ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আরএফএল কর্মকর্তা হত্যায় তিন ছিনতাইকারী গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৯:২৩, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

আরএফএল কর্মকর্তা হত্যায় তিন ছিনতাইকারী গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চাঞ্চল্যকর কামরুল ইসলাম হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ ছিনতাইকারীকে আটক করেছে র‌্যাব। তারা হলো- আবদুল হক রনি বাবু, সুজন শাহজালাল ও আউয়াল হাওলাদার। র‌্যাব-১ এর একটি বিশেষ টিম তাদের রবিবার রাতে আটক করে। তারা দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারী দলের সক্রিয় সদস্য। এ সম্পর্কে র‌্যাব জানিয়েছে, গত শুক্রবার দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে চারটায় টঙ্গী কলেজ গেট এলাকায় মোঃ কামরুল ইসলামকে ছিনতাইকারীরা ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। ছিনতাইকারীরা কামরুলের ডান উরুতে ধারালো ছোড়া (সুইচ গিয়ার) দিয়ে গুরুতর জখম করায় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ হত্যাকা-ের ঘটনায় ভিকটিমের ছোট ভাই মোঃ আবুল কালাম মতিউর রহমান বাদী হয়ে টঙ্গী পূর্ব থানায় অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। কামরুল নাটোর জেলার সদর থানাধীন শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত আবুল কাসেমের বড় ছেলে। তিনি আরএফএল কোম্পানির সিলেট জেলার জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ঘটনার দুই দিন আগে কামরুল ইসলাম সাপ্তাহিক ছুটিতে নাটোরে তার নিজ বাড়িতে যান। সেখান থেকে পরবর্তীতে ঢাকায় আরএফএল কোম্পানির প্রধান অফিসে অফিসিয়াল মিটিং এ অংশগ্রহণের উদ্দেশে রওনা হন। ৭ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত সাড়ে চারটায় কলেজ গেট এলাকায় পৌঁছলে অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন ছিনতাইকারী ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাকে অতর্কিত আক্রমণ করে। এ সময় ছিনতাইকারীদের বাধা প্রদান করায় তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ভিকটিমকে মারাত্মকভাবে জখম করে তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও নগদ ৩৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় এলাকার লোকজন খবর দিলে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকা-ের ছায়া তদন্ত করে র‌্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব নিশ্চিত হয় এটা সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারীদের কা-। রবিবার রাত আড়াইটার দিকে এরশাদনগর থেকে ছিনতাইকারীদের আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৩টি ধারালো সুইচ গিয়ার চাকু, হত্যার সময় ব্যবহৃত ১টি অটোরিক্সা ও ভিকটিমের ব্যবহৃত ১টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামিরা এ হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য এবং প্রত্যেকে পেশাদার ছিনতাইকারী। এছাড়া তারা প্রত্যেকে যাত্রী পরিবহনের কর্মী। তাদের মধ্যে আসামি বাবু বাসের চালক, আউয়াল অটোরিক্সা চালক ও সুজন বাসের কন্ডাক্টর। ছিনতাই কাজের সুবিধার জন্য তারা এসব পেশা বেছে নিয়েছে। তাদের বাসে নিয়মিত যাতায়াতকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের গতিবিধি অনুসরণ করে এবং কোন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা কবে দেয়া হবে সেই খোঁজ খবর রাখে তারা। বাসে ভাড়া নেয়ার সময় যাত্রীর নিকট কি পরিমাণ টাকা আছে এবং কোন মূল্যবান সামগ্রী আছে কিনা সেটা অনুমান করার চেষ্টা করে। কোন যাত্রীর কাছে মোটা অঙ্কের টাকা অথবা মূল্যবান সামগ্রী আছে জানতে পারলে বাস থেকে সেই যাত্রী নেমে যাওয়ার পর পরই তারা তাদের অন্য সদস্যদের ওই যাত্রীর বেশভূষা ও কোথায় নেমেছে তার বিস্তারিত বিবরণ জানায়। পরে তাদের কথামতো উক্ত এলাকায় থাকা এই চক্রের সদস্যরা ওই যাত্রীকে শনাক্ত করে নির্জন স্থানে যাওয়ামাত্রই অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সবকিছু ছিনিয়ে নেয়।
×