকায়ই বিক্রি হচ্ছে। বর্তমান সরকার সারের দাম বাড়ায়নি। গত কয়েক বছরে দেশে বিপ্লব ঘটে গেছে কৃষিতে। ডিজিটাল কৃষিসহ হাইব্রিড পদ্ধতি চালুর ফলে একেবারে বীজতলা থেকে শুরু করে সার, সেচ, কীটনাশক, আবহাওয়া, জলবায়ু, ফসল উৎপাদন, বাজার পরিস্থিতিসহ অন্যবিধ সমস্যা নিয়ে খোলামেলা মতবিনিময়, পরামর্শ ও প্রতিকারের সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে তাৎক্ষণিকভাবে। এর অনিবার্য ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে কৃষি ব্যবস্থাপনায়। সুফল পাচ্ছে কৃষক। সর্বোপরি বাড়ছে ফসল উৎপাদন। তার মানে ডিজিটাল কৃষি ব্যবস্থা দেশের কৃষিতে প্রায় বিপ্লব নিয়ে এসেছে। আবহমানকাল ধরে প্রচলিত গবাদিপশু চালিত লাঙল-জোয়ালের দিন শেষ হয়েছে অনেক আগেই। হাইব্রিড বীজ, জিএম বীজসহ আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি ফসল, শাকসবজি, মৎস্য, পোল্ট্রি, ফলফলাদির উৎপাদন বাড়িয়েছে বহুগুণ। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সর্বাধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি। বগুড়ার সান্তাহারে নির্মিত হয়েছে দেশের প্রথম সৌরশক্তি চালিত অত্যাধুনিক বহুতলবিশিষ্ট খাদ্যগুদাম। প্রতিবছর উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্যসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য আধুনিক খাদ্যগুদামের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কৃষির উন্নতি ধরে রাখতে কৃষকের স্বার্থই প্রধান বিবেচ্য। সেক্ষেত্রে কৃষকের জন্য সরকারের আরও কিছু করণীয় রয়েছে।
×