ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অগ্নিপরীক্ষায় বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১০:১২, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অগ্নিপরীক্ষায় বাংলাদেশ

ঁজাহিদুল আলম জয় ॥ স্বর্ণালি অতীত ফিরিয়ে আনার হাতছানি দেশের ফুটবলে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল ভাল খেলার ধারাবাহিকতা দেখিয়েছে। এ ধারাটা ধরে রেখে এবার বড় অর্জনের পালা। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ বাছাই ও ২০২৩ এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে মিশন শুরু করতে যাচ্ছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এই মিশনে সফল হতে পারলে সেটা নিশ্চিত করেই দেশের ফুটবলে সেরা সাফল্য হয়ে থাকবে। মিশনটা কঠিন হলেও অগ্নিপরীক্ষায় সফল হতে চান ফুটবলাররা। দৃঢ় সংকল্প ও তরতাজা মানসিকতা নিয়ে রবিবার দেশ ছেড়েছে জাতীয় ফুটবল দল। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাই শুরু করবে কোচ জেমি ডে’র দল। নিরাপত্তা শঙ্কা থাকায় ম্যাচটি হবে নিরপেক্ষ ভেন্যু তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে। এ লক্ষ্যেই গতকাল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাজিকিস্তানের উদ্দেশে উড়াল দিয়েছে জামাল ভুঁইয়ার দল। মূল ম্যাচের আগে ৩ ও ৫ সেপ্টেম্বর স্থানীয় এফসি কুকটোস ও সিএসকে পামিরের বিরুদ্ধে দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে লাল-সবুজের দেশ। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ খেলছে ‘ই’ গ্রুপে। গ্রুপের অন্য চার দল আফগানিস্তান, কাতার, ভারত ও ওমান। হোম ও এ্যাওয়েভিত্তিতে প্রতিটি দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে দুইবার করে মুখোমুখি হবে। দেশ ছাড়ার আগে কঠিন পরীক্ষায় সফল হওয়ার প্রত্যয়ের কথা শুনিয়েছেন ফুটবলাররা। উঠতি মিডফিল্ডার রবিউল হাসান বলেন, তাজিকিস্তানে আমরা ভাল কিছু করার লক্ষ্যে যাচ্ছি। আমরা জানি বিশ্বকাপ বাছাই অনেক কঠিন পরীক্ষা। এটা দেশের ফুটবলকে জাগিয়ে তুলতে নতুন চ্যালেঞ্জ। কঠিন এই পরীক্ষায় দেশের সব ফুটবলপ্রেমীর সমর্থন চাই। আশাকরি আমরা সফল হতে পারব। ধারাবাহিক পারফর্মেন্স প্রদর্শন করে দেশের ফুটবলে অল্প সময়েই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন রবিউল। তার গোলেই লাওসকে হারিয়ে বিশ্বকাপ বাছাই নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। ওই স্মৃতি স্মরণ করে রবিউল বলেন, লাওসের বিরুদ্ধে ম্যাচটি ছিল আমার জন্য বিশেষ। ওই ম্যাচের মতো বিশ্বকাপ বাছাইতেও বিশেষ কিছু করার স্বপ্ন দেখছি। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করব। ভাগ্যে যদি থাকে তাহলে ভাল কিছুই হবে বলে আশাকরি। অগ্নিপরীক্ষার মিশন সামনে রেখে শনিবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ২৩ সদস্যের চূড়ান্ত দল ঘোষণা করেছে। প্রাথমিকভাবে ২৫ জন খেলোয়াড় নিয়ে শুরু হয়েছিল ক্যাম্প। পরে গোলরক্ষক মাজহারুল ইসলাম হিমেলকে ডাকলে সদস্য হয় ২৬ জন। সেখান থেকে ৩ জনকে বাদ দিয়ে ২৩ সদস্যের দল তৈরি করেছেন কোচ জেমি ডে। বাদ পড়েছেন পরে ডাক পাওয়া হিমেল, ডিফেন্ডার নুরুল নাইয়ুম ফয়সাল ও মনজুরুর রহমান মানিক। তবে চোট থাকার পরও দলে জায়গা পেয়েছেন ঢাকা আবাহনীর দুই ফুটবলার মামুনুল ইসলাম ও জুয়েল রানা। কোচ জেমি ডে’র দলে আছেন তিন গোলরক্ষক, সাতজন ডিফেন্ডার, আটজন মিডফিল্ডার ও পাঁচজন ফরোয়ার্ড। দেশ ছাড়ার আগে কোচ জেমি ডে’ও ইতিবাচক কথা শুনিয়েছেন। ইংলিশ এই কোচ বলেন, দশদিন অনুশীলন করেছি। খেলোয়াড়দের ফিটনেস খুব ভাল দেখেছি। তারা খুব ইতিবাচক। টিম স্পিরিট ভাল আছে। আমি আফগানিস্তান ম্যাচের দিকে তাকিয়ে আছি। তারা আমাদের চেয়ে এগিয়ে। কিন্তু ফুটবল দুই দলের খেলা। কারও বাজে দিন এলে প্রতিপক্ষ জিতে যেতে পারে। আমরা যদি আত্মবিশ্বাস নিয়ে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী সেরাটা খেলতে পারি তাহলে জয় সম্ভব। জেমি আরও বলেন, শুধু আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে নয়, আমাদের ভাল খেলার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে বাছাইয়ের পুরোটা সময়। কাতার, থাইল্যান্ডে আমরা এর আগেও যাদের সঙ্গে খেলেছি, তারা আমাদের চেয়ে শক্তিশালী ছিল। কিন্তু এটা কোন বড় ইস্যু নয়। এই সুবিধা কাজে লাগে শুধু সেট পিসের সময়, বিশেষ করে খেলোয়াড়রা যদি দীর্ঘদেহী হয়। খেলা ১১ জন বনাম ১১ জন। আমার বিশ্বাস ছেলেরা ভাল লড়াই করবে। বাংলাদেশ দল ॥ গোলরক্ষক-আশরাফুল ইসলাম রানা, শহিদুল আলম সোহেল, আনিসুর রহমান জিকু, ডিফেন্ডার-বিশ্বনাথ ঘোষ, টুটুল হোসেন বাদশা, সুশান্ত ত্রিপুরা, রহমত মিয়া, ইয়াসিন খান, রিয়াদুল হাসান, ইয়াসিন আরাফাত, মিডফিল্ডার-মাসুক মিয়া জনি, জামাল ভুঁইয়া (অধিনায়ক), মামুনুল ইসলাম, সোহেল রানা, রবিউল হাসান, বিপলু আহমেদ, আরিফুর রহমান ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম, ফরোয়ার্ড-নাবিব নেওয়াজ জীবন, মাহবুবুর রহমান সুফিল, মতিন মিয়া, সাদ উদ্দিন ও জুয়েল রানা।
×