ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপিকে রাজনীতি করতে দেয়া হচ্ছে না

প্রকাশিত: ০৯:৪১, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

  বিএনপিকে রাজনীতি করতে দেয়া  হচ্ছে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপিকে রাজনীতি করতে দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ছাত্রদলের যে কাউন্সিল হওয়ার কথা ছিল সেটাতেও কোর্ট থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন। ড. মোশাররফ বলেন, আমরা জেলা উপজেলা পর্যায়ে দলকে সুসংগঠিত করছি। এজন্য যে কাউন্সিল করা দরকার সেই কাউন্সিল করতে অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। তাতে বাধা দিচ্ছে সরকার। তিনি বলেন, আজকে যারা ক্ষমতায় সেই আওয়ামী লীগ ১৯৭৫ সালে গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। কিন্তু জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে বাকশালের পরিবর্তে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। তা না হলে আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব থাকত না। ড. মোশাররফ বলেন, আওয়ামী লীগ এক তরফা নির্বাচন করার জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে জেলে নিয়ে রেখেছেন। খালেদা জিয়ার কথামতো আমরা নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সেই নির্বাচনে দেশের ৮০ ভাগ মানুষ ধানের শীষে ভোট দেয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। কিন্তু ২৯ ডিসেম্বর রাতেই জনগণের ভোট ডাকাতি হয়ে গেল। খন্দকার মোশাররফ বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রের পক্ষে। আর আওয়ামী লীগ বার বার প্রমাণ করেছে তারা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে না। আজকে দেশের প্রধান বিষয় হচ্ছে গণতন্ত্র। এই গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে না পারলে দেশের দূরাবস্থা থেকে আমরা পরিত্রাণ পাবো না। ড. মোশাররফ বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এ দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। তিনি স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্রের প্রতীক, তিনি ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’। কিন্তু এ সরকার তাকে হীন উদ্দেশে কারাগারে বন্দী করে রেখেছে। মহাসড়কে টোল আদায়ের বিষয়ে সরকারের সমালোচনা করে ড. মোশাররফ বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় টোল আদায় হয়, তবে সেইসব হাইওয়ে বিভিন্ন কোম্পানিকে দেয়া হয়। তারা তাদের টাকায় সেই হাইওয়ে নির্মাণ করে এবং টোল নিয়ে তারা তাদের মূলধন ও লাভ সংগ্রহ করে। কিন্তু আমাদের দেশের মহাসড়ক নির্মাণ করা হয়েছে জনগণের টাকায়। আর এসব মহাসড়কে গাড়ি চলার জন্য সকল প্রকার রোড ট্যাক্স দেয়া হয়। তাহলে আবার টোল কেন? খন্দকার মোশাররফ বলেন, লুটপাটের কারণে ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হতে বসেছে। সরকারের কাছে দেশ চালানোর মতো টাকা নেই। নানাভাবে ভ্যাট সম্প্রসারণ করে, জনগণের ওপর নানা রকম নির্যাতন করেও তারা রাজস্ব বৃদ্ধি করতে পারছে না। তারা নিজেদের লাভের জন্য বড় বড় প্রজেক্ট করে মেগা কমিশন নিয়ে এখন আটকে গেছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ চাইলে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। আর তাকে মুক্ত করতে হলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে রাজপথে আন্দোলন করতে হবে। খন্দকার মোশাররফ বলেন, জিয়াউর রহমান দেশে বাকশাল থেকে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন। আর খালেদা জিয়া স্বৈরাচারকে হটিয়ে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। এজন্যই আজকে যারা ক্ষমতায় তারা বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে নিয়ে ভীত। কারণ, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। গণতন্ত্রের কথা শুনলে আওয়ামী লীগের গায়ে জ্বালা উঠে। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচীতে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ। ছাত্রদলের কাউন্সিলে নিষেধাজ্ঞা সরকারের মাস্টারপ্ল্যান-রিজভী : ছাত্রদলের কাউন্সিল নিয়ে আদালত যে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন তা অযৌক্তিক এবং সরকারের মাস্টারপ্ল্যান বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র-যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ অভিযোগ করেন। রিজভী বলেন, কোন বিচার বিশ্লেষণ ও যুক্তিতর্ক ছাড়া ছাত্রদলের কাউন্সিল স্থগিতের আদেশ সরকারের কারসাজিতেই প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ধরেই এ দেশে বারবার গণতন্ত্রকে সমাধিস্থ করা হয়েছে। ছাত্রদলের কাউন্সিল স্থগিতের ঘটনা আওয়ামী সরকারের প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতির আরেকটি অধ্যায় হয়ে থাকবে। এবার রাখঢাক করে নয়, প্রকাশ্যেই আওয়ামী সরকার আদালতকে দিয়ে তাদের প্রতিহিংসামূলক রাজনীতির চরিত্রটি উন্মোচিত করল। কাউন্সিলে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে ছাত্রদলের বিক্ষোভ ॥ ছাত্রদলের কাউন্সিলে আদালতের নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ জন্য সরকার দায়ী বলে তারা অভিযোগ করেছে। শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তারা এ বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা আব্বাস আলী, শফিকুল ইসলাম শফিক, রতন, রুবেল, মোঃ মাহমুদুল হাসান সবুজ, তুহিন সরকার, আল আমীন, মশিউর রহমান মহান, আরিফ সরকার প্রমুখ।
×