ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শঙ্কা কাটিয়ে ওল্ডট্র্যাফোর্ড টেস্টেই ফিরছেন তুখোড় অস্ট্রেলিয়ান উইলোবজ

হিউজকে মনে পড়ছিল স্মিথের

প্রকাশিত: ১২:৪৩, ২৯ আগস্ট ২০১৯

হিউজকে মনে পড়ছিল স্মিথের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ২০১৪ সালের নবেম্বরে শেফিল্ড শিল্ডের এক ম্যাচে প্রতিপক্ষ পেসার শন এ্যাবটের বলের আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ফিলিপ হিউজ। দু’দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে মাত্র ২৫ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান সাবেক অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার। লর্ডসে চলতি এ্যাশজের দ্বিতীয় টেস্টে ইংলিশ পেসার জোফরা আর্চারের ভয়ঙ্কর এক বাউন্সার ঠিক একইভাবে স্টিভেন স্মিথের মাথার পেছনে আঘাত করে। তিনিও মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তখন প্রয়াত বন্ধু হিউজের কথা মনে পড়ছিল বলে জানিয়েছেন বহুল আলোচিত বল টেম্পারিংয়ের কারণে পাওয়া নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দীর্ঘদিন পর টেস্ট ক্রিকেটে ফেরা সাবেক অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক, ‘আমার মাথায় তখন বেশ কিছু জিনিস ঘোরাঘুরি করছিল। বিশেষ করে আঘাত পাওয়ার পর অতীতের কিছু কথা মনে পড়ে গিয়েছিল। বুঝতেই পারছেন কোন ঘটনার কথা বলছি’ বলেন স্মিথ। সফরকারীদের জন্য সুসংবাদ ৪ সেপ্টেম্বর ওল্ডট্র্যাফোর্ডে সিরিজের চতুর্থ টেস্টেই ফিরছেন তিনি। ডার্বিশায়ারের বিপক্ষে আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ার তিনদিনের প্রস্তুতি ম্যাচেও মাঠে নামতে পারেন স্মিথ। লর্ডসে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে আঘাত পেয়ে প্রাথমিকভাবে মাঠ ছাড়লেও পরে ফের ব্যাট হাতে নেমেছিলেন স্মিথ। তবে প্রথম ইনিংসে ৯২ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে নামার আগে কনকাশন টেস্ট সবুজ সঙ্কেত প্রদান করেনি। স্বাভাবিকভাবেই আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটের সাক্ষী থাকে প্রথম কনকাশন রিপ্লেসমেন্টের। স্মিথের বদলি মাঠে নামেন মার্নাস লাবুশেন। এ প্রসঙ্গে স্মিথ বলেন, ‘ওইদিন সন্ধ্যায় চিকিৎসক আমায় যখন শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চায় আমার মনে হচ্ছিল আমি ছয়টা বিয়ার পান করে রয়েছি। পরের দু’দিন পর্যন্ত আমি টলায়মান ছিলাম।’ এরপর লিডসে তৃতীয় টেস্টে তাকে ছাড়াই মাঠে নামে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। চতুর্থ ইনিংসে বেন স্টোকসের অতিমানবীয় ইনিংসে সিরিজে ১-১এ সমতা ফেরায় ইংল্যান্ড। স্মিথ যে ফিরছেন সেটি জানিয়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) এক মুখপাত্র বলেন, ‘ঘাড়ে আঘাত পাওয়ার পর অনুশীলনে ব্যাটিং করেছেন স্মিথ। ২৫ মিনিটের সেশন ছিল তার। স্মিথের মধ্যে বেশ ক্ষুধা ছিল। ডার্বিশায়ারের বিপক্ষে অনুশীলন ম্যাচে খেলার প্রত্যাশা করছে সে।’ বার্মিংহ্যামে প্রথম টেস্টে ১৪৪ ও ১৪২ এবং লর্ডসের প্রথম ইনিংসে ৯২ রান করেন স্মিথ। তার দুর্দান্ত নৈপুণ্যে সিরিজের প্রথম টেস্ট ২৫১ রানের বড় ব্যবধানে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। জীবন মরণের প্রশ্ন, এতকিছুর পর এখনও হেলমেটের সঙ্গে থাকা স্টেম গার্ড কেনেননি স্মিথ। এটি ব্যবহার না করার কারণেই বল হেলমেটের ফাঁক গলে সরাসরি তার ঘাড়ে আঘাত করেছিল। এরপরও স্টেম গার্ডের প্রতি আগ্রহ নেই ৩০ বছর বয়সী তারকা ব্যাটসম্যানের। নিরাপত্তার কথা ভেবে হেলমেটের সঙ্গে স্টেম গার্ড ব্যবহার করেন ক্রিকেটাররা। তবে ৯ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে কিংবা তার আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে স্মিথ কখনই এটি ব্যবহার করেননি। স্টেম গার্ড ব্যবহার করতে স্বাচ্ছদ্য অনুভব করেন না তিনি। এমনকি লর্ডসে আর্চারের বাউন্সারে ভূপাতিত হলেও দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ের সময়ও ব্যবহার করেননি এই নিরাপত্তা গার্ড। পাঁচ বছর আগে হিউজের মৃত্যুর পর অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে স্টেম গার্ডের ব্যবহার চালু করা হয়। অবশ্য এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোন প্রকার বাধ্যবাধকতা আসেনি। অসি তারকা স্মিথের কাছে স্টেম গার্ড ব্যবহার অস্বস্তিদায়ক। তবে এমন ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার পর তিনি আশাবাদী ভবিষ্যতে এটি ব্যবহার করতে পারবেন। অন্যদেরও সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে।
×