ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মা খননের চার কোটি টাকা পানিতে

প্রকাশিত: ১২:০২, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

পদ্মা খননের চার কোটি টাকা পানিতে

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহীর পদ্মা খনন প্রকল্পের ১২ কোটি টাকা ফেরত গেছে মন্ত্রণালয়ে। বাকি চার কোটি টাকা পড়েছে পানিতে। মেয়াদের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় প্রকল্পটি ব্যর্থ হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজশাহী নগরীর বুলনপুর থেকে সোনাইকান্দি এলাকায় পদ্মার ভাঙ্গন থেকে রক্ষায় একটি প্রকল্প হাতে নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ প্রকল্পের আওতায় পদ্মা নদীর ছয় কিলোমিটার চর কেটে নাব্য ফেরাতে ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হয় চলতি বছরের এপ্রিলে। তখন পদ্মায় পানি ছিল কম। এরপর থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব ড্রেজারে কাজ চলে প্রায় আড়াই মাস। কিন্তু দেরিতে শুরু হওয়া কাজ অর্ধেক শেষ হওয়ার আগেই উজান থেকে পানির ঢল আসা শুরু হয়। এতে ফুলেফেঁপে ওঠে পদ্মার বুক। ফলে কাজ গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে পদ্মা খননের জন্য এই প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছিল ১৬ কোটি টাকা। এরমধ্যে ২ হাজার ৭০০ মিটার খনন হয়েছে। এতে খরচ দেখানো হয়েছে চার কোটি ১৪ লাখ টাকা। বাকি প্রায় ১২ কোটি টাকা ফেরত গেছে। রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সাহিদুল আলম জানান, নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কের সামনের অংশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব ড্রেজার দিয়েই কাজ চলছিল। কিন্তু পদ্মায় আগাম পানি চলে আসায় কাজ গুটিয়ে নিতে হয়েছে। ইতোমধ্যে জুনে প্রকল্প মেয়াদও শেষ হয়েছে। তবে মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। এদিকে, সরকারী টাকার অপচয় ঠেকাতে নদী শাসনের মতো ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্পগুলোর মেয়াদের দিকে সতর্ক নজর রাখা জরুরী ছিল বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, উজান থেকে আসা পলিতে পদ্মার বুক অন্তত ২০ মিটার করে ভরাট হয়ে গেছে। এ অবস্থায় মাত্র ৬ কিলোমিটার ড্রেজিং করে প্রবাহ ফেরানোর চেষ্টা কেবলই লোক দেখানো। তারপরও ইতোমধ্যে সেখানে যে চার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে তা পুরোটাই পানিতে গেছে বলে মনে করেন তিনি। সরকারের পানি বিষয়ক টাস্কফোর্সের সদস্য ও রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. চৌধুরী সারোয়ার জাহান স্বজন বলেন, অসময়ে কাজ শুরু করায় গচ্ছা গেছে প্রকল্পটির মোটা টাকা। তাই সরকারী টাকার এমন অপচয় রোধে নদী শাসনের মতো ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে উপযুক্ত সময় বেছে নেয়া জরুরী। তা না হলে সরকারের কেবল টাকাই খরচ হবে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হবে না।
×