ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় আশুরা পালিত

প্রকাশিত: ১১:১২, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় আশুরা পালিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সারাদেশে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় মঙ্গলবার পালিত হয়েছে পবিত্র আশুরা। এ উপলক্ষে সারাদেশে ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। এসব কর্মসূচীর মধ্যে ছিল আশুরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা সভা, ওয়াজ ও মিলাদ মহফিল। এছাড়া পুরান ঢাকাসহ সারাদেশে ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া মিছিল বের করা হয় এদিন। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা নফল রোজা, নামাজ, জিকির-আসকারের মধ্য দিয়ে দিনটি অতিবাহিত করেন। ইসলামী বিশেষজ্ঞরা বলছেন মুসলিম বিশ্বে ত্যাগ ও শোকের প্রতীক হিসেবে দিনটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ পবিত্রতম দিবস। ১০ মহরমে অনেক ফজিলতময় ঘটনা ঘটেছে। হিজরী ৬১ সনে আশুরাদিনে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর নাতি হজরত ইমাম হোসাইন (রাঃ) এবং তার পরিবারের সদস্যরা কারবালার ময়দানে ইয়াজিদের সৈন্যদের হাতে শহীদ হন। শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের মহান আদর্শকে সমুন্নত রাখতে হজরত ইমাম হোসাইনের (রাঃ) আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে আছে। কারবালার শোকাবহ ঘটনা অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং সত্য ও সুন্দরের পথে চলতে প্রেরণা জোগায়। আশুরা উপলক্ষে মঙ্গলবার পুরান ঢাকার হোসেনি দালানের সামনে থেকে সকালে বের হয় ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া মিছিল। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে এই তাজিয়া মিছিল বের হয়। কালো-লাল-সবুজের নিশান উড়িয়ে, কারবালার মাতম করা হয় মিছিলে। বুক চাপড়ে ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ মাতমধ্বনি দেয়া হয়। আশুরাদিনে ঢাকার হোসনি দালান থেকে বের হওয়া তাজিয়া মিছিল ঢাকা দীর্ঘদিনের ঐহিত্য। এবারও তার ব্যতিক্রম নেই। তাজিয়া মিছিলটি বক্্শীবাজার, উর্দুরোড, লালবাগ চৌরাস্তা, গৌর-এ শহীদের মাজার, আজিমপুর, নিউমার্কেট হয়ে জিগাতলা (ধানম-ি লেকের কাছে) গিয়ে শেষ হয়। পথের দু’পাশে ছিল উৎসুক জনতার ভিড়। মানুষ ছাদে দাঁড়িয়ে, জানালা দিয়ে মিছিল উপভোগ করে। পুরো মিছিল ঘিরে ছিল পুলিশ, র‌্যাবসহ বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী। সকালে তাজিয়া মিছিল ঢাকা প্রদক্ষিণ করার সময়ই দলে মানুষ এসে যোগ এতে। বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেয় হোসেনি দালানে। প্রতিটি ইমামবাড়া সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়। সকালে মিছিলে আসা লোকজনকে আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে দেহ তল্লাশি করে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করানো হয়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে, মোহাম্মদপুর বিহারী ক্যাম্প ও মিরপুর থেকেও তাজিয়া মিছিল বের করা হয়। মঙ্গলবার দুপুর থেকে মসজিদে মসজিদে দিবসের গুরুত্ব তুলে আলোচনা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। পরিচালনা করা হয় বিশেষ মোনাজাত। অনেকে এদিন উপলক্ষে দান খয়রাতও করে। আশুরা উপলক্ষে মঙ্গলবার ছিল সরকারী ছুটি। এদিকে আশুরা উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আগের দিন সোমবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ‘আশুরার তাৎপর্য ও শিক্ষা’ শীর্ষক ওয়াজ ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
×