স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ জিনে আসর করেছে আখ্যা দিয়ে উজিরপুর উপজেলার হাবিবপুর বাজার সংলগ্ন এলাকার কেশবকাঠী গ্রামের ১৪ বছর বয়সের ধর্ষিত এক কিশোরীকে শিকলবন্দী করে রেখেছে তার পরিবারের সদস্যরা। শুক্রবার দুপুরে নিজবাড়িতে শিকলবন্দী অবস্থায় ওই কিশোরী স্থানীয় সংবাদকর্মীদের জানায়, তাকে নাকি জিনে আসর করেছে এজন্য তার বাবা-মা তাকে শিকলবন্দী করে রাখে। মঙ্গলবার বিকেলে পরিবারের অজান্তে সে (কিশোরী) শিকলের তালা খুলে বাড়ি থেকে বের হয়। একইদিন সন্ধ্যায় জামবাড়ী-মশাং সড়কের নির্জনস্থানে নিয়ে তাকে জোরপূর্বক এক ভ্যানচালক ধর্ষণ করে। স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মঙ্গলবার রাতে কেশবকাঠী এলাকার বাসিন্দা গিয়াস মৃধা ও কবির মৃধা জামবাড়ী-মশাং সড়কের নির্জনস্থান থেকে একই এলাকার রবি শাহারুর পুত্র এক সন্তানের জনক ভ্যানচালক সঞ্জিত শাহারু ও কিশোরীকে একত্রে দেখে তাকে খবর দেয়। পরে তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে কিশোরীসহ ভ্যানচালক সঞ্জিতকে উদ্ধার করে হাবিবপুর কলেজ মাঠে নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে উভয়কে থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার জন্য গিয়াস ও কবিরকে অনুরোধ করেন। এরইমধ্যে স্থানীয় ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলামের পুত্র রাসেল হোসেন ঘটনাস্থলে এসে সঞ্জিতকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেয় এবং ওই কিশোরীকে গিয়াস ও কবির মৃধার জিম্মায় রাখে।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় বুধবার রাতে হাবিবপুর বাজারে বসে ওই কিশোরীর পরিবারকে না ডেকে কিংবা ওই কিশোরীর কোন বক্তব্য না শুনেই স্থানীয় ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম, শাজাহান হাওলাদার, গিয়াস মৃধা, কবির মৃধা ও জুয়েল মৃধা কথিত বৈঠকের মাধ্যমে সঞ্জিতকে তিন হাজার টাকা জরিমানা করে।
ধর্ষিতা ওই কিশোরীর পিতা জানান, কথিত সালিশে জরিমানা করার কথা তিনি শুনেছেন। তবে সালিশে তাদের ডাকা হয়নি। তিনি আরও জানান, তার কন্যার ওপর মাঝে মধ্যেই বদ জিন আসর করে। যার ফলে প্রায়ই তাকে শিকলবন্দী করে রাখা হয়। সালিশকারী কবির মৃধা ও জুয়েল মৃধা জানান, তারা কেউই সালিশিতে ছিলেন না বরং মোস্তাফিজুর নিজেই সালিশে ছিলেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: