ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

’২১ সালের জুনের মধ্যে পদ্মা সেতু দিয়ে যান চলবে ॥ কাদের

প্রকাশিত: ১০:৪৫, ৩০ আগস্ট ২০১৯

’২১ সালের জুনের মধ্যে পদ্মা সেতু দিয়ে যান চলবে ॥ কাদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পদ্মা সেতু নির্মাণের সার্বিক অগ্রগতি শতকরা ৭৩ ভাগ। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ২০২১ সালের জুনের মধ্যেই পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে । তিনি বলেন, যোগাযোগ খাতে দেশের বৃহৎ এই উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হবে। তবে ফিনিশিংসহ অন্যান্য কার্য সম্পাদন করতে আরও ৫/৬ মাস লাগবে। আশা করছি, ২০২১ সালের জুনের মধ্যেই পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু করবে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের ঋণ পরিশোধের জন্য অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের মধ্যে ঋণচুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। চুক্তিপত্রে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পক্ষে সেতু বিভাগের পরিচালক (অর্থ) মোঃ মনিরুজ্জামান এবং অর্থ বিভাগের পক্ষে অতিরিক্ত সচিব মোঃ এখলাছুর রহমান চুক্তি স্বাক্ষর করেন। চুক্তি স্বাক্ষর শেষে সেতুমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, দ্রুতগতিতে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। মূল সেতুর ৪২ পিয়ারের মধ্যে ৩১ পিয়ারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে, বাকি ১১টি আগামী ডিসেম্বর নাগাদ শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এ ছাড়া মূল সেতুর সব পাইল ড্রাইভিং কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এ পর্যন্ত মাওয়া সাইটে ২৭টি স্প্যান এসেছে, যার মধ্যে ১৪টি স্প্যান বসানো হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের সার্বিক অগ্রগতি শতকরা ৭৩ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষকে ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকার ঋণ দিয়েছে। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষকে এ ঋণ অর্থ বিভাগের মাধ্যমে প্রদান করা হয়েছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের পর প্রাপ্ত আয় থেকে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সরকারকে সুদসহ অর্থ পরিশোধ করবে। এ ছাড়া ঋণ চুক্তি মোতাবেক বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে অর্থ বিভাগ তথা বাংলাদেশ সরকারকে ঋণ পরিশোধ করবে। ওই ঋণ পরিশোধের মেয়াদ হবে ৩৫ বছর। ১ শতাংশ সুদ হারে সুদসহ ঋণ পরিশোধ করা হবে। ঋণ পরিশোধের সিডিউল অনুযায়ী প্রতি অর্থবছরে প্রায় সর্বনিম্ন ৮২৬ কোটি থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। সেতু কর্তৃপক্ষ বঙ্গবন্ধু সেতু প্রকল্পে তিনটি দাতা সংস্থার কাছ থেকে গৃহীত ঋণ বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বাসেক) ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সম্পাদিত ঋণ চুক্তি অনুযায়ী ঋণের আসল ও সুদসহ প্রতিবছর ৪ কিস্তিতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে পরিশোধ করছে। বাসেক প্রতি অর্থবছরে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা এ বাবদ বাংলাদেশ সরকারকে পরিশোধ করে আসছে। আগামী ২০৩৩-৩৪ অর্থবছরে এই ঋণ সুদসহ সম্পূর্ণ পরিশোধ হবে। চট্টগ্রামে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল (কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ প্রকল্প) এর ব্যয়ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সরকারকে পরিশোধ করবে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম, অর্থ বিভাগের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদারসহ অর্থ বিভাগ, সেতু বিভাগ এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধ নয় ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, রোহিঙ্গাদের নিজ বাসভূমি রাখাইনে ফেরত পাঠানো নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ যুদ্ধ করতে চায় না। কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত আছে, সূক্ষ্ম কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এখন রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিএনপি জাতীয় ঐক্যের কথা বলছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সারা বিশ্ব মিয়ানমারকে চাপ দিচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষ এই ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ। এখন এই ঐক্যে ফাটল ধরাতে, রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে বিএনপি জাতীয় ঐক্যের কথা বলছে। বিএনপির প্রতি উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘এতে আপনারা কখনও সাড়া পাবেন না। আপনাদের জাতীয় ঐক্য করতে হবে না। এই ইস্যুতে জাতীয় ঐক্য রয়েছে। আপনারা কি মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চান? ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদেশী দূতাবাসের কূটনীতিকদের সঙ্গে বিএনপির নেতারা বৈঠক করেন। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে মিয়ানমারকে চাপ দিতে কূটনীতিকদের কাছে বিএনপি নেতাদের গত দুই বছর কোন কথা বলতে শুনিনি। এ সমস্যা নিয়ে কোনদিন তারা কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলেননি। এখন বলছে সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতার কারণে রোহিঙ্গারা ফেরত যাচ্ছে না। সরকার সারা বিশ্বে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওপর বিদেশী চাপ অব্যাহত আছে, এই চাপ আরও বাড়বে। তিনি বলেন, সেখানে কিছু এনজিও লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। এই এনজিওরা চক্রান্ত করছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমলীর সাহেবদের কি আঁতাত হয়েছে এই এনজিওদের সঙ্গে প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে তারা বিশৃঙ্খলা করতে চায়, এটাই তাদের লক্ষ্য। একের পর এক ব্যর্থ হয়ে এখন তারা উন্মাদের মতো ইস্যু খুঁজছে।
×