স্টাফ রিপোর্টার ॥ পাবনায় গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূকে অভিযুক্ত ধর্ষকের সঙ্গে থানার মধ্যে বিয়ে দেয়ার ঘটনায় প্রশাসনিক কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে তা দেখার অপেক্ষায় হাইকোর্ট। বিষয়টি নজরে আনা হলে হাইকোর্ট বলেছে ‘আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। আগে দেখি প্রশাসনিক কী ব্যবস্থা নেয়া হয়। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোঃ খায়রুল আলম সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন দ্বৈত বেঞ্চ বুধবার এ মন্তব্য করেন।
সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী জামিউল হক ফয়সাল পাবনার গণধর্ষণের বিষয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আনেন। আইনজীবী বলেন, ‘গণধর্ষণের শিকার নারীর সঙ্গে থানায় বসে অভিযুক্তের বিয়ে দিয়েছে ওসি। জবাবে আদালত বলে, ‘টিভিতে দেখেছি মূল অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। ওসিকেও শোকজ করা হয়েছে। তখন আইনজীবী জানান, পত্রিকায় দেখেছি ভিকটিম ও কাজীকে ওসির লোকজন ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। তাতে তদন্ত ভিন্ন মোড় নিতে পারে।
আদালত বলে, ‘আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। আগে দেখি প্রশাসনিক কী ব্যবস্থা নেয়া হয়। তারপরও যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে আগামী সপ্তাহে বিষয়টি আদালতের নজরে আনতে আইনজীবীকে পরামর্শ দেয়া হয়। গত সোমবার বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূকে থানার ভেতরে অভিযুক্ত এক ধর্ষকের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে পাবনা সদর থানার ওসি ওবাইদুল হকের বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে পাবনা সদর থানায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী গৃহবধূর করা লিখিত অভিযোগে বলা হয়, পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের সাহাপুর যশোদল গ্রামে স্বামী ও তিন সন্তান নিয়ে বসবাস করছিল ওই গৃহবধূ । গত ২৯ আগস্ট রাতে একই গ্রামের আকবর আলীর ছেলে রাসেল আহমেদ তার চার সহযোগীসহ কৌশলে অপহরণ করেন। টানা চারদিন অজ্ঞাত একটি জায়গায় আটকে রেখে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে রাসেল ও তার সহযোগীরা। পরে পালিয়ে এসে স্বজনদের বিষয়টি জানালে ৫ সেপ্টেম্বর তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তিনি (গৃহবধূ) নিজেই বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ ধর্ষক রাসেলকে আটক করেন। গৃহবধূর অভিযোগ মামলা হিসেবে গ্রহণ না করে উল্টো তাকে থানায় ডেকে নিয়ে স্বামীকে তালাক দিয়ে অভিযুক্ত রাসেলের সঙ্গে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়।
