ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফাইনালে সেরেনা-আন্দ্রেস্কুর লড়াই

প্রকাশিত: ০৯:১৩, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 ফাইনালে সেরেনা-আন্দ্রেস্কুর লড়াই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইউএস ওপেনের ফাইনালে সেরেনা উইলিয়ামস এবং বিয়াঙ্কা আন্দ্রেস্কু। শুরু থেকে ধারাবাহিক পারফমেন্স উপহার দিয়েই মৌসুমের শেষ এই গ্র্যাডস্লাম টুর্নামেন্টের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছেন তারা। সেমিফাইনালে সেরেনা উইলিয়ামস সরাসরি সেটে পরাজিত করেন এলিনা সিতলিনাকে। আমেরিকান টেনিসের জীবন্ত কিংবদন্তি সেরেনা এদিন ৬-৩ এবং ৬-১ গেমে পরাজিত করেন ইউক্রেনের সিতলিনাকে। আরেক সেমিফাইনালে বেলিন্ডা বেনচিচকে হারান বিয়ান্কা আন্দ্রেস্কু। কানাডার তরুণ প্রতিভাবান এই খেলোয়াড় কঠিন লড়াইয়ের পর ৭-৬ (৭/৩) এবং ৭-৫ গেমে পরাজয়ের স্বাদ উপহার দেন সুইজারল্যান্ডের বেলিন্ডা বেনচিচকে। ইউএস ওপেনের মাধ্যমেই বিশ্ব টেনিসের পাদপ্রদীপের আলোয় উঠে এসেছিলেন সেরেনা উইলিয়ামস ১৯৯৯ সালে ক্যারিয়ারের প্রথম মেজর শিরোপা জিতে। এর পরের গল্পটা তো টেনিসপ্রেমী প্রায় সবারই জানা। অসাধারণ সব পারফর্মেন্স উপহার দিয়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। এই সময়ে ২৩টি গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয়ের স্বাদ পান তিনি। তবে আমেরিকান তারকা সর্বশেষ মেজর শিরোপা জেতেন ২০১৭ সালে। সেবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে স্টেফিগ্রাফকে (২২) ছাড়িয়ে যান তিনি। এর পরের সময়টা খুব কঠিন ছিল সেরেনার। বিয়ে এবং এক কন্যার মা হয়েছেন। এরপর সেরেনার কোর্টে ফেরা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন টেনিসবোদ্ধাদের অনেকে। তবে সেরেনা অবশ্য হাল ছাড়েননি। সব বাধা অতিক্রম করে স্বরূপেই কোর্টে ফেরেন ৩৭ বছর বয়সী এই আমেরিকান। গত বছর এই ইউএস ওপেনের ফাইনালও খেলেন তিনি। কিন্তু শিরোপার লড়াইয়ে জাপানের নাওমি ওসাকার কাছে হেরে যান। গত মাসে উইম্বলডনেরও ফাইনাল খেলেন আমেরিকান টেনিসের এই কৃষ্ণকলি। এবারও সেই ফাইনালে হারার স্বপ্নভঙ্গ। সিমোনা হ্যালেপের কাছে হেরে অপেক্ষাটা আরও বেড়ে যায় তার। টেনিসে সর্বোচ্চ ২৪ গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের রেকর্ড মার্গারেট কোর্টের দখলে। তাকে স্পর্শ করতে আর মাত্র আরেকটি মেজর শিরোপার প্রয়োজন। বারবার তীরে এসে তরী ডুবাচ্ছেন সেরেনা। মৌসুমের শেষ গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট ইউএস ওপেনে এবার পারবেন কী বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সাবেক এই নাম্বার ওয়ান? সেই পথে সেরেনার বড় বাধা আন্দ্রেস্কু। কানাডার প্রথম প্রমীলা খেলোয়াড় হিসেবে ইউএস ওপেনের ফাইনাল খেলছেন তিনি। শুধু তাই নয়, ২০০৯ সালের পর সবচেয়ে কমবয়সী খেলোয়াড় হিসেবে এই টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল খেলা তরুণীও আন্দ্রেস্কু। বিয়ান্কার জন্ম ২০০০ সালের ১৬ জুনে। অর্থাৎ সেরেনা যখন তার ক্যারিয়ারের প্রথম মেজর শিরোপা উঁচিয়ে ধরেন তখন জন্মই হয়নি বিয়ান্কার। ওপেন যুগে ১৯৬৮ সালের পর দুই ফাইনালিস্টের মধ্যে এত বয়সের ব্যবধান এর আগে কখনই দেখেনি বিশ্ব। টেনিস বিশ্বে গত দুই দশক ধরেই দাপট দেখাচ্ছেন সেরেনা। এই সময়ে ৩২ বার গ্র্যান্ডস্লামের ফাইনালে উঠেছেন তিনি। আগামীকাল রবিবার যে রেকর্ডটা বেড়ে দাঁড়াবে ৩৩-এ। এই ২০ বছরে মহিলা এককের মোট গ্র্যান্ডস্লাম শিরোপার ২৯ শতাংশই জিতেছেন সেরেনা। যে কারণে সেরেনাকেই বলা হচ্ছে সর্বকালের সেরা। কেননা এমন কীর্তি যে নেই আর কারও। তবে তরুণী আন্দ্রেস্কুর বিপক্ষে হিসেব মেলানোর বাকি আছে সেরেনার। গত মাসে এই বিয়াঙ্কা আন্দ্রেস্কুর বিপক্ষে রজার্স কাপের এক ম্যাচে চোটে পড়ে বিদায় নিয়েছিলেন সেরেনা। এরপর আর কোন ম্যাচে হারেননি আন্দ্রেস্কু। এই সময়ে টানা ১২ ম্যাচ অপরাজিত থেকেছেন ১৯ বছরের এই তরুণী। আসল পরীক্ষাটা দিতে হবে সেরেনার বিপক্ষেই। সেক্ষেত্রে আন্দ্রেস্কু অনুপ্রেরণা নিতে পারেন গত মৌসুমের এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল থেকে। সেবার সেরেনাকে হারিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম মেজর শিরোপা জেতেন নাওমি ওসাকা। জাপানের তরুণ এই প্রতিভাবান খেলোয়াড় পরে গড়েছেন টানা দুই মেজর শিরোপা জয়ের রেকর্ডও। পাশাপাশি র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানটাও দখল করেন তিনি। তবে আন্দ্রেস্কু কী পারবেন সেরেনাকে হারাতে? নাকি কানাডিয়ান তারকাকে হারিয়ে মার্গারেট কোর্টকে স্পর্শ করবেন সেরেনা? টেনিসপ্রেমীদের অপেক্ষা এখন সেটাই দেখার।
×