ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দুদকের মামলা

পাবনায় মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সনদে তিন সন্তানের চাকরি

প্রকাশিত: ০৯:১৪, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

পাবনায় মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সনদে তিন সন্তানের চাকরি

নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা, ৩ সেপ্টেম্বর ॥ ডাঃ মোঃ ইসমাইল হোসেন মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও ভুয়া সনদ বানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় দুই ছেলে ও এক মেয়ের সরকারী চাকরি বাগিয়ে নিয়েছেন। তার ২ ছেলে মোঃ সালাহউদ্দিন আল-মামুন ও মোঃ শাহাবউদ্দিন পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পদে এবং মেয়ে মোছাঃ রুখসানা ইয়াসমিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি নেন বাবার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদে। মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সনদে ৩ সন্তানের চাকরি নেয়ার অভিযোগ আসে দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে। দুদক অনুসন্ধানে দেখে ডাঃ মোঃ ইসমাইল হোসেনের ৫২৭৯৯ ক্রমিক নং মুক্তিযোদ্ধার সনদে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান আব্দুল আহাদ চৌধুরীর যে স্বাক্ষর রয়েছে সেটা জাল। যা ২০০১ সালের ১২ জানুয়ারি ইস্যু দেখানো হয়। এমনকি বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের রেজিস্টারে তার কোন নাম বা তথ্য নেই। অন্যদিকে ২০১২ সালের ২৮ জুন তার ছেলে মোঃ সালাহউদ্দিন আল-মামুন সাব-ইন্সপেক্টর অব পুলিশ পদে নিয়োগের জন্য রাজশাহী রেঞ্জ উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক বরাবর আবেদনপত্রে অন্যান্য কাগজপত্রের সঙ্গে তার পিতা ডাঃ মোঃ ইসমাইলের নামে মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সনদ দাখিল করেন। ওই সনদ দেখিয়ে মামুন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ২০১৩ সালের ১৭ নবেম্বর পুলিশ হেডকোয়ার্টারে ও ক্যাডেট এসআই হিসেবে সারদা পুলিশ একাডেমিতে যোগদান করেন। এরপর ২০১৪ সালের ৩ ডিসেম্বর এসআই হিসেবে বগুড়ার গাবতলী মডেল থানায় যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি নওগাঁয় আত্রাই থানায় কর্মরত। একইভাবে ডাঃ ইসমাইল হোসেনের অপর সন্তান ও মোঃ সালাহ উদ্দিন আল-মামুনের ভাই মোঃ শাহাব উদ্দিন ২০১২ সালের ১ জুলাই পিতার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার এ সনদ দেখিয়ে সাব-ইন্সপেক্টর অব পুলিশ পদে নিয়োগের জন্য আবেদন করেন। ২০১৫ সালের ২২ ডিসেম্বর সাব-ইন্সপেক্টর পদে স্থায়ী নিয়োগ পান। বর্তমানে তিনি রাজশাহীর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে কর্মরত। মেয়ে মোছাঃ রুখসানা ইয়াসমিন বাবার জাল সনদ দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ পান বলে অনুসন্ধানে প্রমাণ পায় দুদক। এ অবস্থায় জাল মুক্তিযোদ্ধা সনদ সংগ্রহ, তৈরি এবং জেনে শুনে ভুয়া সনদকে খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় চাকরি নিয়ে ও চাকরিতে কর্মরত থেকে বেতন-ভাতা ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধাদি গ্রহণ করে ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/ ৪৭১/১০৯ দ-বিধি এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে প্রমাণ পাওয়ায় কমিশনের অনুমোদনক্রমে গত ২৮ আগস্ট পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
×