ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পরিকল্পনা জানিয়ে ছুটিতে গেলেন ফুটবল কোচ জেমি ডে

প্রকাশিত: ১১:৫৯, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

পরিকল্পনা জানিয়ে ছুটিতে গেলেন ফুটবল কোচ জেমি ডে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ তাজিকিস্তানের দুশানবেতে ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের গ্রুপ ম্যাচ খেলে বুধবার রাতে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। সেখানে তারা আফগানিস্তানের কাছে ১-০ গোলে হেরে যায়। বৃহস্পতিবার বাফুফে ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্রীড়া সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বাংলাদেশ দলের ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে। তিনি আফগানিস্তান ম্যাচ, পরবর্তী ম্যাচ, পরিকল্পনা, লক্ষ্য ইত্যাদি নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তান ভাল খেলেছে। তবে গোল হজমের পর থেকে আমরা ফাইটব্যাক করার চেষ্টা করি। দ্বিতীয়ার্ধে বেশি ভাল খেলি। ২/১টি গোল করার সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো কাজে লাগাতে পারিনি।’ ইনজুরি টাইমে একটি পেনাল্টি পেতে পারতো লাল-সবুজরা। কিন্তু দুঃখজনকভাবে চাইনিজ রেফারি তা দেননি বলে অভিযোগ করেন জেমি। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যে গোলটি খেয়েছি তা ছিল ব্যাডলাক। গোলকিপার রানা চেষ্টা করেছিল বলটি ফিস্ট করতে। কিন্তু ঠিকমতো করতে পারেনি।’ বাংলাদেশ দলের অর্ধেক খেলোয়াড়ই যুব দল থেকে নেয়া। তাদের পরের ম্যাচ কাতারের বিরুদ্ধে, আগামী ১০ অক্টোবর ঢাকায়। কাতার আফগানিস্তানের চেয়ে অনেক শক্তিশালী দল। আফগানদের তারা হারিয়েছে ৬ গোলে। জেমি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ট্যাকটিক্স, ফর্মেশন ... এগুলো আফগান ম্যাচের চেয়েও ভিন্ন হবে আমাদের।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমাদের গ্রুপের অপর দল ভারতও কঠিন দল। তারা কাতারকে রুখে দিয়েছে ড্র করে। তবে এ নিয়ে আমরা ভাবছি না। ঠিকমতো খেলতে পারলে ভারতকেও আমরা রুখে দিতে পারব।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে জেমি বলেন, ‘আমাদের খেলোয়াড়রা যেভাবে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলেছে তাতে আমি সন্তুষ্ট, কিন্তু ম্যাচের ফল নিয়ে আমি হতাশ। কারণ ম্যাচটি আমরা ড্রও করতে পারতাম। প্রতিপক্ষের তুলনায় বল পজেশনে পিছিয়ে থাকলেও ফিটনেসে আমরা পিছিয়ে ছিলাম না। মনে রাখতে হবে ওরা খেলে ইউরোপিয়ান লীগে। এটা বিবেচনায় রাখলে আমরা ওই ম্যাচে তেমন খারাপ খেলিনি।’ যাহোক, ফিরতি ও হোম ম্যাচে আফগানিস্তানের সঙ্গে আরও ভাল খেলে তাদের থেকে পয়েন্ট ছিনিয়ে নেয়ার লক্ষ্য থাকবে জেমির। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে আবারও খেলোয়াড়দের নিয়ে অনুশীলন করবেন জেমি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কাতার ম্যাচের আগে আমি দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলাতে চাই দলকে। ২টিই আন্তর্জাতিক ম্যাচ হলে ভাল হয়। তবে ক্লাব দল হলেও আপত্তি নেই। অথবা ১টি জাতীয় দল ও ১টি ক্লাব দলও হতে পারে। আমার চাহিদার কথা ইতোমধ্যেই জানিয়েছি বাফুফেকে। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর এবং ৩ অক্টোবর ম্যাচ দুটি হলে ভাল হয়। লাওস, ম্যাকাও, গুয়াম, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ... এই দেশগুলো হচ্ছে জেমির পছন্দ। বাফুফে এই দেশগুলোর সঙ্গে কথা বলে তাদের মধ্যে থেকে দুটি দেশকে ঢাকায় আনার চেষ্টা করবে।’ জেমি মনে করেন কাতারকে মোকাবেলার আগে এই দুটি ম্যাচই তার দলের প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট। এদিকে আজই শুক্রবার বাফুফের অনুমতি নিয়ে জেমি তার নিজ দেশ ইংল্যান্ডে পরিবারের কাছে যাচ্ছেন ছুটি কাটাতে। ফিরবেন ১০-১২ দিন পর। মজার ব্যাপার আজ ১৩ সেপ্টেম্বর হচ্ছে তার ৪০তম জন্মদিন। জেমি আরও জানান, ‘পরের ম্যাচের জন্য দলে কোন খেলোয়াড় পরিবর্তন করব না। তবে ক্যাম্পে ২-৩ ফুটবলারকে পরখ করার জন্য ডাকতে পারি। এছাড়া বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ শুরু হলে ওখানে যারা ভাল পারফর্ম করবে সেখান থেকেও অনেককে ক্যাম্পে ডাকতে পারি।’ দলের গোলস্কোরিং এ্যাবিলিটি বা ফরোয়ার্ড লাইনের শক্তিমত্তা নিয়ে জেমির ভাষ্য, ‘আমাদের আক্রমণভাগ আগের চেয়ে শক্তিশালী হয়েছে। তবে ঘরোয়া লীগে যদি দেশী স্ট্রাইকারদের বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ দেয়া হতো তাহলে আমাদের জাতীয় দলের আক্রমণভাগও আরও শক্তিশালী হতে পারতো।’ কাতারকে বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৬ এবং অনুর্ধ-২৩ পর্যায়ে হারিয়েছে। সিনিয়র পর্যায়ে সেটা করা খুবই কঠিন। ‘তবে ফুটবলে সবই সম্ভব। এ জন্য কঠোর পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই। ভারত যদি ওদের সঙ্গে ড্র করতে পারে, তাহলে আমাদের চেষ্টা করে পারা উচিত।’ জেমির ভাষ্য।
×