ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভাণ্ডারিয়ায় বখাটের কবল থেকে রক্ষা পেতে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

প্রকাশিত: ১১:২০, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ভাণ্ডারিয়ায় বখাটের কবল থেকে রক্ষা পেতে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা, পিরোজপুর, ৩১ আগস্ট ॥ পিরোজপুরের ভা-ারিয়ায় বখাটের উৎপাতে ওষুধ খেয়ে শুক্রবার রাতে আত্মহত্যা করে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রুকাইয়া আক্তার রুপা (১৫)। এদিকে স্কুলছাত্রী রুপাকে উত্ত্যক্ত করায় তামিম খানকে (১৮) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মঠবাড়িয়া সার্কেল) মোস্তফা হাসান স্বপনের নেতৃত্বে শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় গ্রেফতার করা হয়েছে। রুপার মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বজনসহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দসহ অসংখ্য মানুষ ভিড় জমায়। এ সময় হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। বার বার মূর্ছা যান রুপার মা শান্তা বেগম এবং বলতে শোনা যায় তার সন্তানের মৃত্যুর জন্য দায়ী বখাটেদের ফাঁসি দেয়া হোক। এভাবে যেন আর কোন মায়ের কোল খালি না হয়। এ সময় সহপাঠীরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। স্থানীয় ও স্কুল সহপাঠী সূত্রে জানা গেছে বন্দর সরকারী বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী রুপা প্রতিদিনের ন্যায় শুক্রবার বিকেলে প্রাইভেট পড়ে সদরের টিএ্যান্ডটি রোডের নিজ বাসায় ফিরছিল। এ সময় স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডে রুপার সহপাঠীদের পথ অবরুদ্ধ করে তামিম খান ও তার আরও দুই সহযোগী। ভয়ে তারা দাঁড়িয়ে পড়লে তামিম রুপাকে তার সঙ্গে (তামিমের) জোর করে প্রেমের প্রস্তাবে রাজি হতে বললে রুপা তা প্রত্যাখ্যান করে। বার বার একই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়ায় তামিম তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বের করে একটি খারাপ ছবি দেখিয়ে রুপাকে বলে এর সঙ্গে তোমার ছবিজুড়ে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেব। এই হুমকি দিয়ে চলে যাওয়ার পর রুপা বাসায় ফিরে চুপচাপ থাকে। ধারণা করা হচ্ছে ওই ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়ার খবর জানতে পারে রুপা। জানার পরে রাতে সে তার রুমে ঢুকে ঘরে থাকা ওষুধ অতিরিক্ত পরিমাণে সেবন করে। নিহত রুপার বাবা থানা চত্বরে বসে সাংবাদিকদের জানান, তামিম দুই বছর আগে রুপাকে উত্ত্যক্ত করলে সে সময়ে থানায় মামলা করতে গেলে স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় তামিম অপরাধ স্বীকার করে ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ করবে না বলে মাফ চায়। দুই বছর পর ফের গত ৩/৪দিন ধরে ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। শুক্রবার বাসায় ফিরে ঘটনা পরিবারকে জানায় রুপা। বাবা ব্যবসায়ী রুহুল মুন্সি সন্ধ্যায় বাসায় গিয়ে তার স্ত্রী শান্তা বেগমকে মেয়ে রুপাকে ডাকতে বললে সে গিয়ে দেখে মেয়ের রুমের ভেতর থেকে আটকানো।
×