ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সামার এ্যাথলেটিক্সের হাইজাম্পে নতুন রেকর্ড চ্যাম্পিয়ন নৌবাহিনীর শুভর

প্রকাশিত: ১২:০০, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

সামার এ্যাথলেটিক্সের হাইজাম্পে নতুন রেকর্ড চ্যাম্পিয়ন নৌবাহিনীর শুভর

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘যার রেকর্ড ভেঙ্গেছি সেই সজিব হোসেন ভাই সঙ্গে সঙ্গেই আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। নেভির অন্য সতীর্থরাও আমাকে অভিনন্দন জানিয়েছে।’ কথাগুলো মাহফুজুর রহমান শুভর। শনিবার জাতীয় সামার এ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় তিনি হাইজাম্পে গড়েছেন নতুন জাতীয় রেকর্ড। নৌবাহিনীর হয়ে সজিব ২.১১ মিটার উচ্চতায় লাফিয়ে রেকর্ড গড়েছিলেন ২০১০ সালে। এবার মাহফুজুর তার রেকর্ড ভাঙ্গলেন ২.১৫ মিটার উচ্চতায় লাফিয়ে। এ জন্য চার মাস প্রস্তুতি নিয়েছেন তিনি। তার কোচ ছিলেন সাবেক তারকা জাতীয় এ্যাথলেট ফৌজিয়া হুদা জুঁই। অনুশীলনে শুভ সর্বোচ্চ লাফিয়েছেন ২.১০ মিটার। জাতীয় প্রতিযোগিতায় লাফালেন এরচেয়েও বেশি দূরত্ব। এ প্রসঙ্গে তার ভাষ্য, ‘যখন জানলাম রেকর্ড ভেঙ্গেছি তখন অনেক আনন্দিত হয়েছি। কারণ নয় বছরের পুরনো রেকর্ড ভাঙ্গার আনন্দই আলাদা। সামনে এসএ গেমস আছে, সেখানে এরচেয়েও ভাল লাফাতে পারলে ভাল রেজাল্ট করতে পারব। সেই আসরে আমি স্বর্ণপদক জিততে চাই।’ কুষ্টিয়ার কুমারখালির পাইকপাড়ার কৃষক বাবা আবু বক্কর সিদ্দিক এবং গৃহিণী মা রূপনা খাতুনের একমাত্র সন্তান শুভ জনকণ্ঠকে বলেন, ‘আমার বাবা-মাকে স্বর্ণজয়ের খবর দিয়েছি। তারা অনেক খুশি হয়েছেন। আমাকে দোয়া করেছেন।’ ২০১৪ সাল। একদিন রেডিওতে খেলার খবর শুনছিলেন শুভর মা। ঢাকায় জাতীয় জুনিয়র এ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য প্রতিটি জেলা ক্রীড়া সংস্থা নতুন এ্যাথলেট নেবে। মায়ের কথায় শুভ কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার জিয়া স্যারের (কুষ্টিয়া ইসলামিক কলেজ এ্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক) সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার মাধ্যমেই ঢাকায় খেলতে আসেন শুভ। হাইজাম্পে রৌপ্যপদক লাভ করেন। নজরে পড়েন নৌবাহিনীর কোচ রফিকুল ইসলামের। তিনিই শুভকে নৌবাহিনীতে নিয়ে এলেন। সেটা ২০১৫ সাল। ২০১৮ সালে সেখানে স্থায়ী চাকরি হয় শুভর। ‘রফিক স্যারের অধীনে ট্রেনিং নিয়ে আমার ব্যাপক উন্নতি ঘটে। উনিই আমাকে সবকিছু শিখিয়েছেন। এরপর সিনিয়র সামার জাতীয় এ্যাথলেটিক্স আসরে হাইজাম্পে রৌপ্য পাই। স্বর্ণ পান সজিব ভাই। এরপর ২০১৬ সালে এসএ গেমসের ক্যাম্পে ডাক পাই। ট্রায়ালে আমি প্রথম হই। রফিক স্যারই জাতীয় দলের কোচ হন। এসএ গেমসে অল্পের জন্য ব্রোঞ্জ পাইনি। চতুর্থ হই (২.০০ মিটার)। এরপর ঢাকায় ফিরেই কঠোর অনুশীলন করি এবং জাতীয় আসরে অংশ নিয়ে ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো স্বর্ণপদক পাই।’ স্মৃতিচারণ শুভর। সবমিলিয়ে জাতীয় এ্যাথলেটিক্সে হাইজাম্পে মোট ৫টি স্বর্ণজয় করলেন শুভ। এছাড়া ৩টি রৌপ্যও জিতেছেন। চ্যাম্পিয়ন নৌবাহিনী ॥ শনিবার পর্দা নামলো জাতীয় সামার এ্যাথলেটিক্সের পঞ্চদশ আসর। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রধান অতিথি হিসেবে সমাপনী ঘোষণা করেন এ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সভাপতি এএসএম আলী কবীর। এই আসরে ১৯ স্বর্ণ, ১৫ রৌপ্য ও ১২ তাম্রপদক পেয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ১৪ স্বর্ণ, ১৭ রৌপ্য ও ১০ তাম্রপদক পেয়ে রানার্সআপ হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ১ স্বর্ণ, ২ রৌপ্য ও ২ তাম্রপদক পেয়ে তৃতীয় হয়েছে বিজেএমসি। এই আসরে ৪টি নতুন জাতীয় রেকর্ড হয়। ৩টিই নৌবাহিনীর। ২০০ মিটার দৌড়ে (মহিলা) শিরিন আক্তার (২৪.৯৭ সেকেন্ড), হাইজাম্প (পুরুষ) মাহফুজুর রহমান ২.১৫ মিটার এবং ৪ গুণিতক ১০০ মিটার রিলে (মহিলা) ৪৮.২৯ সেকেন্ড।
×