ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সাকিবের সামনে দুই মাইলফলক

প্রকাশিত: ১২:০০, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

সাকিবের সামনে দুই মাইলফলক

মোঃ মামুন রশীদ ॥ ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজে নামার আগে দু’টি মাইলফলক হাতছানি দিচ্ছে বিশ্বের দুই নম্বর অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে। বাংলাদেশ দলের টি২০ অধিনায়ক এই মুহূর্তে ৭২ ম্যাচে ৮৮ উইকেট নিয়ে এই ফরমেটের ক্রিকেটে তৃতীয় অবস্থানে আছেন বোলারদের মধ্যে। ত্রিদেশীয় সিরিজে জিম্বাবুইয়ে ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ফাইনালের আগেই ৪টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন বাঁহাতি সাকিব। বাংলাদেশ দল ফাইনালে উঠতে পারলে আরেকটি বাড়তি ম্যাচও পাবেন তিনি। আর ১২ উইকেট নিতে পারলেই শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গার পর বিশ্বের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে সাকিব ১০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করবেন, ছাড়িয়ে যাবেন সাবেক পাকিস্তানী অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদির ৯৮ উইকেটের রেকর্ডকে। আর ব্যাট হাতে ৮৬ রান করতে পারলে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বাধিক টি২০ রানের মালিকও হয়ে যাবেন সাকিব। তবে আন্তর্জাতিক টি২০ ক্রিকেটে তামিম ইকবালের রান ১৬১৩ (বিশ্ব একাদশের হয়ে ৪ ম্যাচে ৫৭ রান)। সেদিক থেকে আরও ১৪৩ রান প্রয়োজন হবে সাকিবের। অপরদিকে বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান দ্বিতীয় বাংলাদেশী হিসেবে টি২০ ক্রিকেটে ৫০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে আছেন। তার প্রয়োজন মাত্র ২ উইকেট। গত ডিসেম্বরে সর্বশেষ টি২০ সিরিজ খেলেছিল বাংলাদেশ দল। সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দেশের মাটিতে ৩ ম্যাচের সেই সিরিজে সাকিব ৮ উইকেট শিকার করেছিলেন। তবে গত বছরজুড়েই ইনজুরির কারণে নিয়মিত খেলতে পারেননি তিনি। তাই আইসিসির অলরাউন্ডার র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান থেকে ছিটকে যান সাকিব। তবে এবার দেশের মাটিতে দলকে ত্রিদেশীয় সিরিজে নেতৃত্ব দেবেন বর্তমানে অলরাউন্ডার র‌্যাঙ্কিংয়ের দুইয়ে থাকা এ বাঁহাতি। ইতোমধ্যে তিনি দেশের হয়ে ৭২টি টি২০ ম্যাচ খেলেছেন। এই ম্যাচগুলো থেকে সাকিব ২৩.৩৪ গড়ে ১৪৭১ রান করেছেন ব্যাট হাতে। আর বল হাতে নিয়েছেন ৮৮ উইকেট। দেশের পক্ষে সর্বাধিক উইকেটের মালিক হলেও ব্যাটিংয়ে তার ওপরে ওপেনার তামিম। বাঁহাতি এ ওপেনার অবশ্য এবার ত্রিদেশীয় সিরিজে খেলছেন না। আর সাকিবের তাই সুযোগ হয়েছে তামিমকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। তামিম ৭৫টি টি২০ ম্যাচে ৬ ফিফটি ও ১ সেঞ্চুরিসহ ২৩.০৪ গড়ে করেছেন ১৬১৩ রান। সেদিক থেকে আন্তর্জাতিক টি২০ ম্যাচে তামিমকে পেছনে ফেলতে এ সিরিজে সাকিবকে করতে হবে আরও ১৪৩ রান। তবে শুধু বাংলাদেশের জার্সিতেই সাকিব এই রানগুলো করেছেন। আর তামিম ৪টি ম্যাচ বিশ্ব একাদশের হয়ে খেলেছেন এবং ৫৭ রান করেছেন। অর্থাৎ বাংলাদেশের জার্সিতে তামিমের রান ৭১ ম্যাচে ১৫৫৬। সেদিক থেকে তামিমকে ছাড়িয়ে যেতে সাকিবের আর প্রয়োজন মাত্র ৮৬ রান। বোলার হিসেবে সাকিবের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বাংলাদেশের কেউ নেই। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজের সংগ্রহে আছে ৩০ ম্যাচে ৪৮ উইকেট। আর মাত্র দুই উইকেট নিতে পারলেই তিনি টি২০ ক্রিকেটে ৫০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করা দ্বিতীয় বাংলাদেশী বোলার হবেন। আর বিশ্বের ২৭তম বোলার হিসেবে তিনি এই কৃতিত্ব দেখাবেন। এ ফরমেটে বরাবরই দুর্দান্ত মুস্তাফিজের জন্য এ সিরিজে মাইলফলকটি স্পর্শ করা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। তিনি বাংলাদেশের বোলিং বিভাগের অন্যতম স্তম্ভ। সেদিক থেকে ত্রিদেশীয় এ সিরিজে মুস্তাফিজ যদি ১০ উইকেটও নিতে পারেন উঠে যাবেন একলাফে ১৫ নম্বরে। তার পেছনে পড়ে যাবেন ভারতের জাসপ্রিত বুমরাহ (৫১), শ্রীলঙ্কার থিসারা পেরেরা (৫১), ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডোয়াইন ব্রাভো (৫২), সুনীল নারাইন (৫২), পাকিস্তানের মোহাম্মদ হাফিজ (৫৪) ও মোহাম্মদ আমির (৫৫) এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের সুনীল বদ্রি (৫৬)। তবে মুস্তাফিজের চেয়ে অনেক এগিয়ে সাকিব ৮৮ উইকেট নিয়ে। তার ওপরে এখন শুধু সাবেক পাক অলরাউন্ডার আফ্রিদি ও শ্রীলঙ্কার মালিঙ্গা। আফ্রিদির উইকেট ৯৯ ম্যাচে ৯৮ আর মালিঙ্গার ৭৬ ম্যাচে ১০৪। টি২০ ইতিহাসে বিশ্বের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে ১০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁতে মাত্র ১২ উইকেট দরকার সাকিবের। আফ্রিদিকে পেছনে ফেলতে প্রয়োজন মাত্র ১১ উইকেটর। আর যদি ১৭ উইকেট নিতে পারেন তবে মালিঙ্গাকে পেছনে ফেলে হয়ে যাবেন টি২০ ইতিহাসে সর্বাধিক উইকেটের মালিক। মাইলফলকগুলো স্পর্শ করা বেশ কঠিনসাধ্যই। তবে ৪টি কিংবা ৫টি ম্যাচে সুযোগ পাবেন সাকিব। বাংলাদেশের অন্যতম বোলিং স্তম্ভ এবং টি২০ ক্রিকেটে সাফল্যের ধারাবাহিকতা থাকায় হয়তো মাইলফলকটা ছুঁতে দেখা যাবেই তাকে।
×