ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উচ্ছেদ নিয়ে তাজমহল রোডে সংঘর্ষ ॥ এলাকা রণক্ষেত্র

প্রকাশিত: ১০:০১, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 উচ্ছেদ নিয়ে তাজমহল রোডে সংঘর্ষ ॥ এলাকা রণক্ষেত্র

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর মোহাম্মদপুরে তাজমহল রোড পার্কে অবৈধভাবে গড়ে তোলা স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান স্থানীয়দের বাধার মুখে পড়ে। অভিযানকারীদের সঙ্গে মাদ্রাসার ছাত্রদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ঢিল ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটেছে। এক পর্যায়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রবিবার দুপুরে ঢাকা উত্তরের দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একটি দল তাজমহল রোডের সি-ব্লকের খেলার মাঠ ও পার্কের দক্ষিণ-পশ্চিম কোনায় থাকা টিনশেড ঘর উচ্ছেদ করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। তাজমহল রোড মাঠের একাংশের এই টিনশেড ঘরটি জামি’আ বাইতুল আমান মিনার মসজিদ ও ইসলামী কেন্দ্রের রান্না ঘর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। ঘরটি ভাঙতে গেলে মাদ্রাসার ছাত্ররা প্রথমে গরম পানি, মরিচের গুঁড়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে মাদ্রাসা ছাত্রদের এক পর্যায়ে ধাওয়া দিলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। মাদ্রাসা ছাত্রদের অভিযোগ ইটের আঘাতে তাদের এক ছাত্র আহত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আধা ঘণ্টা ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার পর পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ডিএনসিসির কর্মকর্তা, পুলিশ ও মাদ্রাসার ছাত্রদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। বেলা সাড়ে বারোটার দিকে আধাপাকা ওই ঘরটি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। এ সময় ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদ আনোয়ার সাংবাদিকদের জানান, রাজধানীর মাঠ ও পার্ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় তাজমহল রোড মাঠেরও সৌন্দর্যবর্ধন ও সংস্কার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে নব্বই শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আমরা ছয় মাস আগে থেকেই মাদ্রাসা কমিটির লোকজনকে বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেছি। আলাদা জায়গায় রান্নাঘর করে দেয়ার প্রস্তাবও দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা মানেনি। এজন্য আজ উচ্ছেদে নামতে হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদ আনোয়ার জানান, উচ্ছেদ অভিযানকালে মাদ্রাসা কমিটির লোকজন ছাত্রদের উস্কে দিয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের লোকজন চলে যাওয়ার পর আবার দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় মাঠে থাকা নির্মাণ সামগ্রী ভাংচুর করা হয়। ঠিকাদারের অস্থায়ী কার্যালয়ও ভেঙ্গে ফেলা হয়। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল ইসলাম রতন জানান, মাদ্রাসা ছাত্ররা পার্কের নির্মাণ সামগ্রী লুট করে নিয়ে গেছে। ‘ইগো প্রবলেমে‘ মকবুল সাহেব এই কাজে বাধা দিচ্ছে। তিনি মসজিদ কমিটির সভাপতি। আমরা তাদের বলেছি, ঘরটা যেহেতু অবৈধ এটা সরিয়ে নিন। আমরা বিকল্প জায়গায় ভবন করে দিই। উনি নিজেও মেয়রের সঙ্গে কয়েকবার কথা বলেছেন। কিন্তু তারা কোন কথাই শুনছেন না। উনি (মকবুল সাহেব) সেখানে ছিলেন বলে মাদ্রাসার ছাত্ররা হামলা করার সাহস পেয়েছে। আজ যে ওরা ঘটনা ঘটিয়েছে, এরপরে কী হবে আমি জানি না। অন্যদিকে মসজিদ ও মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি সাবেক সাংসদ মকবুল হোসেন দাবি করেন, ওই মাঠের মালিক সিটি কর্পোরেশন নয়। আমরা এত বেকুব নই যে, কর্পোরেশনের মাঠ দখল করে সেখানে মাদ্রাসা বানাব। এটা গণপূর্তের জায়গা, আমরা ৭২ সাল থেকে এটা ব্যবহার করছি। এটা কমিশনার রতন ও মেয়র আতিককে বলা হয়েছে। আতিক আমাকে জানিয়েছিল এটা ভাঙ্গা হবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও তারা ভুল বুঝিয়েছে, তারা নাকি রাস্তা উচ্ছেদ করতে এসেছে। সাবেক এমপি মকবুল জানান, মাদ্রাসার ছেলেদের ঘর অন্যায়ভাবে ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন খাওয়ার ঘর ভেঙ্গে দেয়া কি উচিত হয়েছে?
×