ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সফল অস্ত্রোপচারের পর বাড়ি ফিরেছে কিশোরী নূপুর

সরকারী হাসপাতালে ওপেনহার্ট সার্জারির বিকল্প চিকিৎসা

প্রকাশিত: ১০:৫৫, ৩০ আগস্ট ২০১৯

সরকারী হাসপাতালে ওপেনহার্ট সার্জারির বিকল্প চিকিৎসা

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে (এনআইসিভিডিতে) সফল অস্ত্রোপচারের পর ১২ বছরের কিশোরী নূপুর বাড়ি ফিরে গেছে। দেশে সরকারী কোন হাসপাতালে এ ধরনের অস্ত্রোপচার এটিই প্রথম। খবর বাসস’র। পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলা থেকে আসা কিশোরী নূপুর তার হার্টের দুটি আপার চেম্বারের মধ্যে একটি ছিদ্র ছিল। এজন্য সে আটরিয়াল সেপটাল ডিপেক্ট (এএসডি) এ ভুগছিল। ডাঃ আশরাফুল হকের নেতৃত্বে দশ সদস্যের একটি চিকিৎসক দল গত ২৫ আগস্ট এনআইসিভিডিতে তার অস্ত্রোপচার করেন। চিকিৎসক দল পূর্ণ এ্যানেস্থেশিয়া করে নূপুরের অস্ত্রোপচার করেন। অস্ত্রোপচারে সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা। এতে ব্যয় হয় মাত্র ৫ হাজার টাকা। চিকিৎসক দলের সদস্য ডাঃ সিয়াম সফল অস্ত্রোপচারে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমি বাকরুদ্ধ। আমি এক সময় জনগণের জন্য বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখেছিলাম। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তায় সেটি আজ বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। এ ধরনের একটি স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে আমি সক্ষম হয়েছি। এ জন্য আমি খুব খুশি এবং সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। ওপেন হার্ট সার্জারির বিকল্প হিসেবে এই অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। অস্ত্রোপচারের সময় তার বুকের কোন হাড় কাটা হয়নি বরং তারা তার বুকের পাজরের মধ্যে অস্ত্রোপচার করেছে। এতে রোগীর ব্যথা কম হয় এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। অস্ত্রোপচারে এই টেকনিক ব্যবহার করে তাদের কাটা ছেড়া কম করতে হয়েছে। যেটুকু প্রয়োজন, শুধু সেটুকুই করা হয়েছে। চিরাচরিত অস্ত্রোপচারের চেয়ে এই পদ্ধতির অস্ত্রোপচারে শারীরিক কষ্ট কম এবং দ্রুত হয়। এনআইসিভিডি’র সহকারী অধ্যাপক ডাঃ সিয়াম বলেন, জাতীয় হৃদরোগ ইনিস্টিটিউটে এই অস্ত্রোপচারের আগে কেবলমাত্র রাজধানীর মিরপুরে বেসরকারী হাসপাতাল জাতীয় হার্ট ফাউন্ডেশনে এ ধরনের অস্ত্রোপচার হয়েছিল। এতে প্রতিটি অস্ত্রোপচারে ব্যয় হয়েছিল আড়াই লাখ টাকা থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত। তিনি বলেন, এখন প্রতিনিয়ত এ ধরনের অস্ত্রোপচার করা হবে। হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্রপাতি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমরা অন্যান্য সার্জনদের প্রশিক্ষণ দেব। ডাঃ সিয়াম গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয়ে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও বলেন, তারা প্রায় দেড় বছর আগে এ ধরনের অস্ত্রোপচার করার পরিকল্পনা করেছিলেন। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অর্থ বরাদ্দ এবং অনুমোদনসহ কয়েকটি বিষয় রয়েছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আমাদের জন্য সহজ করে দিয়েছে। তিনি আমাদের এগিয়ে যেতে উৎসাহিত করেছেন এবং সব ধরনের সহায়তা দিয়েছেন। ডাঃ সিয়াম এ ধরনের অস্ত্রোপচারে ঝুঁকি ও সফলতা সম্পর্কে বলেন, এটি খুবই জটিল অস্ত্রোপচার। এটি করতে রোগীর শরীরের চামড়ায় ছোট ছোট করে কয়েকটি স্থানে কাটতে হয়। সার্জনকে খুবই সতর্ক থাকতে হয়। তিনি বলেন, এটি ওপেন হার্ট সার্জারির চেয়েও আরও আধুনিক অস্ত্রোপচার। ডাঃ সিয়াম বলেন, নুপুরকে তার চেকআপ করানোর জন্য পুনরায় হাসপাতালে আসার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
×