ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পাক-ভারত আলোচনা

প্রকাশিত: ০৯:১১, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

পাক-ভারত আলোচনা

পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে শুক্রবার কর্তারপুর সীমান্তে কারিগরি পর্যায়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ড. মোহাম্মদ ফয়সাল বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, জিরো পয়েন্ট হিসেবে পরিচিত সীমান্তে আলোচনা হয়েছে এবং এতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। খবর ডনের কর্তারপুর সাহিবের গুরুদুয়ারা ভ্রমণে ভারতীয় শিখদের জন্য ভিসামুক্ত করিডর নির্মাণ সম্পর্কিত বিষয়েই বেশি আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে করিডরের অবস্থান, সীমান্ত পারাপারের বিষয়ে সহযোগিতা বিনিময় ও অবকাঠামোর বিষয়ে কারিগরি পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। নবেম্বরে গুরু নানকের ৫৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রকল্পটি উদ্বোধনের কথা রয়েছে। অন্যান্য বিষয়ে আলোচনার জন্য দুপক্ষ শীঘ্রই ফের আলোচনায় বসবে। ৫ আগস্ট ভারত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে সেখানে দমন-নিপীড়ন শুরু করলে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। তারপরও পাকিস্তান এই করিডর প্রকল্পকে এই উত্তেজনার বাইরে রেখেছে। এছাড়া গত ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামা হামলার পর দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও সেটার প্রভাব পড়েনি এই প্রকল্পে। কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিলের পর ভারতের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে পাকিস্তান। যেমন কূটনৈতিক সম্পর্ক কমানো এবং বাণিজ্য ও রেল ও যোগাযোগ স্থগিত করা। এছাড়া ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশপথ বন্ধ করারও আশঙ্কা করা হচ্ছে। সাপ্তাহিক গণমাধ্যম ব্রিফিংয়ে বৃহস্পতিবার ড. ফয়সাল বলেন, বেশ কয়েকটি বিকল্প বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। কিন্তু কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। জানা গেছে করিডরটি উদ্বোধন করবেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কিন্তু উদ্বোধনের দিন ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কোনও মন্ত্রী সেদিন ওখানে উপস্থিত থাকবেন কিনা সে ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। যদিও ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কর্তারপুর করিডর নিয়ে প্রযুক্তিগত বিষয়ে আলোচনার জন্য আগামী মাসে আটারি সীমান্তে পাকিস্তানের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা বলা হয়েছিল। ভারতের সঙ্গে আলোচনায় পাকিস্তান যদি সম্মত হয় তাহলে এই নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তিনবার সরকারী বৈঠক বসতে চলেছে। কর্তারপুর নিয়ে এর আগে মার্চ এবং জুলাই মাসে দুবার পাক-ভারত বৈঠকে বসেছিল ভারত সরকার। জুলাই মাসে দুই দেশের এই সরকারী সম্মেলনে কর্তারপুর শহিদ করিডর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মিলিতভাবে গড়ে তোলা রাস্তা এবং প্রযুক্তিগত নানা বিষয়। ১৪ জুলাই দ্বিতীয়বার বৈঠকে বসে পাকিস্তান কর্তারপুর শহীদ করিডরে প্রবেশের জন্য একটি ব্রিজ বানাতে সম্মত হয়। যার ফলে ভারত থেকে আসা শিখ তীর্থযাত্রীরা এই ব্রিজটির সুবিধা নিতে পারেন। শুধু তাই নয় পাক প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, দুই দেশের মিলিত আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এই ব্রিজ তৈরি করা হবে যাতে, আপৎকালীন কোন দরকারে বা দুর্ঘটনা ঘটলে মেডিক্যাল সাহায্যের জন্য তাড়াতাড়ি এই ব্রিজ ব্যবহার করতে পারে সবাই। পাকিস্তান সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, যে করিডরটি তৈরি করা হচ্ছে সেটি ভারতের গুরুদাসপুর জেলা থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে এবং এটি উত্তর লাহোর থেকে প্রায় এক শ’ কুড়ি কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। যেখানে গুরুনানক ১৫৩৯ সালে তার মৃত্যুর আগে প্রায় আঠারো বছর থেকেছিলেন।
×