ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সামনে একটিই বিকল্প পদত্যাগ করা

উভয় সঙ্কটে বরিস জনসন

প্রকাশিত: ১১:৪০, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

উভয় সঙ্কটে বরিস জনসন

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী পড়েছেন মহাফাঁদে। সরব বিরোধীরা আটকে দিচ্ছেন আগাম নির্বাচন। অন্যদিকে তিনি নিজেই বলেছেন, মারা যাবেন তবু ব্রেক্সিট পেছাবেন না। তার সামনে একটাই বিকল্প পদত্যাগ করা। আর তা হলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বিচ্ছেদ বাস্তবায়ন করতে ব্রিটিশদের খোয়াতে হচ্ছে তিনজন প্রধানমন্ত্রী প্রথমে ডেভিড ক্যামেরন, এর পর টেরেসা মে এবং বরিস জনসন। ২০১৬ সালের জুনে এক গণভোটে ৫১.৯ শতাংশ ব্রিটিশরা ইইউ থেকে বিচ্ছেদ নেয়ার রায় দেয়। এর পরই ব্রেক্সিটবিরোধী তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন পদত্যাগ করেন। পরে দায়িত্ব নেন টেরেসা মে। তিন বছর ধরে তিনি চেষ্টা করেছেন; কিন্তু এমপিদের বাধায় ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে বারবার ব্যর্থ হয়ে মেও পদত্যাগে বাধ্য হন। এর পর কনজারভেটির পার্টির প্রধান এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন বরিস জনসন। কাক্সিক্ষত বিচ্ছেদ ঘটানোর জন্য প্রথমে নির্ধারিত দিন ছিল এ বছর ২৯ মার্চ। মে’র সরকার সেই সময় এটি বাড়িয়ে নিতে পেরেছিল। এখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের নির্ধারিত দিন হচ্ছে ৩১ অক্টোবর। জনসন চান ওই দিনেই ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ সম্পন্ন হোক। তাতে দুই পক্ষ কোন চুক্তিতে পৌঁছাক কিংবা না পৌঁছাক। কিন্তু যেহেতু কোন চুক্তির কথা জনসনের শিবির থেকে উঠে আসছে না, এর মানে বিনা চুক্তির ব্রেক্সিট তিনি চাচ্ছেন। বিরোধীরা এমন চেষ্টা রুখে দিতে তৎপর; এমনকি ক্ষমতাসীন এমপিরাও বিরোধীদের সঙ্গে মিলে চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদ আটকাতে মরিয়া। জনসন আগাম সাধারণ নির্বাচন বিষয়ে যে প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন বুধবার, তা খারিজ করে দিয়েছেন এমপিরা। আগামী সোমবার আবার এ নিয়ে ভোটাভুটি হওয়ার কথা আছে সংসদে। কিন্তু গতকালই বিরোধীদলগুলো লেবার, লিবারেল ডেমোক্র্যাটস, এসএনপি ও প্লেইড সিমরু জানিয়ে দিয়েছে, তারা এদিন ভোট দিবে না। অন্তত নবেম্বরের আগে কোন সাধারণ নির্বাচনে তারা সাড়া দেবে না। পাশাপাশি বেশ কিছু বিদ্রোহী টরি এমপিও আগাম নির্বাচনের বিরোধিতা করে যাচ্ছেন। ফলে আগাম নির্বাচন হচ্ছে না, অন্তত জনসন যেমনটা চাচ্ছেন যে, ১৫ অক্টোবরে নির্বাচনটা হোক। এর কারণ হলো ১৭-১৮ অক্টোবর ব্রাসেলসে ইইউ সম্মেলন আছে। এর আগে জনসনের চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট থামাতে একটি বিল পাস হয় সংসদে। বিলটি বিরোধীদলগুলো আনলেও তাদের সঙ্গে যোগ দেন ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির বিদ্রোহী এমপিরা। এই বিলের মাধ্যমে ব্রেক্সিট প্রশ্নে সরকারের ভূমিকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, জনসন যদি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে একটি সমঝোতা করে পার্লামেন্টে নিয়ে আসতে না পারেন, তা হলে তাকে ইইউর কাছে ফিরে যেতে হবে এবং অনুরোধ জানাতে হবে যে ব্রেক্সিটের সময়সীমা ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পিছিয়ে দেয়া হয়। চিঠির ভাষা কী হবে তা-ও নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে এই বিলের মাধ্যমে। এ রকম পরিস্থিতিতে বরিস জনসনের ভাই জো জনসন সরকার থেকে পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগের কারণ হিসেবে ব্রিটেনের বাণিজ্যমন্ত্রী এবং দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনের ওরপিংটন থেকে নির্বাচিত টরি এমপি জাতীয় স্বার্থ-কে বড় করে দেখার কথা বলেছেন। জো’র মতো বরিসকেও পদত্যাগের আহ্বান এরই মধ্যে কেউ কেউ করেছেন। -গার্ডিয়ান
×