ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগের ৪ নেতার বিরুদ্ধে লাগানো ব্যানার নিয়ে তোলপাড়

প্রকাশিত: ০৯:১৯, ৩১ আগস্ট ২০১৯

 আওয়ামী লীগের ৪ নেতার বিরুদ্ধে লাগানো ব্যানার নিয়ে তোলপাড়

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ নগরীর বান্দরোড ভাটারখাল সংলগ্ন একটি ভবনে লাগানো ব্যানার নিয়ে নগরীতে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের জাতীয় শোক দিবসের শ্রদ্ধাঞ্জলির ব্যানারের নিচে লাগানো হয়েছে বিতর্কিত এ ব্যানারটি। এতে স্থানীয় চার আওয়ামী লীগ নেতার ছবি দিয়ে লেখা হয়েছে ‘সতর্কীকরণ, এরা আওয়ামী লীগের কেউ নয়’। এ ব্যানারটিরও প্রচারে উল্লেখ করা হয়েছে-১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ। সম্প্রতি লাগানো এ ব্যানারটি দৃষ্টি কেড়েছে ওই সড়কে যাতায়াতকারীদের। এ নিয়ে নগরীজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। জানা গেছে, যে চার আওয়ামী লীগ নেতার নাম ও ছবি ব্যবহার করা হয়েছে তারা সবাই দলের ত্যাগী কর্মী। এরমধ্যে দুইজন বীর মুক্তিযোদ্ধা একজন ‘৭৫-পরবর্তী আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের নেতা। ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগে নেতৃত্বের বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন ব্যানারটি লাগিয়েছে বলে ধারণা করছেন ভুক্তভোগীরা। ব্যানারের ছবিতে থাকা চারজন হলেন-মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন খোকন, মহানগর হকার্স লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম, ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জিলানী চৌধুরী এবং একই ওয়ার্ডের যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক আবুল হোসেন। সূত্রমতে, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে উল্লেখিত চার নেতা নিজেদের অনুসারী নেতাকর্মীদের নিয়ে নিয়মিত সভা করে আসছিলেন। ওই চার নেতা অভিযোগ করে বলেন, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ওয়ার্ডের সাধারণ নেতাকর্মীদের যোগাযোগ নেই। তাই ওয়ার্ডের সক্রিয় কর্মীরা জাতীয় শোক দিবস পালন নিয়ে তাদের সঙ্গে প্রস্ততি সভা করায় তাদের সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন খোকন বলেন-ওয়ার্ডের সাধারণ নেতাকর্মীরা শোকদিবস পালনের জন্য আমার কাছে এসেছিল। এটাই আমার অপরাধ। বৃদ্ধ বয়সে দল থেকে যে পুরস্কার পেয়েছি তাতে গলায় দড়ি দিয়ে মরতে ইচ্ছা করে। অপর মুক্তিযোদ্ধা হকার্স লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘৭৫ এর ট্র্যাজেডির পরের দুঃসময়ে দলের জন্য রাজনীতি করেছি। শেষ বয়সে এসে এভাবে অপমান হতে হবে জানলে কোনদিন রাজনীতি করতাম না। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জিলানী চৌধুরী বলেন, ওয়ার্ড কমিটি গঠন হয়েছে ১৯৯৮ সালে। তখন থেকে দলের এ পদে আছি। তিনদিন আগে ব্যানার লাগিয়ে জানিয়ে দেয়া হয়েছে আমি নাকি আওয়ামী লীগের কেউ নই। একইভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক আবুল হোসেন। এ বিষয়ে ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আহম্মেদ বলেন, ওই চারজন দলের মধ্যে ভিন্ন মতাবলম্বী। সবসময় দলের ক্ষতি করে। দলের নির্দেশে ব্যানার লাগানো হয়েছে। শোকের মাস আগস্টের পরে তারা বহিষ্কারের চিঠি পেয়ে যাবেন। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির প্রিন্স বলেন, আমি ব্যানারটি দেখিনি তবে শুনেছি। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল বলেন, ওয়ার্ড পর্যায়ের সমস্যা ওয়ার্ড নেতারাই ভাল বলতে পারবেন। তাদের (মহানগর আওয়ামী লীগ) এ বিষয়ে জানানো হয়নি। কাউকে বহিষ্কারও করা হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
×