ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এনজিও মুক্তির ছয় প্রকল্প বন্ধের নির্দেশ

প্রকাশিত: ১১:০১, ৩০ আগস্ট ২০১৯

এনজিও মুক্তির ছয় প্রকল্প বন্ধের নির্দেশ

মোয়াজ্জেমুল হক/এইচএম এরশাদ ॥ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে আতঙ্কিত উখিয়া টেকনাফসহ কক্সবাজার অঞ্চলের গোটা জনপদের মানুষ। শুধু সাধারণ মানুষ নয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সংস্থার মাঝেও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের উদ্বেগ উৎকণ্ঠা। এছাড়া কক্সবাজারের আগামী দিনগুলো রোহিঙ্গাদের কারণে কোন্্ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে তা নিয়েও বিভিন্ন মহলে উদ্বেগের কমতি নেই। এদিকে, রোহিঙ্গা বিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটি রোহিঙ্গা ইস্যুতে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। অর্থাৎ প্রশাসন আশ্রিত রোহিঙ্গাদের বেপরোয়া মনোভাবের কারণগুলো চিহ্নিত করে এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের কাছে দেশীয় অস্ত্র সরবরাহের উদ্যোগের বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ার কারণে বুধবার থেকে এনজিও সংস্থা মুক্তির ছয় প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে এনজিও ব্যুরো। গত বছর যে ৪১ এনজিওর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয় তন্মধ্যে মুক্তি অন্যতম। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এ এনজিওর কার্যক্রম অবাধে চলে আসছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত অন্যান্য এনজিও কার্যক্রমও দমন করা যায়নি। দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে আশ্রয় শিবিরগুলো কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তৃতীয়ত, ভিনদেশী অর্থাৎ মিয়ানমারের নাগরিক এসব রোহিঙ্গাদের প্রায় সকলের কাছে মোবাইল ও বাংলাদেশী সিম রয়েছে। শুধু একটি নয়, কারও কারও কাছে একাধিক সিম থাকার তথ্য রয়েছে। মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় থেকে আশ্রয় শিবিরগুলোতে রোহিঙ্গারা যত অপকর্ম ঘটাতে সক্ষম হচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে জাতীয় টাস্কফোর্স রোহিঙ্গাদের কাছে থাকা মোবাইল ও সিম কার্ড জব্দ করার উদ্যোগ নিয়েছে। চতুর্থত, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের কাছে থাকা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার আরও জোরদার করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের বেপরোয়া মনোভাবের নেপথ্যে কিছু এনজিওর ভূমিকা, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংগঠনের কিছু সশস্ত্র ক্যাডার আশ্রয় শিবিরে চলে আসার বিষয়সহ উখিয়া টেকনাফ অঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতি অবনতি রোধে অতি দ্রুত একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। এদিকে প্রশাসনের বিভিন্ন সূত্রে জানানো হয়েছে, গত ২২ আগস্ট প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া কেন ব্যর্থ হলো, এর পেছনে কারা ষড়যন্ত্র করেছে, ২৫ আগস্ট উখিয়ার কুতুপালং শিবিরে রোহিঙ্গাদের মহাসমাবেশ আয়োজনের নেপথ্যে জড়িতদের এ পর্যন্ত কাউকে কেন গ্রেফতার করা গেল না, এসব বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনার ঝড় উঠেছে। একটি বিষয় নিশ্চিত যে, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা দিনের বেলায় ছদ্মবেশে চলাচল করে। রাতের বেলায় হাতে তুলে নেয় আগ্নেয়াস্ত্র। তবে অত্যাচারিত হলেও জাতিগোষ্ঠী হিসেবে কোন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বা অস্ত্রধারীদের বিষয়ে সহজে মুখ খোলে না। উখিয়া টেকনাফের সূত্রসমূহ জনকণ্ঠকে জানায়, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে ওই অঞ্চলের সাধারণ মানুষ বর্তমানে মহাবিপদের সম্মুখীন। কারণ, রোহিঙ্গারা দিনে দিনে যেভাবে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে, তাতে আতঙ্কের মাত্রাও দিন দিন বেড়েই চলেছে। রোহিঙ্গারা আশ্রয় গ্রহণের দুবছর সময়ে হিংস্র হওয়ার পেছনে কিছু এনজিওর ভূমিকাই যে মুখ্য এ নিয়ে কারও কোন দ্বিমত নেই। স্থানীয়দের মতে, এসব এনজিওর লাগাম টেনে ধরা অতীব জরুরী।
×