ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুস্তাফিজকে ছাড়া বাংলাদেশ টেস্ট দল ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৯:৩১, ৩১ আগস্ট ২০১৯

 মুস্তাফিজকে ছাড়া বাংলাদেশ টেস্ট দল ঘোষণা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে একমাত্র টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে ৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ টেস্ট দল আফগানদের বিরুদ্ধে টেস্ট খেলতে নামবে। এ টেস্টের জন্য শুক্রবার ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ঘোষিত দলে নেই ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমান। দল ঘোষণার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত মুস্তাফিজের বাদ পড়া বোঝা যায়নি। দল ঘোষণার পর বোঝা গেল নেই তিনি। মুস্তাফিজকে ছাড়াই টেস্ট দল ঘোষণা তাই চমক হয়েই এসেছে। কন্ডিশনিং ক্যাম্পে পিঠে ব্যথা পাওয়ায় টেস্ট দলে নেই মুস্তাফিজ। তবে টেস্ট দলে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও পেসার তাসকিন আহমেদ। কেন মুস্তাফিজ নেই? সেই জবাব দিয়েছেন বিসিবির নির্বাচক কমিটির প্রধান মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। তিনি বলেছেন, ‘কন্ডিশনিং ক্যাম্পে পিঠে ব্যথা পেয়েছে মুস্তাফিজ। তবে সেটা সেভাবে আমলে নেয়া হয়নি। বৃহস্পতিবার সমস্যাটা ভালমতো খেয়াল করা গেল। যেহেতু একটি মাত্র টেস্ট। এরপর সাদা বলে তিনজাতি টি২০ সিরিজ এবং সামনে ভারত সফর আছে, তাই মুস্তাফিজকে নিয়ে আমরা কোন ধরনের ঝুঁকি নিতে চাই না।’ দলে কোন চমক নেই। নতুন কোন ক্রিকেটারও সুযোগ পাননি। পুরনোদেরই প্রাধান্য দিয়ে টেস্ট দল গড়া হয়েছে। দেশের মাটিতে ৯ মাস পর টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ। গত বছর নবেম্বরে সর্বশেষ দেশের মাটিতে টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। দেশের বাইরে অবশ্য এরপর এ বছর মার্চেই টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডে টেস্ট খেলেছে। তবে দেশের ভেতর নয়মাস পর খেলতে নামবে। একমাত্র টেস্ট খেলবে। যে টেস্টে বাংলাদেশকে জিততেই হবে। প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। যে দলটি দুটি মাত্র টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে বাংলাদেশে টেস্ট খেলতে এসেছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলবে। দলটির বিরুদ্ধে জয় ছাড়া অন্য কোন ফল মিললেই তুমুল সমালোচনা হবে। তিরস্কার মিলবে। জিতলে খুব যে প্রশংসা হবে তাও না। আফগানদের তো হারাবেই বাংলাদেশ, এমন যে ধারণা। এমন টেস্টের জন্য নতুন কাউকে সুযোগ দেয়া হয়নি। পুরনোদের ওপরই ভরসা রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ যে নিজেদের সর্বশেষ টেস্টটি খেলেছে এ বছর মার্চে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে, টেস্ট দল থেকে মুস্তাফিজ ও পেসার খালেদ আহমেদ শুধু বাদ পড়েছেন। আর তামিম ইকবাল তো বিশ্রাম নেয়ার জন্য বিসিবির কাছ থেকে ছুটি নিয়ে আফগানদের বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচটি থেকে নিজেকে আগেই সরিয়ে নিয়েছেন। টেস্ট দলে আবার সুযোগ পেয়েছেন সৈকত ও তাসকিন। ফিরেছেন সাকিব। যদিও তাসকিন সর্বশেষ টেস্ট সিরিজে শুরুতে ছিলেন। শেষ মুহূর্তে ইনজুরিতে বাদ পড়ে যান। দলের সঙ্গে তাসকিনের আর নিউজিল্যান্ড সফরে যাওয়া হয়নি। একই অবস্থা হয় সাকিবেরও। অধিনায়ক হিসেবে তারই সিরিজটি খেলার কথা ছিল। কিন্তু ইনজুরিতে আর খেলতে পারেননি। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ নেতৃত্বে ছিলেন। দেশের মাটিতে যে গত বছর নবেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শেষ টেস্টটি খেলেছে বাংলাদেশ, সেই টেস্টের দল থেকে ইমরুল কায়েস, আরিফুল হক, মুস্তাফিজ ও খালেদ বাদ পড়েছেন। তামিম সেই সিরিজে ইনজুরির জন্য খেলতে পারেননি। দলে খুব বেশি পরিবর্তন তাই আনা হয়নি বলা চলে। যারা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ছিলেন তাদেরই সুযোগ দেয়া হয়েছে। সৈকত যদি টেস্টের একাদশে থাকেন তাহলে গত বছর ফেব্রুয়ারির পর, ১৬ মাস পর টেস্ট খেলার সুযোগ পাবেন। তাসকিন এ বছর মার্চে টেস্টের দলে থেকেও শেষ মুহূর্তে ছিটকে পড়ায় এবার টেস্ট খেললে প্রায় দুই বছর টেস্ট না খেলার আক্ষেপ ঘুচবে। তামিম ইকবাল টেস্ট ম্যাচটি খেলবেন না। এমনকি টেস্ট ম্যাচটির পর যে ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজ অনুষ্ঠিত হবে সেই সিরিজও খেলবেন না। বিসিবির কাছ থেকে বিশ্রামের জন্য ছুটি নিয়েছেন তামিম। তার পরিবর্তে ওপেনিংয়ে খেলবেন কে? এ নিয়ে অনেক জল্পনা ছিল। সাদমান ইসলাম থাকছেন। কিন্তু তামিমের পরিবর্তে কে? এ প্রশ্নের জবাবও দল ঘোষণার সঙ্গেই মিলে গেল। অভিজ্ঞ জহুরুল ইসলাম অমি ও ইমরুল কায়েসের কথা অনেক শোনা গেলেও কেউই সুযোগ পাননি। শেষ পর্যন্ত সৌম্য সরকারই ভরসা হয়ে টেস্ট দলে আছেন। তবে নির্বাচকদের পছন্দের তালিকায় ছিলেন ইমরুল। কিন্তু ছেলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। ছেলেকে সুস্থ করতেই সময় দিচ্ছেন ইমরুল। তাই এ ওপেনারকে রাখা যায়নি। বাংলাদেশের টেস্ট দলটি ব্যাটিং, স্পিন ও পেস বিভাগ শক্ত রেখেই গড়া হয়েছে। তবে স্পিনে আধিক্য বেশি। ব্যাটসম্যান হিসেবে সৌম্য সরকার, সাদমান ইসলাম, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহীম, লিটন কুমার দাস, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ মিঠুন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মেহেদী হাসান মিরাজকে রাখা হয়েছে। সঙ্গে চার স্পেশালিস্ট স্পিনারের (সাকিব, তাইজুল, মিরাজ, নাঈম) সঙ্গে সৈকত ও তিন পেসার (আবু জায়েদ রাহী, তাসকিন আহমেদ, এবাদত হোসেন) নেয়া হয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, চট্টগ্রামের উইকেট যতই পেসারদের সুবিধামতো তৈরি করা হবে, বলা হোক; আসলে ব্যাটিং আর স্পিনই শেষ মুহূর্তে জয়ের জন্য ভরসায় থাকছে।
×