ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ঝিনাইদহে পাকাবাড়ি পেয়ে খুশি ৫৫ পরিবার

প্রকাশিত: ১২:১০, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ঝিনাইদহে পাকাবাড়ি পেয়ে খুশি ৫৫ পরিবার

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝিনাইদহ, ৫ সেপ্টেম্বর ॥ সদর উপজেলার পাগলা কানাই ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা বিধনা সাথী সরকার। অভাবের সংসার। কয়েক বছর আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর ২ সন্তান নিয়ে খাস জমিতে এতদিন খুপড়ি ঘরে বসবাস করে আসছিলেন। স্বপ্ন ছিল একদিন পাকাবাড়ি নির্মাণ করার। কিন্তু স্বামী চলে যাওয়া আর অভাবের কারণে পাকা ঘর তো দূরের কথা ভাল একটি টিনের ঘরও নির্মাণ করতে পারেনি। তবে তার স্বপ্ন এখন সত্যি হয়েছে। সদর উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তাকে নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে রঙ্গিন পাকাবাড়ি। সরকারের গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের আওতায় টিনেরবাড়ি দেয়ার কথা থাকলেও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় নির্মাণ করে দিয়েছেন পাকাবাড়ি; যা সাথী সরকারের একদিন স্বপ্ন ছিল। আবেগ আল্পুত হয়ে তিনি বলেন, আমি পাকাবাড়িতে থাকতে পারব এমনটা কোনদিন ভাবতেও পারিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দেয়ার ভাষা যেন হারিয়ে ফেলেছি। সেই সঙ্গে ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী ইসলাম। সাথী সরকারের মতো পাকাঘর পেয়ে খুশি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পাগলা কানাই, মধুহাটি, কুমড়াবাড়িয়া ও দোগাছী ইউনিয়নের ৬টি গুচ্ছগ্রামের ৫৫টি গৃহহীন পরিবার। মাত্র দেড়লাখ টাকায় একটি ইটের পাকাঘর, বারান্দা ও একটি পাকা টয়লেট তৈরি করা হয়েছে। যে টাকায় অনেক উপজেলায় চারপাশে টিনের বেড়া দিয়ে তৈরি করা ঘর গৃহহীন পরিবারকে দেয়া হলেও সদর উপজেলার ৬ টি গুচ্ছগ্রামে দেয়া হয়েছে পাকাবাড়ি। আর এই কাজে সার্বিক তদারকি করেছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী ইসলাম ও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা শুভাগত বিশ্বাস। ৫৫ টি গৃহহীন পরিবার কখন স্বপ্নেও ভাবেনি তারা পাকাঘরে ঘুমাবেন। গৃহহীন পরিবারগুলো পাকাঘর পেয়ে দারুণ খুশি। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা শুভাগত বিশ্বাস জানান, সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের চান্দুয়ালী, কুমড়াবাড়ীয় ইউনিয়নের লেবুতলা, কুমড়াবাড়ীয়া ও দোগাছী ইউনিয়নের কলমনখালী গ্রামে ৬ টি গুচ্ছগ্রাম তৈরি করা হয়েছে। যেখানে ৫৫ টি ভূমিহীন পরিবারকে বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা সুনীল সরকার জানান, তার কোন জমি ছিল না। অন্যের জমিতে কাজ করে সংসার চালান তিনি। জীবনে কোনদিন স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি তিনি পাকা দালান ঘরে ঘুমাবেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী ইসলাম বলেন, ৪টি ইউনিয়নের ৬টি গুচ্ছগ্রামে ৫৫টি পরিবারকে পাকা ঘর তৈরি করে দেয়া হয়েছে। প্রত্যেকটি ঘরের মেজে পাকা-উপরে টিন এবং একটি পাকা টয়লেট তৈরি করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ঘরগুলো কালার করে দেয়া হয়েছে। একটি ঘর ও টয়লেট তৈরি করতে দেড়লাখ টাকা করে ব্যয় করা হয়েছে। ঘরগুলো পেয়ে সত্যিই গৃহহীন পরিবারগুলো দারুণ খুশি। বৃহস্পতিবার সকালে পাগলা কানাই ইউনিয়নের গিলাবাড়ীয়া একতা গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দাদের কাছে ঘরগুলো হস্তান্তর করা হয়। সে সময় জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আব্দুর রশিদ, নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী ইসলাম, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আরতি দত্ত, সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম সরওয়ার, পাগলা কানাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
×