ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের কোন এনজিও উস্কানি দিচ্ছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ॥ কাদের

প্রকাশিত: ১০:৩২, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

  রোহিঙ্গাদের কোন এনজিও উস্কানি দিচ্ছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ॥ কাদের

সংসদ রিপোর্টার ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, টেকনাফ ও উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরে কোন এনজিও উস্কানিমূলক কর্মকান্ড করছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে পাকিস্তানপন্থী কয়েকটি এনজিও চিহ্নিত করা হয়েছে; যারা রোহিঙ্গাদের দোয়া মাহফিল ও মোনাজাতের কথা বলে রাজনৈতিক মহাসমাবেশে রূপান্তর ঘটিয়েছে। রবিবার সচিবালয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত শেষে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করে এনজিওদের বিষয়ে সরকারের কাছে কোন ধরনের তথ্য রয়েছে তা জানতে চান মার্কিন রাষ্ট্রদূত। আর আমরা রোহিঙ্গা বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরেছি।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন-নিপীড়নের সময় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের মানবিকতা ও ইতিবাচক ভূমিকার প্রশংসা করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমেরিকা বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। তবে রোহিঙ্গাদের কারণে দেশের অর্থনীতি, পরিবেশ, ট্যুরিজম এবং নিরাপত্তা হুমকিতে পড়ছে। এ জন্য রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নিতে আমেরিকার সহযোগিতা চেয়েছেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আমাদের কনসার্ন (উদ্বেগ) যেটা, এনজিও নিয়ে যে কথাবার্তা হচ্ছে, আমরা কি দৃষ্টিকোণ থেকে বলছি এবং কাদেরকে নিয়ে বলছি। আমরা মনে করছি আমাদের কাছে কিছু ইনফরমেশন আছে যেগুলো খতিয়ে দেখছি। ইনফরমেশন সব ট্রু হবে এমন তো কথা নেই। আমরা খতিয়ে দেখছি। ইনফরমেশনের মধ্যে কিছু প্রো-পাকিস্তানী এনজিও আছে তারা সমস্যা সৃষ্টি করছে, সহিংসতা করছে। সম্প্রতি তারা দোয়া করবে, আল্লার কাছে মোনাজাত করবে- একথা বলে অনুমতি নিয়ে রাজনৈতিক সমাবেশের দিকে গেছে, এসব নিয়ে আমাদের একটা উদ্বেগ আছে সেটা আমরা বলেছি। ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা (মার্কিন রাষ্ট্রদূত) বললেন আমরা তো এই ইস্যুতে প্রথম থেকেই বাংলাদেশের সঙ্গে আছি, বাংলাদেশ যে পজিটিভলি রেসপন্স করেছে, প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে বর্ডার উš§ুক্ত করে দিয়েছেন যে উদারতার সঙ্গে, এটা রেয়ার (বিরল)। অবশ্যই বাংলাদেশ প্রশংসার দাবিদার। তিনি বলেন, আমাদের প্রতিনিধি দল চায়না গেছে। চায়নার মতো বড় শক্তি মিয়ানমার তাদের বন্ধু দেশ, সেক্ষেত্রে মিয়ানমারের ওপর চাপটা আরও বেশি করে প্রয়োগ করতে হবে চায়নার মাধ্যমে। এখানে ১১ লাখ লোক আমাদের ইকোট্যুরিজম এ্যাফেক্ট হচ্ছে। এত বড় বোঝা নিতে পারছি না। সেতুমন্ত্রী বলেন, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) প্রতিনিয়তই মিয়ানমারের ওপর প্রেসার করছে, যাতে তাদের (রোহিঙ্গা) ডিগিনিটি, সেফটি ও সিটিজেনশিপ নিশ্চিত করে তাদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এনজিও নিয়ে সরকারের পর্যালোচনা যুক্তরাষ্ট্র কি দৃষ্টিতে দেখছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের কোন অভিযোগ আছে বলে মনে করি না। রোহিঙ্গাদের সুষ্ঠুভাবে নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার যে পদক্ষেপ নিচ্ছে এর সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙ্গে দিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমে বের হওয়া খবরের প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের বলেন, ছাত্রলীগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে মনোনয়নে বোর্ডের মিটিংয়ে ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। কথা প্রসঙ্গে হয়ত কথা আসে। এটা নিয়ে সিদ্ধান্ত আকারে কোন কথা হয়নি। কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে সেটার ফোরাম ওটা (বৈঠক) ছিল না। ওখানে ইনসাইডে আমরা অনেক কথাই বলতে পারি, অনেক আলোচনাই করতে পারি। এখানে কোন কোন প্রসঙ্গে ক্ষোভের প্রকাশও হতে পারে বা কারও কারও রিএ্যাকশনও আসতে পারে। কিন্তু দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমার এ নিয়ে কোন মন্তব্য করা এ মুহূর্তে ঠিক হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না এটা ইমপ্লিমেন্টেশন প্রসেসে যায়। ছাত্রলীগের কর্মকা- নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্ধ কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, কিছু কিছু ব্যাপারে তো থাকতেই পারে। যেমন- আমাদের ইলেকশনে যারা বিদ্রোহী ছিল, আমাদের মন্ত্রী-এমপিদের মধ্যে, নেতাদের মধ্যে- এসব ব্যাপারে তো ক্ষোভ প্রকাশ হয়। কাজেই ছাত্রলীগেরও বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্ত কিছু কিছু বিষয় আছে, সেগুলো নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কনসার্ন থাকতেই পারে, এটা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু এখানে কোন স্পেসিফিক সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমি জানি না, কারণ ওই ফোরামে কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনার বিষয় আসেনি। ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে গণভবন থেকে চলে যেতে বলেছেন বলে খবর এসেছে, এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি তাদের চলে যেতে বলব কেন? প্রাইম মিনিস্টারের সঙ্গে দেখা করতে গেছে। বিভিন্ন জেলা থেকে নেতারা গেছে, ছাত্রলীগ গেছে। প্রাইম মিনিস্টারের বাড়িতে তারা গেছে আমি কিভাবে বলি তোমরা এখান থেকে চলে যাও। আসলে কিছু কিছু খবর হাওয়া থেকে পাওয়া হয়ে যায়, একটা হয় আর একটা আসে। নানাভাবে ছড়ায়। বাস্তবতাটা ভিন্ন। আমার মনে হয় এ ধরনের কিছু হলে আপনারা তো দেখবেনই। এ ধরনের কিছু হতে গেলে তো এটা পাবলিক স্টেটমেন্ট। ডিসিশনটা জানা যাবে, এটা তো ওপেন সিক্রেট হয়ে যাবে, তখন সিক্রেট থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী মিটিংয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে একথা বলেছেন কিনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যতক্ষণ এটা সিদ্ধান্ত আকারে না আসছে ততক্ষণ পর্যন্ত এর সত্যতা আমি স্বীকার করব না।’ ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির বিভিন্ন কর্মকা- নিয়ে সন্তুষ্ট কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যেগুলো সন্তোষ প্রকাশ করার মতো সেগুলোতে সন্তোষ প্রকাশ করি, আর যেগুলো লোকে পছন্দ করে না সেগুলো আমিও পছন্দ করব না। এটা খুবই স্বাভাবিক এবং সে ব্যাপারে আমি তাদের সতর্ক হতে বলি, সাবধান হতে বলি, তাদের সুনামের ধারায় ফিরে আসতে বলি। তাদের ভাল খবরের শিরোনাম হতে বলি- এটা আমি অহরহ বলে যাচ্ছি।’
×