ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিদ্যুতের মডেল শহর হচ্ছে বরিশাল, খুলনা ও যশোর

প্রকাশিত: ০৮:৫১, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 বিদ্যুতের মডেল শহর হচ্ছে বরিশাল, খুলনা ও যশোর

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ বিশ্বের উন্নত শহরগুলোর আদলে বিদ্যুতের মডেল শহর হিসেবে প্রাথমিকভাবে বরিশাল, খুলনা ও যশোরকে গড়ে তোলার জন্য ‘আন্ডারগ্রাউন্ড প্রজেক্ট ইন ওয়েস্টজোন এরিয়া’ প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। এ প্রকল্পের মাধ্যমে মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুতের লাইন স্থাপনের জন্য বরিশালে সার্ভে কাজ শুরু করা হয়েছে। ওজোপাডিকোর কর্মকর্তারা জনকণ্ঠকে জানান, ঈদ-উল আজহার পর থেকেই বরিশালে সার্ভের কাজ শুরু করা হয়েছে। সূত্রমতে, সম্প্রতি টাটা পাওয়ার দিল্লী ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডকে কনসালটেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যারা ইতোমধ্যে মাঠপর্যায়ে সার্ভের কাজ শুরু করেছে। পরবর্তীতে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডির কাজ করা হবে। ফিজিবিলিটি স্ট্যাডির মাধ্যমে প্রকল্পটি দীর্ঘস্থায়ী হবে কি না, মাটির কন্ডিশন, প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণসহ নানা বিষয় তুলে ধরে ওজোপাডিকোর কাছে প্রতিবেদন সাবমিট করবে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান। ওজোপাডিকোর বরিশালের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ ইখতিয়ার উদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেন, ইঞ্জিনিয়ারিং যে কোন কাজ করতে হলে প্রাথমিকভাবে তিনটি কাজ করতে হয়। প্রথমে সার্ভে ও ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি করার পরেই অর্থায়ন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ শুরু করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে বরিশাল নগরীতে সার্ভে ওয়ার্ক চলছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্ব-ইচ্ছায় এর কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এ যুগান্তকারী পদক্ষেপকে খুব গুরুত্ব সহকারে দেখছে বিদ্যুত বিভাগ। তিনি আরও বলেন, প্রথম পর্যায়ে বরিশাল, খুলনা ও যশোরে মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুতের লাইন নির্মাণ হওয়ার কথা থাকলেও পর্যায়ক্রমে সব জায়গাতেই কাজ হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুত মন্ত্রণালয়। তবে প্রথমে উল্লেখিত তিন জেলায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ ইখতিয়ার উদ্দিনের মতে, আন্ডারগ্রাউন্ডের মাধ্যমে বিদ্যুতের লাইন স্থাপনের লাভ হচ্ছে, সার্ভিসটা নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন হবে। বর্তমান যে সিস্টেম আছে সেখানে বিদ্যুতের তার আমাদের মাথার ওপর দিয়ে রয়েছে। আবার অনেকস্থানেই খোলা (ন্যাকেট) তার রয়েছে। যা সামান্য বাতাস, গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়লে কিংবা পাখি বসলেই লাইন ফল্ট করে। যখন আন্ডারগ্রাউন্ড বা মাটির নিচে বিদ্যুতের লাইন চলে যাবে তখন এ সমস্যাগুলো থাকবে না। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত দেয়া অনেক সহজ হবে। তিনি বলেন, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকার মাটির নীচে ড্রেনেজ ব্যবস্থা, পানির লাইন থাকায় ইতোমধ্যে আমরা বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে সাক্ষাত করে কথা বলেছি। তিনি বলেন, বরিশালে মাটির নীচে আন্ডারগ্রাউন্ডে টেলিফোনের ক্যাবল থাকায় আমরা বিটিসিএল-এর সঙ্গেও কথা বলেছি। কারণ এ কাজটি সকলের সঙ্গে সমন্বয় করে করা হবে। যাতে বারবার খোঁড়াখুঁড়ি করতে না হয়। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা বেলায়েত হাসান বাবলু জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা সৌভাগ্যবান যে প্রধানমন্ত্রী এমন একটা উদ্যোগে বরিশালকে প্রথম পর্যায়ে রেখেছেন। সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের সঙ্গে ইতোমধ্যে বিদ্যুত বিভাগের কর্মকর্তারা সাক্ষাত করে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছেন। আধুনিক এ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে নগরীর সকল সেবা সংস্থার মধ্যে সমন্বয় সাধন জরুরী বলে মনে করেন মেয়র। যাতে সুষ্ঠু কর্মপরিকল্পনার মধ্য দিয়ে কাজটিকে নির্ধারিত সময় ও ব্যয়ের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে নেয়া যায়। সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী ওমর ফারুক জনকণ্ঠকে বলেন, আমাদের দেশে বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বারবার দেখা দেয়। মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুতের লাইন স্থাপন করা হলে বিদ্যুত ব্যবস্থা সুরক্ষিত থাকবে।
×