ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নিরাপদ কর্মময় পরিবেশ

প্রকাশিত: ১১:৫৪, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

নিরাপদ কর্মময় পরিবেশ

সৃষ্টির আদিতে নারী। পৃথিবীতে প্রথম কৃষি কাজের সূচনা করে নারী। সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম কাজ করতে পারে নারী। প্রকৃতিগতভাবে ধৈর্য, সহনশীলতাসহ অন্যান্য গুণের অধিকারী নারী। তাই নকশীকাঁথা তৈরি হয়েছে নারীর হাত দিয়ে। বিশ্বদরবারে শিল্পের সৌন্দর্যে শ্রেষ্ঠত্বের আসন অধিকার করেছে। সুঁচে সুতা পরানোর কাজে নারীর ধৈর্য ও একাগ্রতা রয়েছে। এমনি অনেক সূক্ষ্ম কাজেও রয়েছে তাদের আগ্রহ ও একাগ্রতা। যার ফলে পোশাকশিল্প টিকে রয়েছে এবং বিশ্ববাজারে মানসম্মত পোশাকের জায়গা দখল করে নিতে পেরেছে। এ অবদান নারী পোশাক শ্রমিক শিল্পীদের। তাই এ নারী শ্রমিকদের যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে। নারী-পুরুষের মধ্যে কোন বেতন বৈষম্য করা চলবে না। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থান আইন অনুুযায়ী তাদের সকল সুযোগ সুবিধা দিতে হবে। তাদের স্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজের ব্যবস্থা করতে হবে। ভবিষ্যতে অতীতের মতো কোন গার্মেন্টস কারখানায় আর যেন কেউ আগুনে পুড়ে মৃত্যুবরণ না করে। কিংবা বিল্ডিং ধসে আর যেন কারও মৃত্যু না হয়। ঈদের পূর্বে বেতন বোনাসের জন্য কারখানার গেটে যেন ধরনা দিতে না হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ। এবার সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মহোদয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করায় সব কারাখানার শ্রমিকরা পবিত্র ঈদ-উল-আজহার পূর্বে বেতন-ভাতা পেয়েছে। নারীদের মাতৃত্বকালীন ৬ মাসের বেতনসহ ছুটি পেতে যেন কোন গড়িমসি না হয় সেটি সরকারের সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিশ্চিত করতে হবে। মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষে শিশুসন্তান নিয়ে একজন মা-শ্রমিক কাজ করতে পারে এরূপ উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। অতীতের যেসব পঙ্গু শ্রমিক রয়েছে তাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণসহ তাদের বেঁচে থাকার ন্যূনতম পথ করে দিতে হবে। পোশাকশিল্পে চাকরি করে নারী শ্রমিকরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়নি, শোষিত হয়নি, নির্যাতিত ও নিপীড়িত হয়নি এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারলে ভবিষ্যতে এই শিল্প টিকে থাকবে। দেশের প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিতে অবদান রাখছে এবং রাখবে। আমাদের দেশের নারী শ্রমিকরা গার্মেন্টস শিল্পকে তাদের ঘামে-শ্রমে, জীবনযাপন করেও টিকিয়ে রেখেছে। দেশের প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। এদের যথাযথ মূল্যায়ন না করা হলে ধাপে ধাপে নারীরা এই শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। পোশাক শ্রমিকরা দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। এদের বড় অংশই নারী। তাই সমাজে সার্বিকভাবে পোশাক শিল্পের স্বাবলম্বিতার পেছনে নারীর ভূমিকা অনেক। তাই তাদের কল্যাণে জীবন মানের উন্নয়নে সমাজরে ন্যায় কাজ করাই উচিত। একজন গার্মেন্টস মালিক একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি থেকে কয়েকটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির মালিক হয়েছেন। এর পেছনে এই নারী পোশাক শ্রমিকদের অবদানই মুখ্য। নারীর ভেতর রয়েছে সৃষ্টির শপথ। অতএব তাদের অবহেলা নয়। পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে, দেশের প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করতে হলে নারী পোশাককর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে। ফুলবাড়ী, দিনাজপুর থেকে
×