ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ডিএমপির ওয়ান স্টপ সার্ভিস

দু’বছরে ৫৭ হাজার ৭৭৭ বিদেশগামীকে ক্লিয়ারেন্স রিপোর্ট প্রদান

প্রকাশিত: ১০:০১, ৩১ আগস্ট ২০১৯

 দু’বছরে ৫৭ হাজার ৭৭৭ বিদেশগামীকে ক্লিয়ারেন্স রিপোর্ট প্রদান

আজাদ সুলায়মান ॥ চালু হওয়ার দু’বছরের মাথায় ৫৭,৭৭৭ জনের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স রিপোর্ট ডেলিভারি দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। প্রতিদিনই বাড়ছে এ সেবার চাহিদা। ডিএমপি সদর দফতরের নিচতলায় ওয়ান স্টপ সার্ভিস নামের এ সেবা নিতে প্রতিদিনই শত শত লোক সেখানে ভিড় জমাতে দেখা যায়। সপ্তাহের একমাত্র শুক্রবার ছাড়া বাকি সবদিনই দেয়া হয় এ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সেবা। সম্পূর্ণ অনলাইন ভিত্তিক এ সেবার আওতায় আপাতত শুধু ঢাকা মহানগরবাসীই এ সেবা নিচ্ছেন। এখানে শুধু বিদেশগামীদের প্রয়োজনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ টু আই প্রকল্পের আওতায় ২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারি বিদেশগামীদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স রিপোর্ট প্রদানে চালু হয় ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার। এডিসি হেড কোয়ার্টার্সের সরাসরি তত্ত্বাবধানে নগরবাসীর কল্যাণে এ সার্ভিস দেয়া হচ্ছে। এখানে এসে কেউ যাতে কখনও কোন ধরনের হয়রানি বা সেবা বঞ্চিত না হয় সেজন্য তিনি সর্বক্ষণিক কঠোর নজরদারিতে রাখেন এ কেন্দ্র। প্রতিদিনই এখানে কমপক্ষে দু’শতাধিক ব্যক্তির পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ডেলিভারি দেয়া হয়। অনলাইনে আবেদন করার ৭ কর্ম দিবসের মধ্যেই মিলছে এ সেবা। সাধারণত সকাল-সন্ধ্যায় পালাক্রমে ডিউটির মাধ্যমে ডিএমপির জনবল এখানে নগরবাসীকে জরুরী সেবা দিচ্ছে। যদিও অনেকেই এটাকে আরও সহজ করার পক্ষে মতামত দিচ্ছেন। গত শনিবার দুপুরে ধানম-ি থেকে আসা সুফি নামের এক যুবক জানান, তিনি আবেদন করার ৭ কর্মদিবসের মধ্যেই বার্তা পান তার রিপোর্ট ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত। তাই সশরীরে তিনি এখানে হাজির হয়ে হাতে হাতে রিপোর্ট সংগ্রহ করতে পেরে বেশ খূুশি। এখানকার কাজকর্ম ও সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা শিক্ষিত ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে মোটামুটি নলেজ রাখেন তাদের জন্য অনলাইনে দরখাস্ত করাটা কঠিন কিছু নয়। প্রথমেই ডিএমপি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পেজে গিয়ে ক্লিক করলে যে ফর্ম আসে তা পূরণ করার আগেই ব্যক্তিকে একটা এ্যাকাউন্ট করে লগইন করতে হয়। এ্যাকাউন্ট বলতে- নাম লিখে মোবাইল নম্বর লিখে লগইন করলেই হয়ে যায়। তারপর নাম, ঠিকানা, ভোটার বা জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর, স্থানীয় ও বর্তমান ঠিকানা, পাসপোর্ট ইস্যু ও ডেলিভারি তারিখ ও পাঁচ শ’ টাকার ব্যাংক চালানের নম্বর উল্লেখ করতে হয়। এসবের মধ্যে কমপক্ষে চারটি ডুকমেন্টের ফটোকপি স্ক্যান করে আপলোড করতে হয়। তারপর সেটা একসেপ্ট হলে সাত কর্মদিবসের মধ্যেই রেডি ফর ডেলিভারি নোটিস জানিয়ে দেয়া হয় ইমেইল বা মোবাইলে। রিপোর্ট গ্রহণের দুটো অপশন রয়েছে যা আবেদনের শর্ত হিসেবে পূরণ করতে হয়। সরাসরি নিজে এসে ওয়ান স্টপ সেন্টার থেকে হাতে হাতে বুঝে নেয়া অথবা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঘরে বসে গ্রহণ করা। রিশাদ নামের অপর এক যুবক জানান, তিনি হাজারীবাগ থানা এলাকা থেকে এসে রিপোর্ট হাতে হাতে গ্রহণ করেছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সেটা পেলেও তার ঠিকানা পরিবর্তন হওয়াতে কিছুটা জটিলতা সৃষ্টি হয়। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স রিপোর্টের আবেদন প্রক্রিয়া আরও সহজ করা যায় কিনা জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার দফতরের এডিসি পদমর্যাদার এক কর্মকতা জনকণ্ঠকে বলেন, বর্তমানে যে প্রক্রিয়ায় আবেদন করা হচ্ছে তাতে ন্যূনতম তথ্যাবলী চাওয়া হয়। আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য একটি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স রিপোর্ট তৈরিতে অনেক ধাপ রয়েছে। প্রথমত আবেদনের পর তার একটা কপি পাঠিয়ে দেয়া হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। সেখানে অবহিত করে মতামত নিয়ে আবার পুলিশ বিভাগে এনে তার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে হয়। সোনালী ব্যাংকের পে-অর্ডার বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সংযুক্তি করে আনতে হয়। প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন হয় সাত কর্মদিবসের মধ্যেই। গণমাধ্যমে যদি এ বিষয়ে যৌক্তিক কোম মতামত আসে সেটাও কর্তৃপক্ষ বিবেচনায় নিতে পারে।
×