ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বৈঠক হতে পারে এ মাসেই

প্রকাশিত: ১১:৫৫, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বৈঠক হতে পারে এ মাসেই

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে বৈঠক করার প্রস্তাবটিতে তিনি কোন সমস্যা দেখছেন না। গণমাধ্যমে গুঞ্জন শুরু হয়েছে চলতি মাসের শেষে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনে ট্রাম্প রুহানির সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন। হোয়াইট হাউসে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প রুহানির সঙ্গে তার বৈঠকের সম্ভাবনা আরও জোরালো করেন। তারপর থেকে জল্পনা শুরু হয়েছে অবশেষে কি দুই দেশনেতা বৈঠকে বসছেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও রবিবার বলেন, ‘ট্রাম্প ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে বৈঠকের জন্য ইচ্ছুক। তবে বৈঠকের কোন পূর্বশর্ত দেয়া যাবে না। কারণ আমরা ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না।’ পম্পেও বৈঠকের বিষয়ে ইরানের অবস্থান সম্পর্কে বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে খামেনির (ইরানের সর্বোচ্চ নেতা) ওপর, কেননা তিনি তার দেশকে কোন পথে নিয়ে যেতে চান সেটা তিনিই ভাল জানেন। খামেনিকে এই বৈঠকের বিরোধী বলে দাবি মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর। সোমবার ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছেন, ‘দেশটি গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাজ চালাচ্ছে। ইসরায়েল আবাদেহ শহরের গোপন ওই কর্মসূচী সম্পর্কে জানার পর সেটি বন্ধ করে রেখেছে তারা।’ এদিকে পম্পেও ইরানের বিরুদ্ধে আবার অভিযোগ করেন। তিনি ইরানকে গোপন পরমাণু তৎপরতা চালানো এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা বা আইএইএকে সহযোগিতা না করার দায়ে অভিযুক্ত করেন। মঙ্গলবার এক টুইটার বার্তায় তিনি দাবি করেন, ইরান আইএইএকে পুরোপুরি সহযোগিতা করছে না এবং দেশটির পক্ষ থেকে গোপনে পরমাণু তৎপরতা চালানোর সম্ভাবনা রয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বার্তায় আরেক ধাপ অগ্রসর হয়ে হুমকি দিয়ে বলেন, ওয়াশিংটন ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে দেবে না। পম্পেও এমন সময় এ দাবি করলেন যখন তার মাত্র একদিন আগে আইএইএয়ের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক কর্নেল ফেরুতা ইরান সফর শেষে ভিয়েনায় ফিরে তার সংস্থাকে সহযোগিতা করার জন্য তেহরানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি নিজের ইরান সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, এ সফরে ইরানী কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার ইতিবাচক ও গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, ইরানে তার সংস্থার পর্যবেক্ষকরা বর্তমানে কঠোরতম পরিদর্শনের কাজে নিযুক্ত রয়েছেন। ফেরুতা আরও বলেন, পরমাণু সমঝোতা পুরোপুরি মেনে চলার বিষয়ে ইরানের প্রতি তার সংস্থা যে আহ্বান জানিয়েছে তার অর্থ এই নয় যে, ইরান আইএইএ’কে সহযোগিতা করছে না। আইএইএ’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ইরানের পক্ষ থেকে পরমাণু সমঝোতার আরও কিছু ধারার বাস্তবায়ন স্থগিত রাখার তৃতীয় পদক্ষেপের প্রতি ইঙ্গিত করে এ কথা বলেন। পরমাণু সমঝোতা থেকে আমেরিকার একতরফাভাবে বেরিয়ে যাওয়া এবং ইউরোপের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে ইরান ওই পদক্ষেপ নিয়েছে। গত মাসে ফ্রান্সের বিয়ারিৎস শহরে জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে যান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। ট্রাম্প সেখানে অবস্থান করলেও জারিফের সঙ্গে তার সাক্ষাত হয়নি। তবে সম্মেলন শেষে ট্রাম্প বলেন, রুহানির সঙ্গে বৈঠক করতে তিনি রাজি আছেন। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এ বৈঠক হতে পারে। অবশ্য এর আগে এ ঘোষণাটি আসে ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর কাছ থেকে। জি-৭ সম্মেলন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে ম্যাক্রোঁ জানান, ব্যাপক কূটনীতি ও আলোচনার মধ্য দিয়ে ট্রাম্প ও রুহানির মধ্যে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে একটি শীর্ষ বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে। পরমাণু চুক্তির বিষয়টি নিয়ে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে চলমান অচলাবস্থা অবসানের পথ খোঁজাই এ বৈঠকের লক্ষ্য। ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘আমাদের জন্য দুটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইরানকে কখনোই পরমাণু অস্ত্রসমৃদ্ধ হতে দেয়া যাবে না। অন্যদিকে চলমান পরিস্থিতি যেন আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় হুমকি না হয়ে দাঁড়ায়।’
×