ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পার্লামেন্ট স্থগিতের পর লন্ডনে বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ০৮:৪৭, ৩০ আগস্ট ২০১৯

পার্লামেন্ট স্থগিতের পর লন্ডনে বিক্ষোভ

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পার্লামেন্ট স্থগিতের সিদ্ধান্তে ‘চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিটবিরোধী এমপি ও বিরোধীদের মধ্যে এক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে এবং ১০ লাখের বেশি লোকের স্বাক্ষরসম্বলিত একটি আবেদনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়া হচ্ছে। বিবিসি ও ওয়াশিংটন পোস্ট। সরকার বলেছে, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে ৫ সপ্তাহের জন্য পার্লামেন্ট অধিবেশন স্থগিত করা হলেও ব্রেক্সিট বিতর্কের জন্য সময় থাকছে। কিন্তু সমালোচকরা বলেছেন, ‘চুক্তি ছাড়া’ ব্রেক্সিটবিরোধী এমপিদের আটকাতে এ অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যা রানী বুধবার অনুমোদন করেছেন। ক্যাবিনেট মন্ত্রী মাইকেল গোল্ড বিবিসিকে বলেছেন, ব্রেক্সিটের চূড়ান্ত তারিখ ৩১ অক্টোবরের আগে বিষয়টির ওপর বিতর্কের জন্য প্রচুর সময় থাকছে। প্রধানমন্ত্রী জনসন বুধবার বলেছেন, রানী পার্লামেন্ট স্থগিতের পর ১৪ অক্টোবর ভাষণ দেবেন। ভাষণে তার অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ এজেন্ডার রূপরেখা থাকবে। তিনি বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে সরকারের যে পরিকল্পনা রয়েছে তা বাস্তবায়নে তিনি ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চান না। তিনি বলেন, এ সরকার একটি নতুন সরকার দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য অনেক পরিকল্পনা রয়েছে যেগুলোর জন্য নতুন আইন প্রয়োজন। ১৪ অক্টোবর রানীর ভাষণের জন্য আয়োজন করা হয়েছে। কয়েক সপ্তাহের জন্য সংসদ স্থগিত থাকার বিষয়টি ব্রেক্সিটের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। পার্লামেন্টের নেতা জ্যাকভ রিস মগ বলেছেন, এ পার্লামেন্ট অধিবেশন প্রায় ৪শ’ বছরের মধ্যে দীর্ঘতম সময় ধরে চলেছে। তাই স্থগিতকরণ যথাযথ হয়েছে এবং নতুন করে শুরু হবে অধিবেশন। তিনি ডেইলি টেলিগ্রাফে এক লেখায় বলেছেন, যারা ২০১৬ সালের গণভোটের সিদ্ধান্তের বিরোধী তারা কেবল সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টি করে চলেছেন। লেবার নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ব্রিটেনের গণতন্ত্রকে চরম হুমকির মুখে ফেলেছেন। তিনি এ স্থগিতকরণ বন্ধে চেষ্টা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। ব্রেক্সিটবিরোধী আন্দোলনকারী জিনা মিলার জনসনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে আদালতে একটি জুডিসিয়াল রিভিউ আবেদন করেছেন। তিনি এর আগে অনুচ্ছেদ ৫০ নিয়ে মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে একটি আইনী লড়াইয়ে জিতেছেন। হাউজ অব কমন্সের স্পীকার জন বারকো এ পদক্ষেপকে সংবিধান লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছেন। টোরি দলের সাবেক চ্যান্সেলর ফিলিপ হ্যামন্ড একে অত্যন্ত অগণতান্ত্রিক বলে আখ্যায়িত করেছেন। লিবারেল ডেমোক্র্যাট নেতা জো সুইনসন বিবিসিকে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট কার্যকর করার জন্য এমপিদের কথা বলার সুযোগে বাধা দিয়ে আসলে জনগণের কণ্ঠরোধ করেছেন। সবচেয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া এসেছে স্কটল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নিকোলা স্টারজিওনের কাছ থেকে। তিনি বলেছেন, এ পরিকল্পনা বন্ধে এমপিদের আগামী সপ্তাহে অবশ্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নয়তো আমরা ইতিহাসে হারিয়ে যাব। এ পদক্ষেপ যুক্তরাজ্যের গণতন্ত্রের জন্য প্রকৃতপক্ষেই এক অন্ধকার নিয়ে আসবে। কনজারভেটিভ দলের ব্রেক্সিটপন্থী পিটার বোন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ব্রেক্সিট চূড়ান্ত রেখার পর স্থগিতের প্রস্তাব দিলে তিনি তাকে সমর্থন করতেন না। তিনি বলেন, স্থগিতকরণ সম্পূর্ণভাবে মানসম্পন্ন প্রক্রিয়ায় হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইটে জনসনের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোন অনাস্থা ভোটের পদক্ষেপ গ্রহণ করবিনের পক্ষে অত্যন্ত কঠিন হবে। কারণ, বরিস সত্যিকারভাবে তাই চাইছেন যুক্তরাজ্যের যা প্রয়োজন। ডিইউপিয়ের নেতা আর্লেন ফোস্টারও সিদ্ধান্তের প্রতি স্বাগত জানিয়েছেন।
×