ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সেলাই দিদিমনি;###;মুহাম্মদ শফিকুর রহমান

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ পোশাক শ্রমিকের জীবন

প্রকাশিত: ১১:৫২, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ পোশাক শ্রমিকের জীবন

দশজন তৈরি পোশাক শ্রমিকের মধ্যে আটজনের পেটে ক্ষুধা থাকে। ক্ষুধা নিয়ে তারা কাজ করে। এই তথ্য যেদিন জানলাম বুকের মধ্যে কেমন জানি লেগেছিল। কারণ রফতানির প্রধান আইটেম তৈরি পোশাক। আর তৈরি পোশাক শিল্পের সিংহভাগ শ্রমিক নারী। অথচ তাদের জীবনটা দুঃখে ভরা। শোষিত, বঞ্চিত আর লাঞ্ছিত হবার বেদনাদায়ক মর্মান্তিক ইতিহাস। এসব নারী শ্রমিকরা বাড়ি, গাড়ি চায় না। শুধু ন্যায্য পারিশ্রমিকটুকু সঠিক সময় প্রত্যাশা করে। পোশাক কারখানা মালিক কোটিপতি হন। একটার পর একটা কারখানা করেন। এসব শ্রমিকদের প্রাপ্যটুকু না দিয়ে। ঈদ কোরবানির সময় চিত্রটা আরও করুণ হয়। শ্রমিকরা বেতন-বোনাস পান না। রাস্তা অবরোধ করেন। আবার কেউ কেউ কারখানা রাতের আঁধারে বন্ধ করে চলে যান। শ্রমিকদের পাওনা বকেয়া রেখেই। এসব মিডিয়ায় চলে আসে। দেশ-বিদেশের মানুষ জেনে যায়। ফলে বিদেশী আমদানিকারক আমাদের তৈরি পোশাক নিতে দ্বিধায় পড়ে যায়। কমপ্লেয়ান্স ইস্যুতে অনেক বায়ার পোশাক নেয়া বন্ধ করে দেন। বিশ্লেষক, গবেষক হবার প্রয়োজন নেই। সাদা চোখে দেখলেই বোঝা যায়, যতটা শ্রম নারী শ্রমিকরা দেন। পারিশ্রমিক সে তুলনায় অতি নগণ্য। সব সেক্টরের শ্রমিকদের বেতন বাড়ে। তৈরি পোশাক শিল্পের নারী শ্রমিকদের বেতন বাড়ে না। আবার নারী শ্রমিক শ্রম দেন বেশি। কিন্তু পুরুষ শ্রমিকের চেয়ে বেতন কম পান। এমনটাও দেখা যায়। ৪০ জন নারী যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করে। সেখানে ডে কেয়ার সেন্টার থাকার কথা। অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানায় ডে কেয়ার নেই। মালিক জানেই না ডে কেয়ারের কথা। ফলে ছোট্ট শিশুসন্তানের জন্য নারী শ্রমিককে চাকরি ছাড়তে হয়। বাথরুমসহ অন্যান্য যেসব সুবিধা নারী শ্রমিকদের জন্য থাকা দরকার। তাও অধিকাংশ কারখানায় নেই। আসলে সেলাই দিদিমনিদের বঞ্চনার শেষ নেই। আর এই অবস্থার অবসান কবে হবে। সেটা বলা মুশকিল। তবে কিছু পান বা না পান। দেশের সমৃদ্ধির জন্য সেলাই দিদিমনিরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বানারীপাড়া, বরিশাল থেকে
×