ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মানববন্ধনে ফখরুল

বৃহত্তর আন্দোলনে এ সরকারের পতন ঘটাতে হবে

প্রকাশিত: ১২:০৩, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বৃহত্তর আন্দোলনে এ সরকারের পতন ঘটাতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবিলম্বে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সরকার খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করেই তাকে মুক্ত করতে হবে। সেই সঙ্গে বৃহত্তর আন্দোলনে এ সরকারের পতন ঘটাতে হবে। বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। দেশবাসীর উদ্দেশ ফখরুল বলেন, আসুন সবাই দলমত নির্বিশেষে সবার স্বার্থরক্ষার জন্য, স্বাধীনতার চেতনাকে সমুন্নত রাখতে আমাদের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধ হই। সামনের দিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলন তৈরি করে এই সরকারকে পরাজিত করতে সক্ষম হব। ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। তার ডায়াবেটিস ও গায়ের ব্যথা বেড়ে গেছে, তিনি কারও সাহায্য ছাড়া হাঁটতে-চলতে পারেন না। হুইল চেয়ারে করে চলছেন। কিন্তু কারা কর্মকর্তা ও ডাক্তাররা বলছেন, তিনি নাকি সুস্থ হয়ে গেছেন। বাস্তবে তিনি অসুস্থ অবস্থায় কারারুদ্ধ দিন পার করছেন। আমরা তার সুচিকিৎসা দাবি করছি। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এক পর্যায়ে স্লোগান দিতে থাকেন ফখরুল। স্লোগানের ভাষা ছিল এমনÑ ‘জিয়ার সৈনিক এক হও’, ‘মুক্তি চাই, মুক্তি চাই, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে সরকার রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারছে না। দুই বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও তারা ফেরত পাঠাতে পারেনি। তারা দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিচ্ছে। কারণ, তাদের সেই সাহস নেই। আজকে অসম থেকে হুমকি দেয়া হচ্ছে, বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের খুঁজে বের করে নাকি পাঠিয়ে দেয়া হবে। আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, স্বাধীনতার পরে কোন বাংলাদেশী কখনও ভারতে যায়নি। কিন্তু এটা নিয়ে গভীর চক্রান্ত শুরু হয়েছে আমাদের দেশকে আবারও বিপদগ্রস্ত করবার জন্য। এ বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। ফখরুল বলেন, অন্যায়ভাবে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে আটকে রাখা হয়েছে। রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। বিচার বিভাগ, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গণমাধ্যমসহ সবক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েমের চেষ্টা চলছে। মানববন্ধনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে বিচারকেরা মুক্তমনে কাজ করতে পারছেন না। যে কারণে আইনী প্রক্রিয়াতে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। তাকে মুক্ত করতে হলে আইনী লড়াইয়ের পাশাপাশি ঐক্যবদ্ধভাবে সারাদেশে রাজপথে আন্দোলন কর্মসূচী পালন করতে হবে। বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য মানববন্ধন নয়, দানববন্ধন কর্মসূচী পালন করতে হবে। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে তারা রাজপথে নামতে বাধ্য হবেন। সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করলে খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রের মুক্তি নিশ্চিত হবে। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা যদি মনে করি খালেদা জিয়ার মুক্তিতে সরকার একমাত্র বাধা তাহলে সরকারের পতনের আন্দোলনই আগে করব। তারপর খালেদা জিয়া স্বাভাবিকভাবেই মুক্ত হয়ে আসবেন। দেশবাসীকে উদ্দেশ করে ফখরুল বলেন, আপনারা দেখছেন, কীভাবে দেশে লুটপাট চলছে। কীভাবে দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। দুর্নীতির টাকা দেশে বিদেশে পাচার করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা হচ্ছে। এ সরকারের দেশের মানুষের প্রতি কোন জবাবদিহিতা নেই। মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান ডাঃ এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, আহমেদ আযম খান, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মজিবুর রহমান সারোয়ার, খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন- নবী খান সোহেল, দলের নেতা শিরিন সুলতানা, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু প্রমুখ।
×