ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিয়াঙ্কার স্বপ্ন আরও সুদূরপ্রসারী

প্রকাশিত: ১২:০২, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বিয়াঙ্কার স্বপ্ন আরও সুদূরপ্রসারী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ স্বপ্নের মতো একটা বছর পার করছেন বিয়াঙ্কা আন্দ্রেস্কু। ১৯ বছর বয়সেই টেনিস দুনিয়া কাঁপাচ্ছেন এই কানাডিয়ান। বিএনপি পরিবাস, রজার্স কাপের পর সর্বশেষ ইউএস ওপেনের চ্যাম্পিয়ন। ধারাবাহিক পারফর্মেন্সের সৌজন্যে বিশ্ব টেনিসের পাদপ্রদীপের আলোয় উঠে এসেছেন তিনি। অগ্রগতি হয়েছে র‌্যাঙ্কিংয়েও। এই মুহূর্তে ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ পঞ্চম স্থানে অবস্থান করছেন বিয়াঙ্কা আন্দ্রেস্কু। কানাডিয়ান টেনিসের প্রতিভাবান এই খেলোয়াড়ের স্বপ্ন অবশ্য আরও বড়। নিজেকে খুব অল্পে গুটিয়ে রাখতে নারাজ বিয়াঙ্কা। জানালেন তার প্রত্যাশার পারদটা আরও বিশাল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নিজেকে নিয়ে আমার প্রত্যাশার ব্যাপ্তিটা আরও বড়।’ মূলত এ বছরের পারফর্মেন্সই এমন আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে তাকে। কেননা গত বছরটাও শেষ করেছিলেন র‌্যাঙ্কিংয়ের ১৭৮ নম্বরে থেকে। অথচ এখন শীর্ষ পাঁচ। অবিশ্বাস্য না বললেই নয়। শুধু ইনজুরির কারণে প্রত্যাহার করা ম্যাচগুলো ছেড়ে দিলে গত ২৪ ম্যাচে টানা জয় তুলে নিয়েছেন এই কানাডিয়ান। মার্চের ১ তারিখের পর থেকে আর কোন ম্যাচে হার দেখেননি তিনি। বর্তমানে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ১০ খেলোয়াড়ের বিপক্ষে তার জয়-হারের পরিসংখ্যান ৮-০। শীর্ষ দশে থাকা ৮ জন খেলোয়াড়ের বিপক্ষে মুখোমুখি লড়াইয়ে জয়ের স্বাদ পেয়েছেন বিয়াঙ্কা আন্দ্রেস্কু। গত আগস্টে রজার্স কাপের ফাইনালে সেরেনা উইলিয়ামসের বিপক্ষে জয় পান আন্দ্রেস্কু। সেটা জিতেই নতুন ইতিহাস গড়েছিলেন তিনি। ৫০ বছরের ইতিহাসে কানাডার প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে জাতীয় এই ট্রফি জয়ের স্বাদ পান বিয়াঙ্কা। এরপর গত শনিবার অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া ইউএস ওপেনের ফাইনালের গল্পটা এখন সবার মুখে মুখে। গত দুই দশক ধরে টেনিস কোর্টে দাপট দেখাচ্ছেন সেরেনা। ইউএস ওপেনের এবারের আসরের শুরু থেকেও আমেরিকান তারকা ছিলেন দুর্দান্ত। শুরুটা করেছিলেন মারিয়া শারাপোভাকে হারিয়ে। পুরো টুর্নামেন্টে নজরকাড়া পারফর্ম করেই ফাইনালে জায়গা করে নেন ২৩ গ্র্যান্ডস্লামের মালিক। আর মাত্র একটি মেজর শিরোপা জিতলেই কিংবদন্তি মার্গারেট কোর্টের রেকর্ডে ভাগ বসাবেন তিনি। অথচ ফ্ল্যাশিং মিডোতে সেই সেরেনাকেই সরাসরি সেটে হারিয়ে দিলেন আন্দ্রেস্কু। সেই সঙ্গে প্রথম কানাডিয়ান হিসেবে ইউএস ওপেন জয়। অসামান্য এই কীর্তি গড়ার পর বুধবার দেশে ফিরেছেন আন্দ্রেস্কু। এই সময়টা নিজের পরিবার আর বন্ধু-বান্ধবীদের সঙ্গেই কাটানোর কথা জানিয়েছেন তিনি। আন্দ্রেস্কু বলেছেন, ‘অবশ্যই আমি আমার কিছু বন্ধুদের সঙ্গে এটা উপভোগ করব। তবে উদযাপনের মাত্রাটা কমিয়ে দিব। কারণ সামনে যা আসছে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে চাই আমি।’ অর্থাৎ এ মৌসুমের আর মাত্র দুই মাস বাকি। বছরের শেষ সময়টাকেও কাজে লাগাতে চান তিনি। বিশেষ করে এশিয়া সফরটাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন আন্দ্রেস্কু। এরপর চোখ মৌসুমের শেষ বড় টুর্নামেন্ট ডব্লিউটিএ ফাইনালসে। যেখানে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ সারির খেলোয়াড়রা অংশ নিয়ে থাকেন। এ প্রসঙ্গে আন্দ্রেস্কুর ভাষ্য, ‘এই মুহূর্তে আমার একটা পরিকল্পনা রয়েছে। এশিয়াতে অনুষ্ঠিত পরের কয়েকটি টুর্নামেন্টে ভাল করতে চাই আমি। আশাকরি ডব্লিউটিএ ফাইনালসের জন্য নিজেকে যোগ্য প্রমাণ করতে পারব। পাশাপাশি বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ তিনে জায়গা করে নিতে চাই।’ তবে আন্দ্রেস্কুর মূলমন্ত্র সুস্থ থাকা। কেননা ছোট এই ক্যারিয়ারেই যে বড় একটা ধাক্কা দিয়ে গেছে তাকে ইনজুরি। তাই এখন বেশ সতর্ক কানাডিয়ান তারকা। তিনি বলেন, ‘যদি আমি সুস্থ থাকি তাহলে মনে করি এই খেলায় আরও বড় কিছু অর্জন করতে পারব। আমি মনে করি একজন খেলোয়াড়ের বড় শত্রু ইনজুরি। যে কারণে এই মুহূর্তে আমার মূল লক্ষ্য সুস্থ-সবল থাকা। কেননা আমার ছোট্ট ক্যারিয়ারেই ইনজুরির দেখা পেয়েছি আমি।’ আগামী বছর জাপানে অনুষ্ঠিত হবে ২০২০ অলিম্পিক। টোকিও অলিম্পিকেও চোখ রাখছেন আন্দ্রেস্কু। তিনি বলেন, ‘অলিম্পিকে খেলারও স্বপ্ন দেখছি আমি। কেননা আমি মনে করি ক্রীড়াজগতে এটা বিশেষ একটা ইভেন্ট।’ এর আগে বিশ্ব টেনিসে ঝলমলিয়ে উঠেছিলেন আরেক কানাডিয়ান ইউজেনি বাউচার্ড। কিন্তু পারফর্মেন্সের সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি তিনি। যে কারণে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নিজেকে হারিয়ে ফেলেছেন বাউচার্ড। তবে আন্দ্রেস্কু কতদূর যাবেন? টেনিসপ্রেমীদের অপেক্ষা এখন সেটাই দেখার।
×