ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সাকিব-রশীদের লক্ষ্য জয়

প্রকাশিত: ১১:৫৫, ৩০ আগস্ট ২০১৯

সাকিব-রশীদের লক্ষ্য জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টেস্টে খুব বেশিদিন হয়নি আফগানিস্তানের পথ চলা। ২০১৭ সালের জুনে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর মাত্র দুটি টেস্ট খেলেছে। বাংলাদেশের সেখানে টেস্ট অভিজ্ঞতা ১৯ বছরের। ১১৪টি টেস্ট খেলা হয়ে গেছে। স্বাভাবিকভাবেই টেস্টে আফগানিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। আবার আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে যে টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ, ৫ সেপ্টেম্বর শুরু হতে যাওয়া টেস্টটি হবে দেশের মাটিতে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশের পক্ষেই আছে সবকিছু। বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও তাই জয়ের দিকেই দৃষ্টি রাখছেন। অল্প টেস্ট খেলা হলেও বাংলাদেশের মাটিতে খেলতে হবে তা জেনেও আফগানিস্তানের নতুন টেস্ট অধিনায়ক রশীদ খানও জয়ের দিকেই নজর দিয়েছেন। সাকিব যেমন বলেছেন, ‘অভিজ্ঞতার কারণে চট্টগ্রাম টেস্টে আমরা এগিয়ে থাকব। প্রত্যেক ম্যাচেই আমরা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামি। আফগানিস্তানের বিপক্ষেও আমাদের একই লক্ষ্য।’ রশীদও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জে ফেলার কথাই বলেছেন। জানিয়েছেন, ‘আমরা প্রস্তুত বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে। আমরা জানি বাংলাদেশের মাটিতে গিয়ে বাংলাদেশকে হারানোটা কতটা কঠিন। কারণ দেশের মাটিতে বাংলাদেশ বেশ শক্ত প্রতিপক্ষ। কাজেই আমাদের কঠিন পরীক্ষার সামনে পড়তে হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। আর সে জন্যই আমরা নিজেদের সেরা প্রস্তুতি নেয়ার চেষ্টা করছি। কারণ বাংলাদেশে গিয়ে ভাল করতে হলে নিজেদের সেরা হিসেবে গড়ে তোলার কোন বিকল্প নেই।’ বাংলাদেশ দল টেস্ট ভেন্যু চট্টগ্রামে এখনও যায়নি। আফগানিস্তানও এখনও বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখেনি। আজ আসবেন আফগানরা। দুই দলই ১ সেপ্টেম্বর থেকে চট্টগ্রামে নিজেদের ঝালিয়ে নেয়া শুরু করে দেবে। একদিকে আফগানিস্তান দলটি খেলবে বিসিবি একাদশের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ। আরেকদিকে বাংলাদেশ দল প্রস্তুতি সারবে। তবে আফগানরা বাংলাদেশের কন্ডিশনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রচুর গরমে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আবুধাবিতে ঠিকই আটদিন অনুশীলন করেছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলবে আফগানিস্তান। ২০১৭ সালের জুনে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর ভারত ও আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট খেলেছে আফগানরা। ভারতের বিরুদ্ধে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে। আইরিশদের হারিয়েছে। এবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলবে আফগানিস্তান। আবুধাবিতে প্রস্তুতি শেষে বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখবে আফগানিস্তান ক্রিকেট দল। বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশ একটি সিরিজ খেলে ফেলেছে। শ্রীলঙ্কায় গিয়ে সিরিজ খেলেছে। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশও হয়েছে। আফগানিস্তান দলটি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টেস্ট দিয়েই বিশ্বকাপের পর আবার মাঠের খেলায় ফিরবে। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে যাচ্ছে তাই খেলেছে আফগানিস্তান। বিশ্বকাপে ব্যর্থতা ও দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকায় নতুন করে দল সাজিয়েছে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। বিশ্বকাপের পর দলে আমূল পরিবর্তনও আনা হয়েছে। তিন ফরমেটেই অধিনায়কের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে রশীদ খানকে। নিজের নেতৃত্বে প্রথম টেস্ট। রশীদ তাই মুখিয়ে আছেন। বলেছেন, ‘এর আগে আমরা ভারতের দেরাদুনে ট্রেনিং ক্যাম্প করতাম। বাংলাদেশের আবহাওয়া অনেক গরম, তাই আমরা এমন গরম আবহাওয়ার একটা জায়গা খুঁজছিলাম। এবার আবুধাবিকে বেছে নিয়েছি। এই ক্যাম্প আমাদের বাংলাদেশ সফরে কাজে দেবে। আমরা একটা দল হিসেবেই বাংলাদেশ সফরে যাচ্ছি। এটা আমাকে বাড়তি শক্তি যোগাবে।’ সাকিব অবশ্য আফগানিস্তান দলটি নিয়ে সতর্ক। দলটি বেশি টেস্ট না খেললেও উঠতি দল ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। আর তাই সাকিব ব্যক্তিগত নয়, দলগত নৈপুণ্যের দিকে জোর দিয়েছেন। চ্যালেঞ্জও দেখছেন, ‘দিন শেষে লক্ষ্য থাকে ম্যাচ জেতার। আমরাও ওই লক্ষ্যেই খেলব। চ্যালেঞ্জ তো থাকে সবসময়ই। আফগানিস্তান যেভাবে উন্নতি করেছে তাদের বিপক্ষে যে কোন ফরমেটে খেলা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জই। তাদের বেশ কিছু মানসম্পন্ন খেলোয়াড় আছে যারা আমাদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। আমাদের খুব ভাল ক্রিকেট খেলতে হবে। দল হিসেবে ভাল খেলতে হবে। ব্যক্তিগত দুই একটি পারফর্মেন্স দিয়ে জেতার সুযোগ খুব বেশি একটা থাকবে না। দলগতভাবেই ভাল খেলতে হবে।’ জয়ের আশা করলেও সাকিব সতর্কও করে দিয়েছেন। আর রশিদের তো তেমন ভয় নেই। টেস্ট ক্রিকেট খেলা নতুন শুরু করেছেন। শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে টেস্ট খেলতে নামলে হারের সম্ভাবনাই বেশি থাকে। তবে কোনভাবে যদি জয় বা ড্র ফল বের করা যায়, তাহলেই অনেক প্রশংসা মিলবে। প্রতিপক্ষের ঝুলিতে জুটবে তিরস্কার। রশীদ তাই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে প্রস্তুত। আর বাংলাদেশ জিততে প্রস্তুত।
×