সময়ের কালপ্রবাহে দিনে দিনে ফ্যাশনের অবয়বে বাঙালীয়ানাকে যে প্রস্ফুটিত হতে দেখা যাচ্ছে তাকে দ্বিধাহীনভাবে কাব্যময় বলা চলে। চলছে শরৎকাল ফ্যাশন ধারায় চলছে এই শিল্প মাধ্যমটিকে নিখুঁত পরিচর্যার মধ্য দিয়ে কিভাবে আরও দেশজ এবং লোকজতার স্পর্শে হৃদ্য করা যায় তারই পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
প্রকৃতির অমিয় সুধায় সিক্ত বাংলার প্রতিটি স্পন্দনে যে রূপময় গাঢ় ঐশ্বর্যে স্পন্দিত হয় সেখানে যেন গুঞ্জরিত হয় বাংলারই আদি কণ্ঠস্বর। আর সেই স্বরের মাধুর্যে আপ্লুত হয়ে পড়ে বাঙালীর শিল্পী মন। যে মনের গহীনে প্রতিনিয়ত সৃষ্টির নেশা ঝর্ণার পানির মতো কল্লোলিত হয়।
আর তারই প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায় চলমান ফ্যাশন জগতের সর্বত্র। ফ্যাশনের বিষয়টা আপেক্ষিক হলেও যুগে যুগে সময়কে ধারণ করেই ফ্যাশন দুনিয়া হয়ে উঠেছে গভীর ব্যঞ্চনাময়। সমকালীন ফ্যাশন ধারায় বাঙালীর ফ্যাশন চেতনা এতটাই পরিশীলিত যার ছাপ পাওয়া যায় দৈনন্দিন জীবন প্রবাহে।
ধর্মীয় উৎসবসহ ঋতুভিত্তিক কিংবা বিশিষ্ট ব্যক্তিকে উপজীব্য করে এখন যে ফ্যাশনবোধ পোশাকে উদ্ভাসিত হচ্ছেÑএই উদ্ভাসনের গহীনে অকৃত্রিম বাঙালিত্বের প্রভাবটাই বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়। দেশীয় ফেব্রিকে তৈরি পোশাকের প্রতি যে সবার বিপুল আগ্রহ এটাও কিন্তু এক বিশাল অর্জন। এই অর্জনের চিত্রটা এখন এতটাই গতিশীল যা উপলব্ধি করার জন্য খুব ভাবতে হয় না। আর এটা সম্ভব হয়েছে ফ্যাশন ট্রেন্ডের নিবেদিতপ্রাণ উদ্যোক্তা, ডিজাইনার, সুন্দর বিপণন পদ্ধতি, সাবলীল প্রচার ভাবনার সুবাদে। সারা বাংলায় বিস্তৃত আজ এই ফ্যাশন বোধ।
নগর জীবনের সীমা ছাড়িয়ে বাংলার সর্বত্রই পৌঁছে গেছে ফ্যাশনের ্এই সুবাতাস।
চলছে এখন শরৎকাল। শরতের সব কিছুতেই একটা কোমল, কাশফুলের মতো পেলব আমেজ বিরাজমান। আকাশে খ- খ- মেঘ, থেমে থেমে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি, আর্দ্র হাওয়া আবার তাতানো রৌদ্রোজ্জ্বলতা, রাতের মধ্যভাগ থেকে মৃদু হিম অনুভূতির ছোঁয়া শরৎকে দিয়েছে এক ভিন্ন বিশিষ্টতা। শরতের এই বহুবিধ প্রাকৃতিক রূপ বদলের আবেশ দৈনন্দিন জীবনকেও ঘিরে রেখেছে। চলছে আশ্বিনের প্রহর। শরতের শেষ লগ্ন। শরতের পরেই প্রকৃতির কণ্ঠ পরবে হেমন্তের মণিহার। জ্বলজ্বলে সেই হেমন্তের ক্যানভাসকে রাঙিয়ে দেয়ার আগে নির্জন নিরিবিলি আহব বুকে ধারণ করে শরৎ যেন শিল্পীর মতোই নিজের মর্মে এক শৈল্পিক কারুকাজে সাজবে নতুন প্রতিকৃতি। যার সঙ্গে সমান্তরাল ধারায় নদীর মতো জীবনের নানা অনুষঙ্গও একটা আলাদা মাত্রা নিয়ে বয়ে যাবে। ফ্যাশন ভুবন ইতোমধ্যে শরতের পুরো আমেজকে পোশাকে উন্মীলিত করেছে প্রতিবছরের মতো। এবং প্রতিবারই পাল্টে যায় ফ্যাশন ভাবনাগুলো। পুনরাবৃত্তিকে এড়িয়ে পোশাকে ফুটে ওঠে অভিনবত্বের ছবি। যে ছবিটা সেই কবে থেকে প্রতিটি ঋতুতেই বদলে বদলে যায়।
গত শরতে যে ড্রেসটি যে ডিজাইনে আউটলেটের ডিসপ্লেতে উজ্জ্বলতা নিয়ে দৃষ্টি মেলে ধরেছিল। চলতি শরতে সেই স্থানটিতে জায়গা করে নিয়েছে ভিন্ন ডিজনাইন, ভিন্ন আঙ্গিকের শরৎকালীন অন্যরকম একটি ড্রেস।
নতুন কবিতার মতোই যেন একেকটি পোশাক প্রতিঋতুতে নতুন বোধ, নতুন ভাবনা, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি, নতুন আঙ্গিকে আবর্তিত হয়ে সম্মুখে আসে। ছন্দময়, মেলোডিয়াস সঙ্গীতের মতোই একেকটি ড্রেস ফ্যাশনসচেতন নারী ও পুরুষের মনকে আকৃষ্ট করে। তারুণ্যকে বিমোহিত করে।
ছবি : বিএম সাবাব
মডেল : অমরেশ ও সোহানি তিথি
পোশাক : সাবাব বাজার
মেকআপ : ওমেন্স ডল
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: